ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ইচ্ছেঘুড়ি

স্যান্টাক্লজ ও মোজা রহস্য

ইচ্ছেঘুড়ি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২০
স্যান্টাক্লজ ও মোজা রহস্য

শিশুদের কাছে বড়দিনের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ স্যান্টাক্লজ। এর অবশ্য একটি কারণ আছে।

স্যান্টা কিন্তু শিশুদের বন্ধু। বিশেষ করে লক্ষ্মী শিশুদের। আর শিশুবন্ধুদের জন্য স্যান্টা বসে থাকেন রাশি রাশি উপহার নিয়ে। এই উপহারে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে থাকে চকলেট।  

কিন্তু ক্রিসমাসের আগে উপহার দিয়ে যাওয়া এই স্যান্টা কে জানো?

এই প্রশ্ন করলে উত্তরে নিশ্চয় বলবে স্যান্টা লাল-সাদা পোশাক পরা বৃদ্ধ এক ব্যক্তি, যার কাঁধে থাকে উপহারের ঝোলা। তিনি বিশ্বের সব লক্ষ্মী শিশুদের বড়দিনের উপহার দিয়ে যান।

হ্যাঁ, স্যান্টা ক্লজ তেমনই একজন ব্যক্তি। তবে তার পরিচয়টা আরো দীর্ঘ। মূলত আজকের স্যান্টা ক্লজের চরিত্রটি এসেছে ঐতিহাসিক উপহার বিতরণকারী কিংবদন্তি চরিত্র সেইন্ট নিকোলাসের জীবন থেকে। তবে সেই কিংবদন্তি কিন্তু আজকের স্যান্টার মতো লাল-সাদা আলখেল্লা পরা কালো চামড়ার বেল্ট ও বুট জুতো পরা ব্যক্তি ছিলেন না।

লোকমুখে ও বিভিন্ন উপকথা থেকে জানা যায়, সেইন্ট নিকোলাসের আসল চিত্রটি ছিল বিশপের আলখেল্লা পরা সন্তের চিত্র। ঊনবিংশ শতাব্দীতে ক্যারিক্যাচারিস্ট ও রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট টমাস নাস্টের আঁকা একটি চিত্রের প্রভাবে স্যান্টা ক্লজ আজকের রূপ ধারণ করে।    

সবাই কিন্তু স্যান্টা ক্লজকে একই নামে ডাকে না। শিশুদের কাছে সবচেয়ে প্রিয় নাম ‘স্যান্টা। ’ আমেরিকার দেশগুলোতে বলা হয় স্যান্টাক্লজ। তবে ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যের মানুষেরা কিন্তু এই চরিত্রটিকে ফাদার ক্রিসমাস বলে। এছাড়াও স্যান্টাক্লজকে সেইন্ট নিকোলাস বা ক্রিস ক্রিঙ্গল বলা হয়।

স্যান্টা ক্লজ শিশুদের প্রিয় চরিত্র। শিশুদের কাছে তিনি কাল্পনিক ব্যক্তি নন, বরং সত্যিকারের একটা মানুষ, যিনি বড়দিনে তাদের পছন্দমতো উপহার দিয়ে যান। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, স্যান্টাক্লজ সব শিশুদের দুই ভাগে ভাগ করেন- লক্ষ্মী ও দুষ্টু। ক্রিসমাসের আগের রাত বা ক্রিসমাস ইভ অথবা ৬ ডিসেম্বর ফিস্ট ডে-তে তিনি লক্ষ্মী শিশুদের জন্য বড়দিনের উপহার রেখে যান। আর দুষ্টু শিশুদের জন্য উপহারের বদলে রেখে যান কয়লা।

তার একটা উপহারের কারখানা আছে। সেখানে অনেক বামন কাজ করে। তারাই রাতদিন খেটে শিশুদের মনের মতো উপহার তৈরি করে। তারপর স্যান্টা তার হরিণে টানা স্লেজে চড়ে সব শিশুদের বাড়িতে উপহার দিতে যান। এই হরিণগুলো আবার যেনতেন হরিণ না কিন্তু, তারা উড়তে পারে। স্যান্টা তার স্লেজ নিয়ে উড়ে পুরো বিশ্ব ঘুরে ঘুরে সব শিশুদের উপহার বিতরণ করেন।

স্যান্টা ক্লজের বসবাস উত্তর মেরুতে। সেখানে তার নির্দিষ্ট একটা ঠিকানা আছে, যে ঠিকানায় শিশুরা তাকে চিঠি পাঠায়। সেই চিঠিতে থাকে উপহারের তালিকা। শুধু তাই নয়, চিঠিতে অনেক মিষ্টি মিষ্টি কথাও থাকে। স্যান্টার বামন আর হরিণগুলোর খোঁজ জানতে চায় অনেকে, কেউ জানতে চায় মিসেস ক্লজের কথা।

স্যান্টা যেন উপহার রেখে যেতে পারে, সেজন্য অনেকে জানালায়, বিছানার পাশে বা ফায়ারপ্লেসের সামনে ঝুলিয়ে রাখে মোজা, যেন সেখানে স্যান্টা উপহার রেখে যেতে পারেন। শুধু তাই নয়, স্যান্টার হরিণগুলোর জন্য মোজার ভেতরে গাজর রেখে দেওয়া হয়। কেউ কেউ আবার স্যান্টার জন্য রেখে দেয় দুধ, পাউরুটি, বাদামসহ নানারকম খাবার।

পশ্চিমা দেশগুলোতে বড়দিনের কিছুদিন আগে থেকেই স্যান্টা ক্লজ সাজা মানুষদের দেখা যায় রাস্তাঘাটে, রেস্টুরেন্ট বা হোটেলগুলোতে। এখন বাংলাদেশেও স্যান্টা ক্লজ দেখা যায়। স্যান্টারূপী এই ব্যক্তিরা শিশুদের মাঝে চকলেট বিতরণ করেন।

স্যান্টা ক্লজকে দেখতে ইচ্ছে করছে খুব? সামনেই বড়দিন। ভাগ্য ভালো থাকলে কোনো বিনোদন পার্ক বা রেস্তোঁরায় তুমিও দেখা পেয়ে যেতে পারো হাসিখুশি বৃদ্ধ মানুষটির।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২০
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।