পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকায় সরকারপন্থী এক মিলিশিয়া নেতাসহ ছয়জনকে গুলি করে হত্যা করেছে বন্দুকধারীরা। হত্যার পর তাদের মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বুধবার (২২ অক্টোবর) খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে এই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তা, যিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে তথ্য দিয়েছেন।
তিনি জানান, বন্দুকধারীরা প্রথমে ওই মিলিশিয়া নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এরপর গাড়িতে থাকা অন্য পাঁচজনও গুলিতে নিহত হন। পরে হামলাকারীরা গাড়িতে জ্বালানি ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ছয়জনের মরদেহ সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়। আতঙ্ক সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে হামলাকারীরা এভাবে মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেয়।
খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি। তবে স্থানীয় প্রশাসনের ধারণা, তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামের জঙ্গিগোষ্ঠী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
সরকারি ওই কর্মকর্তা বলেন, টিটিপি ওই মিলিশিয়া নেতার কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেছিল। তিনি তা দিতে অস্বীকার করায় প্রতিশোধ হিসেবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
২০২১ সালে প্রতিবেশী আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে পাকিস্তানের সীমান্ত অঞ্চলগুলোয় সহিংসতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। পাকিস্তান সরকারের দাবি, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার টিটিপি যোদ্ধাদের আশ্রয় দিচ্ছে এবং তাদের সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তানের ভেতরে হামলা চালানোর সুযোগ দিচ্ছে। তবে কাবুল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। গত ৯ অক্টোবর আফগানিস্তানের ভেতরে এক বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান ও আফগান সীমান্তে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে দুই দেশেরই প্রাণহানি ঘটে এবং সীমান্ত সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পরিস্থিতি শান্ত করতে পরে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। আগামী শনিবার তুরস্কে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কর্মকর্তাদের মধ্যে এ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
এমজে