গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌবহরকে আটক করে ইসরায়েলি সেনারা অধিকারকর্মীদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়েছে। আটককৃতদের কয়েকদিন ধরে খাবার দেওয়া হয়নি।
সোমবার (৬ অক্টোবর) আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আটককৃত অধিকারকর্মীরা ছাড়া পাওয়ার পর তাদের ওপর হওয়া নৃশংস আচরণের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। তারা জানান, ইসরায়েলি সেনারা তাদের মারধর করেছিল, জিপ টাই দিয়ে হাত বেঁধে রেখেছিল এবং প্রিজন ভ্যানে দীর্ঘ সময় ধরে আটকে রেখেছিল।
ইতালির অধিকারকর্মী সিজার তোফানি রোমের ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে ফিরে এসে বলেন, আমাদের সঙ্গে ভয়াবহ আচরণ করা হয়েছে, হয়রানি করা হয়েছে। দেশটির ইউনিয়ন অব ইসলামিক কমিউনিটির সভাপতি ইয়াসিন লাফ্রাম বলেন, ইসরায়েলি সেনারা আমাদের দিকে অস্ত্র তাক করেছিল। নিজেদের গণতান্ত্রিক দেশ বলে দাবি করা রাষ্ট্রে এমন আচরণ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। ইতালির সাংবাদিক সাভারিও টমাসি জানান, ইসরায়েলি সৈন্যরা ওষুধ আটকে রেখেছিল এবং আটক কর্মীদের সঙ্গে ‘বানরের মতো’ আচরণ করেছে। গ্রেটা থুনবার্গসহ কিছু ইউরোপীয় আইনপ্রণেতা ও অধিকারকর্মীদের সামনে তারা হাসি-তামাসা করেছিল।
তুরস্কের ইস্তানবুলে ফিরে এপির সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অধিকারকর্মীরা জানান, কুকুর লেলিয়ে দিয়ে তাদের ভয় দেখানো হয়েছিল, বন্দুকের লেজার লাইট তাক করানো হয়েছিল এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা শারীরিকভাবে অত্যাচার করা হয়েছিল।
মালয়েশিয়ার অভিনেত্রী ও গায়িকা হেলিজা হেলমি ও হাজওয়ানি হেলমি বলেন, আমাদের টয়লেটের পানি খেতে বাধ্য করা হয়েছিল। অনেকেই অসুস্থ ছিলেন, কিন্তু ইসরায়েলি সেনারা কোনো সহানুভূতি দেখায়নি। হেলিজা জানান, তিন দিন ধরে তিনি খাবার পাননি, কেবল টয়লেট থেকে পানি খেয়ে বেঁচে ছিলেন।
ফ্লোটিলার আগে আটককৃতরা অভিযোগ করেছিলেন, গ্রেটা থুনবার্গকে মাটিতে টেনে নেওয়া, ইসরায়েলি পতাকায় চুমু খেতে বাধ্য করা এবং মিথ্যা প্রচারণার কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল।
ফ্লোটিলার জাহাজগুলো গাজার নৌ অবরোধ ভেঙে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। বুধবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে প্রায় ৪৫০ জন অধিকারকর্মীকে আটক করে ইসরায়েলি বাহিনী।
এমজে