ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা ফেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এতটাই আত্মহারা যে, তিনি যেন বিশ্বযুদ্ধ জয়ের আনন্দ পাচ্ছেন। এরই মধ্যে ওই ঘটনাকে জাপানে পারমাণবিক বোমা ফেলার সঙ্গে তুলনা করে হাস্যরস আর নিন্দা কুড়িয়েছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, মার্কিন হামলার শিকার ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনার মধ্যে নাতানজ আর ইসফাহান প্রায় অক্ষত আছে। ইরান চাইলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সেগুলোতে পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ পুনরায় শুরু করতে পারে। হামলায় হওয়া ক্ষয়ক্ষতির সাম্প্রতিক মার্কিন মূল্যায়নের সঙ্গে যুক্ত মার্কিন কর্মকর্তা এনবিসি নিউজকে ওইসব খবর জানিয়েছেন।
এনবিসি নিউজ আরও ভয়ঙ্কর সব খবর পেয়েছে। মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড ইরানে হামলা চালানোর জন্য আরেকটি বড় প্ল্যান করেছিল। ওই প্ল্যানে এক রাতের বদলে কয়েক সপ্তাহ ধরে ইরানে হামলা চালিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। আর তিনটির জায়গায় ছয়টি স্থানে আঘাত হানার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। ট্রাম্প জানার পর ওই প্ল্যান বাতিল করেন। কারণ এসব তার পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে মেলে না। সবকিছুর পরও তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে অন্যদেশের সঙ্গে যুদ্ধ থেকে বের করে আনতে চান। দুই পক্ষের হাজার হাজার মানুষ হতাহত হবে, এমন সংঘাতও তার পছন্দ না বলে ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
হামলার কয়েক ঘণ্টা পরে এক ভাষণে হামলাগুলোকে ‘দেখার মতো সামরিক সাফল্য’ বলেছিলেন ট্রাম্প। তখন তিনি দাবি করেন, ইরানের মূল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ব্যবস্থাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু এখন যে এইসব তথ্য সামনে আসছে, তার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল কি ইরানে আবারও হামলা চালাবে?
ওই কর্মকর্তাদের একজন বলেছেন, ইরান যদি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দ্রুতই পারমাণবিক চুক্তি না করে, তাহলে বেঁচে যাওয়া স্থাপনাদুটোতে হামলা করার ব্যাপারে মার্কিন এবং ইসরায়েলি সরকারের মধ্যে আলোচনা চলছে।
এনবিসি নিউজকে ইসরায়েলি সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, হামলা হওয়া স্থাপনা থেকে ইরান ইউরেনিয়াম উদ্ধারের চেষ্টা করছে টের পেলে তারা নতুন করে হামলা চালাবে। ইরান কি তা চেয়ে চেয়ে দেখবে? ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা এরই মধ্যে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ইসরায়েলকে শাস্তি না দিলে এবং ইরানি পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার ক্ষতিপূরণ না দিলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইরান ট্রিগারে হাত রেখে আছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, ইসরায়েল কোনো ভুল চাল দিলে ইরানই এবার আগে আক্রমণ চালাবে।
এমএইচডি/এমএম