ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২, ২৬ জুন ২০২৫, ০০ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

বিবিসির বিশ্লেষণ

ইরান এখন কী করবে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:০৯, জুন ২৫, ২০২৫
ইরান এখন কী করবে?

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রাথমিক মূল্যায়ন যদি সঠিক হয়ে থাকে, যা এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে ফাঁস হয়েছে, তাহলে এখন প্রশ্ন উঠছে, ইরান এরপর কী করতে যাচ্ছে?

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা কি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে দীর্ঘ সময়ের জন্য থামিয়ে দিতে পেরেছে, নাকি এই হামলা বরং ইরানকে তার কর্মসূচি দ্রুত এগিয়ে নিতে উৎসাহিত করবে, যেখানে পুনরুদ্ধার কর্মসূচি চলবে এবং নিহত বিজ্ঞানীদের বদলে নতুন বিজ্ঞানী নিয়োগ দেওয়া হবে?

হামলায় ঠিক কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা বুঝতে সময় লাগবে। এ নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে—ইসরায়েল দাবি করছে, ইরান নাকি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির এমন এক পর্যায়ে ছিল, যেখান থেকে আর ফিরে আসার উপায় নেই।

এরইমধ্যে ইরানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চলবে। অন্যদিকে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘ইরান আর কখনো পারমাণবিক কর্মসূচিতে ফিরতে পারবে না। ’ ইরানি নেতারা এখন বুঝে গেছেন, একটি সীমা পার হয়ে গেছে, আর তাদের কাছে মনে হচ্ছে, এমন অস্ত্র থাকলেই হয়তো ভবিষ্যতে আরও হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করা যাবে।

উত্তর কোরিয়ার উদাহরণ এখানে গুরুত্বপূর্ণ। দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র রাখার পর থেকে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে থাকলেও কখনও হামলার শিকার হয়নি।

এদিন ইরানের পার্লামেন্ট আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধের একটি বিল অনুমোদন করেছে। একই সঙ্গে, কিছু কর্মকর্তা পারমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) থেকেও সরে আসার সম্ভাবনার কথা তুলেছেন।

এখনো জানা যায়নি, ইরানের কাছে থাকা ৬০ শতাংশ মাত্রায় মজুত প্রায় ৪০০ কেজি ইউরেনিয়ামের কী হয়েছে। এই মাত্রা অস্ত্র তৈরির মাত্রা থেকে মাত্র এক ধাপ নিচে।

যদি যুদ্ধবিরতি টিকে থাকে, তবে আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা আবারো সমঝোতার আলোচনা শুরু করার চেষ্টা করবেন। উভয়পক্ষেরই যুদ্ধবিরতি মেনে চলার উপযুক্ত কারণ আছে।

এই হামলায় ইরান কিছুটা দুর্বল হলেও সমঝোতা সহজে হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের মূল দাবি হলো, ইরানকে নিজেদের মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। কিন্তু ইরান বরাবরই প্রকাশ্যে এ দাবির বিরোধিতা করে আসছে।

মঙ্গলবার ফক্স নিউজে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, এখন সময় হয়েছে ইরানিদের সঙ্গে বসে আমাদের একটি পূর্ণাঙ্গ শান্তি চুক্তিতে পৌঁছানোর।

কদিন আগেই ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েল। পরে ইরানও পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েলে। এই সংঘাতের এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। ট্রাম্প পরে দাবি করেন এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস হয়েছে।  

এরইমধ্যে মার্কিন গণমাধ্যমে খবর আসে, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।  

ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, ভুয়া খবর প্রচারকারী সিএনএন এবং পতনের পথে থাকা নিউইয়র্ক টাইমস মিলে ইতিহাসের অন্যতম সফল সামরিক হামলাকে হেয় করার চেষ্টা করছে।

আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।