ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৩ জুন ২০২৫, ১৬ জিলহজ ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘চুরির অর্থ’ ফেরত চান ড. ইউনূস, দেখা দিচ্ছেন না স্টারমার

আন্তজার্তিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:০৫, জুন ১২, ২০২৫
‘চুরির অর্থ’ ফেরত চান ড. ইউনূস, দেখা দিচ্ছেন না স্টারমার

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। তার এই সফরের মূল উদ্দেশ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়কালে বিদেশে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা চাওয়া।

 

তবে এই গুরুত্বপূর্ণ সফরের মাঝেও একটি উল্লেখযোগ্য ধাক্কা এসেছে— যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হননি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, যুক্তরাজ্যের উচিত নৈতিকতার জায়গা থেকে বাংলাদেশকে সহায়তা করা, যাতে ‘চুরি হয়ে যাওয়া’ অর্থ ফেরত আনা যায়। তার ভাষায়, ‘এটা চুরি করা টাকা’।

তিনি আরও জানান, স্টারমারের সঙ্গে তার এখনো কোনো সরাসরি যোগাযোগ হয়নি, তবে ড. ইউনূস বিশ্বাস করেন, শেষ পর্যন্ত স্টারমার এই ন্যায্য দাবিকে সমর্থন করবেন।

যুক্তরাজ্য সরকারের কর্মকর্তারাও নিশ্চিত করেছেন, ড. ইউনূসের সঙ্গে স্টারমারের কোনো বৈঠকের পরিকল্পনা নেই। তবে ড. ইউনূস বলেন, যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যে কিছুটা সহায়তা করছে, বিশেষ করে পাচার হওয়া অর্থের অবস্থান নির্ণয়ে।

শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামল সম্পর্কে ড. ইউনূস স্পষ্ট ভাষায় বলেন, এই সময়টা ছিল কিছু আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠজনদের জন্য ‘বড় ধরনের লুটপাটের’ সুযোগ। বর্তমান সরকারের হিসেবে, শেখ হাসিনার সময় প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে এবং এর বড় একটি অংশ গিয়েছে যুক্তরাজ্যে। এছাড়া কানাডা, সিঙ্গাপুর, ক্যারিবীয় অঞ্চল ও মধ্যপ্রাচ্যও এই টাকার গন্তব্যস্থল হিসেবে চিহ্নিত।

এদিকে, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি ইতিমধ্যেই শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের মালিকানাধীন লন্ডনে কোটি পাউন্ডের দুটি বাড়ি জব্দ করেছে।

একই প্রেক্ষাপটে, উঠে এসেছে লেবার পার্টির প্রাক্তন মন্ত্রী এবং শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের নাম। দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে তাকে পদত্যাগ করতে হয়। অভিযোগ রয়েছে, তিনি আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের থেকে বাড়িসহ নানা ধরনের সুবিধা গ্রহণ করেছেন, যদিও তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সম্প্রতি টিউলিপ ড. ইউনূসকে একটি চিঠি পাঠিয়ে দেখা করতে চেয়েছিলেন, যাতে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের ‘ভুল বোঝাবুঝি’ নিয়ে কথা বলা যায়। কিন্তু ড. ইউনূস সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এটা একটা আইনি বিষয়, ব্যক্তিগত কিছু নয়।

এই সফর সম্পর্কে ড. ইউনূস জানিয়েছেন, এই যুক্তরাজ্য সফর ‘শুধু শুরু’ এবং তার সরকার আরও সফরের পরিকল্পনা করছে। তিনি উল্লেখ করেন, তার প্রশাসন যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, আর্থিক সংস্থা, পুলিশ ও সব ধরনের গোয়েন্দা সংস্থাসহ ‘সব দিক থেকে’ সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গ্রেট ব্রিটেনের জনগণের সমর্থন চাই। ’

তার সফর সঙ্গীরা জানিয়েছেন, তারা এখনো যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে সাক্ষাতের আশা করছে।

এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।