গাজা যুদ্ধ ও ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগে ইসরায়েলের দুই ডানপন্থী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) এক যৌথ ঘোষণায় দেশগুলো জানায়—অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ এবং জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভিরের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবং যুক্তরাজ্যে তাদের সব সম্পদ জব্দ করা হবে।
এ পদক্ষেপ এমন এক সময়ে এলো, যখন ইসরায়েলের গাজা অভিযান ও পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ বাড়ছে। এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অবস্থান থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিন্নমতও নির্দেশ করে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, স্মোত্রিচ ও বেন গভির এমন ভাষা ব্যবহার করেছেন যা ভয়ংকরভাবে চরমপন্থী ও সহিংসতা উসকে দেয়। এটি শুধু অগ্রহণযোগ্যই নয়, ইসরায়েল সরকারের উচিত এমন বক্তব্য থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়া এবং তা স্পষ্টভাবে নিন্দা করা।
স্মোত্রিচ ও বেন গভির প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন কট্টর ডানপন্থী জোটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তাদের একজন পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন করে বসবাস করেন এবং দুইজনই গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের ‘পুনর্বাসনের’ নামে উচ্ছেদের পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। আন্তর্জাতিক মহলে তাদের এসব বক্তব্য ও অবস্থান ব্যাপকভাবে সমালোচিত।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবরণে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের শুরু থেকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি চরমপন্থী বসতি স্থাপনকারীরা অন্তত ১,৯০০টি হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর। বিবৃতিতে বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞা গাজার চলমান সংঘাত থেকে আলাদা নয় বরং একটি বৃহত্তর মানবিক ও রাজনৈতিক বার্তার অংশ।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, পাঁচ দেশ চায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হোক, হামাস জিম্মিদের মুক্তি দিক এবং ভবিষ্যতে দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক রাজনৈতিক সমাধানের পথে অগ্রসর হওয়া হোক—যেখানে হামাসের কোনো রাজনৈতিক ভূমিকা থাকবে না।
এর আগেও যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিল, যার মধ্যে ছিল মুক্ত বাণিজ্য আলোচনার স্থগিতাদেশ, ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে তলব এবং কিছু সহিংস বসতি স্থাপনকারী ও সংগঠনের ওপর নিষেধাজ্ঞা।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পদক্ষেপকে “অসাংবিধানিক ও অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করেছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা কেবল প্রতীকী নয়, বরং গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের কার্যক্রম নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের প্রতিচ্ছবি।
এমএম