ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা বলছেন রাফাহ ক্রসিং খোলা একটি ‘স্ট্যান্টবাজি’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২৩
পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা বলছেন রাফাহ ক্রসিং খোলা একটি ‘স্ট্যান্টবাজি’

অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লা থেকে আল জাজিরার এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, অঞ্চলটির জনগণ বলছেন ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যে মিশর সীমান্তে রাফাহ ক্রসিং খুলে দেওয়া শুধুমাত্র একটি ‘স্ট্যান্টবাজি’। এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি ‘প্রদর্শন’ মাত্র।

এর মাধ্যমে তারা দেখাতে চাচ্ছে, গাজার প্রতি তাদের মনোভাব ‘যত্নশীল’।

রামাল্লায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিজ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন হুদা আবদেল হামিদ নামে ওই সাংবাদিক।

এ শহরের অনেক মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন হুদা। লোকেরা তাকে বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেখাচ্ছে তারা খুব সচেতন। কিন্তু রাফাহ সীমান্ত থেকে যে ত্রাণ সহায়তা গাজায় ঢুকছে, সেটি শহরের পূর্ণাঙ্গ প্রয়োজনের কাছাকাছিও নেই। এটি পুরোপুরি পাবলিসিটি স্ট্যান্ট। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি সত্যিই যত্নবান হয়, তাহলে আহত শিশুদের যথাযথ চিকিৎসার দেওয়া বিষয়ে তারা গুরুত্ব দিতো।

গাজায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের কাছে বিষয়টি প্রায় নিন্দনীয়। তারা বলছে, আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তার প্রক্রিয়াটি অবশ্যই টেকসই ও মানবিক প্রচেষ্টা হতে হবে।

এর আগে মিশরীয় রেড ক্রিসেন্টের এক কর্মকর্তা জানান, রাফাহ সীমান্ত দিয়ে মানবিক সহায়তা বহনকারী ট্রাকগুলো অবরুদ্ধ গাজায় ঢুকছে।

গত কয়েকদিন ধরে প্রায় ৩ হাজার টন সাহায্য বহনকারী ২০০টিরও বেশি ট্রাক গাজায় ঢোকার অপেক্ষা করছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সবগুলো ট্রাক ফিলিস্তিনের এ অঞ্চলে ঢুকতে পারবে না। মাত্র ২০টি ট্রাক ত্রাণ সহায়তা নিয়ে গাজায় ঢোকার অনুমতি পেয়েছে।

গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের জনসংযোগ বিভাগ থেকে দেওয়া এক বার্তায় এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, আজ রাফাহ ক্রসিং দিয়ে ত্রাণ পণ্যবাহী ২০টি ট্রাক প্রবেশের কথা রয়েছে। এসব ট্রাকে ওষুধ, চিকিৎসা সামগ্রী ও সীমিত পরিমাণে ক্যানজাত খাবার রয়েছে।

গাজার অনেকেই দিনে একবেলা খাচ্ছেন। পর্যাপ্ত খাবার পানির তীব্র অভাবও রয়েছে অঞ্চলটিতে। ইসরায়েলি বোমা হামলায় আহত বিপুল সংখ্যক লোককে চিকিৎসা দেওয়া গাজার হাসপাতালগুলোয় জেনারেটরের জন্যও জরুরি জ্বালানির প্রয়োজন ছিল।

জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) সূত্রে জানা যায়, যুদ্ধের আগে গাজায় প্রতিদিন জ্বালানি ও অন্যান্য ত্রাণ নিয়ে ৫০০ ট্রাক প্রবেশ করত।

গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার উত্তর দিকের সীমান্ত ইরেজ দিয়ে ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস। হামলার জবাব দিতে সরাসরি আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। বিমান বাহিনী (আইএএফ) দিয়ে ধারাবাহিকভাবে হামলা করতে শুরু করে যা এখনও বিদ্যমান।

এ অবস্থার মধ্যে রাফাহ সীমান্তে হামলা চালিয়ে সীমান্তপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রীর সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় গাজায়। লোকেরা মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার ইসরায়েল সফর করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সফরে তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল সিসিকে সীমান্ত খুলে দিতে আহ্বান জানান। দুই দেশের সরকারপ্রধান বাইডেনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সীমান্ত খোলার ব্যাপারে সম্মত হন।

বাইডেন বলেছিলেন শুক্রবারের মধ্যে সীমান্ত খুলবে। তবে সেটি বাস্তবায়ন হলো শনিবার (২১ অক্টোবর)।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২৩
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।