বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) টেলিযোগাযোগ খাতের লাইসেন্সিং নীতিমালা সংশোধনের যে উদ্যোগ নিয়েছে, এতে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। বিদেশি কোম্পানি বিশেষ করে মোবাইল অপারেটরদের স্বার্থকে বড় করে দেখা হয়েছে।
বুধবার (২৮ মে) রাওয়া ক্লাবে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্কস বাংলাদেশ (টিআরএনবি) আয়োজিত ‘টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং নীতিমালা: কোন পথে এনটিটিএন-এর ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব অভিযোগ করেন।
বক্তারা বলেন, মোবাইল অপারেটররা যদি সরাসরি ইন্টারনেট সেবা দেওয়া শুরু করে তবে টেলিযোগাযোগ খাতে বিপর্যয় তৈরি করবে।
অনুষ্ঠানে ফাইবার অ্যাট হোমের চেয়ারম্যান মইনুল হক সিদ্দিকী বলেন, নতুন খসড়া লাইসেন্সিং নীতিমালার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তি হিসেবে বর্তমান টেলিযোগাযোগ কাঠামো প্রযুক্তি বান্ধব নয় বলা হলেও তা সঠিক নয়। প্রস্তাবিত নীতিমালায় বিদ্যমান ইকোসিস্টেম দুমড়ে মুচড়ে নতুন কিছু করতে যাচ্ছে। এতে অনেক ছোট টেলিকম ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবে। অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়বে।
টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, দেশে বিদেশি বিনিয়োগ লাগবে। এটার ওপর জোর দেওয়া যুক্তিসঙ্গত। এজন্য নতুন নীতিমালায় লাইসেন্সিংয়ের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, এমনটা বলছে বিটিআরসি। কিন্তু টেলিযোগাযোগ খাতের সঙ্গে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ইস্যু জড়িত, তাই এই খাতে শতভাগ বিদেশি বিনিয়োগ থাকা উচিত নয়। প্রকৃতপক্ষে প্রয়োজন ছিল নীতিমালায় দেশীয় সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া।
তিনি বলেন, দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নানা প্রতিবন্ধকতার রাখা হলেও মোবাইল অপারেটরদের জন্য সব সুযোগ দেওয়া হয়েছে। মোবাইল কোম্পানিগুলো যদি ফাইবার ক্যাবল টানতে পারে, তাহলে দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো আর টিকতে পারবে না।
ফাইবার অ্যাট হোমের চিফ গভর্নেন্স অ্যাফেয়ার্স অফিসার আব্বাস ফারুক তার উপস্থানায় এনটিটিএন-এর ভবিষ্যতের শঙ্কা তুলে ধরেন। তিনি জানান, দেশজুড়ে ৬ এনটিটিএন অপারেটরের প্রায় দেড় লাখ কিলোমিটার ফাইবার ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে। এখন যদি মোবাইল অপারেটররাও ফাইবার স্থাপনের সুযোগ পায় তাহলে এনটিটিএন খাত টিকবে না।
এমআইএইচ/এমজেএফ