কলকাতা: ভারতজুড়ে আবারও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ। দেশটির কেরালা, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যগুলোতে দ্রুতগতিতে মাথাচাড়া দিচ্ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ।
সোমবার (২৬ মে) সন্ধ্যার সর্বশেষ তথ্যমতে, দেশটিতে করোনাভাইরাস শনাক্ত সংখ্যা এক হাজার নয়জন।
ভারতে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের সংখ্যা রয়েছে কেরালা রাজ্যে। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যটিতে শনাক্তের সংখ্যা ৪৩০ জন। মহারাষ্ট্রে ২০৯, দিল্লিতে ১০৪, গুজরাটে ৮৩ জন, তামিলনাড়ুতে ৬৯, কর্নাটকে ৪৭ জন এবং পশ্চিমবঙ্গে ১২ জনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মিলেছে। ফলে এই সংখ্যাতত্ত্ব বলে দিচ্ছে, আবারও দ্রুতগতিতে করোনাভাইরাস শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে ভারতে।
তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের সাথে পশ্চিমবঙ্গেও থাবা বসাচ্ছে করোনাভাইরাস।
রাজ্য সরকারের তথ্য মতে, সোমবার দুপুর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে কোভিড পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ১২ জন এবং সবাই কলকাতা ও শহর সংলগ্নর বাসিন্দা। আক্রান্তরা সবাই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
পাশাপাশি ভারতের বিহার, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যগুলোতেও শনাক্ত তথ্য সামনে আসছে। যেখানে ১৯ মে অবধি একটিও সংক্রমণের তথ্য ছিল না, সেখানে পাটনায় (বিহার) ৩১ বছর বয়সী এক ব্যক্তির শরীরে করোনার পজিটিভ ধরা পড়েছে। তবে তার বিদেশ বা অন্য কোনো রাজ্য ভ্রমণের ট্র্যাক রেকর্ড নেই।
অন্যদিকে ঝাড়খণ্ডের রাঁচির একজনের শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। সম্প্রতি ওই ব্যক্তি বোম্বাই থেকে ওই রাঁচি গিয়েছিলেন।
ইন্ডিয়ান সার্স-কোভ-২ জেনোমিক্স কনসোর্টিয়ামের (আইএনএসএসিওজি) রিপোর্ট জানিয়েছে, ভারতে কোভিডের যে দুটি সাব ভ্যারিয়েন্ট থাবা বসিয়েছে, তা হলো, এনবি.১.৮.১ এবং এলএফ.৭ -এই দুটি সাব ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন প্রজাতির।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এনবি.১.৮.১ এবং এলএফ.৭ -এই সাব-ভ্যারিয়েন্টগুলোর মধ্যে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।
তা সত্ত্বেও ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সতর্কতা অবলম্বন করেছে। এই পরিস্থিতিতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর), ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথ রিসার্চ (ডিএইচআর) এবং দ্য ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (এনসিডিসি) শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে গোটা বিষয়টি পর্যালোচনা করছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণত হালকা উপসর্গ যেমন মাথাব্যথা, গলা খুসখুস, জ্বর, সর্দি, পেটে ব্যথা বা পাতলা পায়খানার মতো সমস্যা রয়েছে। ফলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, জনবহুল স্থানে মাস্ক পরা এবং অপ্রয়োজনীয় সমাবেশ এড়িয়ে চলার মতো মৌলিক সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছে।
পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোর সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন, প্রয়োজনীয় মেডিসিন এবং করোনা প্রতিরোধ টিকা মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে অযথা আতঙ্কিত বা গুজব না ছড়ানোরও আহ্বান জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তরফে।
ভিএস/এএটি