ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ জুলাই ২০২৫, ২৬ মহররম ১৪৪৭

স্বাস্থ্য

সার্জন না হয়েও অস্ত্রোপচার করেন জনি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:২১, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
সার্জন না হয়েও অস্ত্রোপচার করেন জনি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ডা. সৈকত আহমেদ জনি। তিনি মেডিসিন ডাক্তার হয়ে সার্জারির বিনা সনদে অবৈধভাবে দিনের পর দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কুমারশীল মোড় এলাকার বেসরকারি হাসপাতাল আল খিদমায় রোগীদের অস্ত্রোপচার করে চলেছেন। এ কাজে তার সহযোগী হিসেবে কাজ করেন হাসপাতালের দালালরা।

সর্বশেষ তার বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় অভিযোগ দেন জেলার সরাইল উপজেলার কাটানিসার গ্রামের মাহফুজ মিয়া নামে এক ভুক্তভোগী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা আব্দুল আজিজ ধানের ভ্যান গাড়ি ধাক্কা দিতে গিয়ে বাম হাতে আঘাত পান।

আহত হওয়ার পর অসুস্থ বাবাকে চিকিৎসা দিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে থেকে ফুসলিয়ে দালালরা নিয়ে যায় শহরের কুমারশীল মোড়ে বেসরকারি হাসপাতাল আল খিদমায়। এরপর ওই হাসপাতালে বাবাকে অপরেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে অস্ত্রোপচার করেন ডাক্তার জনি। এর কয়েকদিন পর বাবার হাতে পচন ধরে।

এরপর আবারও ওই হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তার জনিকে বিষয়টি জানায়। তখন জনি বাবার হাতটি ড্রেসিং করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এরপরও থেকে বাবার হাতটি দিনদিন পচন ধরতে থাকে। এরপর আমি বারবার ওই হাসপাতালে এসে বাবার হাতের বিষয়টি জনি ও হাসপাতাল কৃর্তপক্ষকে জানালে তারা আমাকে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যেতে হুমকি দেন। প্রতিকার না পেয়ে বুধবার দুপুরে আমি মাহফুজ সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করি।

এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডাক্তার সৈকত আহমেদ জনিকে আটক করে পুলিশ। বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসা চলছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কয়েক বছর আগেও ডা. জনি চিকিৎসা দিতেন নিউ সেন্ট্রাল ল্যাব অ্যান্ড ডায়াবেটিক হাসপাতালে। সেখানে তিনি সাইনবোর্ডে তিনি লিখতেন মেডিসিন, বাত ব্যাথা রোগের বিশেষ অভিজ্ঞ। হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যেন পদোন্নতি পেয়ে যান ডা. জনি। যোগ দেন ওই হাসপাতালের কাছাকাছি আল খিদমা নামের হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে তিনি অর্থোপেডিক্স চিকিৎসক হয়ে যান। সাইনবোর্ডে লেখেন- অর্থোপেডিক্স, হাড় ভাঙা, হাড় জোড়া, বাত ব্যাথা, প্যারালাইসিস ও মেডিসিন রোগের বিশেষ অভিজ্ঞ।

এ বিষয়ে ডা. সৈকত আহমেদ জনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার চিকিৎসায় কোনো ভুল ছিল না।

জনিকে আটকের বিষয়টি জানাজানি হলে অনেক মানুষ থানায় ভিড় জমান। এ সময় তারা ভুল চিকিৎসা এবং সাধারণ জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগে জনির শাস্তি দাবি করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, তার বিষয়ে এখন তদন্ত চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।