ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ রবিউস সানি ১৪৪৭

ফুটবল

প্রতিবাদের ঝড়ের মুখে ইতালি-ইসরায়েল ম্যাচ

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:১৫, অক্টোবর ৮, ২০২৫
প্রতিবাদের ঝড়ের মুখে ইতালি-ইসরায়েল ম্যাচ সংগৃহীত ছবি

আসন্ন বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইতালি ও ইসরায়েলের মধ্যকার ম্যাচটি বড় ধরনের নিরাপত্তা উদ্বেগের মুখে পড়েছে। গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীর সংখ্যা ম্যাচের টিকিটধারী দর্শকদের চেয়েও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যেই গত সপ্তাহে ইতালির ফ্লোরেন্সের ট্রেনিং সেন্টারের গেটে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়ে গাজায় যুদ্ধের কারণে ম্যাচটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। এটি ছিল একটি জাতীয় ধর্মঘটের অংশ, যেখানে লক্ষ লক্ষ কর্মী রাস্তায় নেমেছিলেন।

মঙ্গলবার ইতালির কোচ জেনারো গাত্তুসো নিজেও স্বীকার করেছেন যে পরিস্থিতি সহজ হবে না। তিনি বলেন, ‘পরিবেশটা শান্ত থাকবে না। স্টেডিয়ামের বাইরে প্রায় ১০ হাজার মানুষ থাকবে আর ভেতরে থাকবে ৫-৬ হাজার। ’ সোমবার পর্যন্ত উদিনেসের স্টাডিও ফ্রুলিতে অনুষ্ঠিতব্য এই ম্যাচের জন্য মাত্র ৪ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে।

গাজা যুদ্ধের কারণে উয়েফা ইসরায়েলকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছিল এবং উদিনেসের মেয়র আলবার্তো ফেলিস ডি টনি ম্যাচটি স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু টানা তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হওয়া এড়াতে মরিয়া ইতালি ম্যাচটি না খেলার ঝুঁকি নিতে রাজি নয়।

গাত্তুসো বলেন, ‘আমাদের এই ম্যাচটি খেলতেই হবে। কারণ আমরা যদি না খেলি, তাহলে ৩-০ গোলে হেরে যাব। ’ তিনি আরও জানান, ইতালীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি গ্যাব্রিয়েল গ্রাভিনা বিষয়টি খুব ভালোভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।

এর আগে গত মাসে হাঙ্গেরিতে অনুষ্ঠিত দুই দলের মধ্যকার ম্যাচেও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল, যেখানে ইতালি ৫-৪ গোলে ইসরায়েলকে পরাজিত করে। যুদ্ধের কারণে ইসরায়েল তাদের ‘হোম’ ম্যাচগুলো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলছে।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা একটি আন্তর্জাতিক সাহায্য মিশন আটকে দেওয়ার ঘটনায়ও ইতালি এবং অন্যান্য স্থানের বিক্ষোভকারীরা প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে গাত্তুসো বলেন, ‘নিরীহ মানুষ ও শিশুদের সঙ্গে যা ঘটছে তা দেখা খুবই মর্মান্তিক। এটা হৃদয়ে আঘাত করে। ’

গ্রুপ পর্বে ইতালি ও ইসরায়েল উভয় দলই গ্রুপ লিডার নরওয়ের চেয়ে ছয় পয়েন্ট পিছিয়ে আছে। গ্রুপ থেকে শুধুমাত্র প্রথম স্থান অর্জনকারী দল সরাসরি উত্তর আমেরিকায় অনুষ্ঠেয় আগামী বছরের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে। দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী দলকে প্লে-অফ খেলতে হবে, যে পর্বে হেরেই ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছিল ইতালি।

গাত্তুসো বলেন, ‘যেহেতু আমরা বিশ্বকাপে খেলার জন্য নিজেদের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করছি, তাই আমি ঘরের মাঠে সমর্থকদের সেই উদ্দীপনার মধ্যে খেলতে পারলে বেশি খুশি হতাম, যা আমরা এক মাস আগে এস্তোনিয়ার বিপক্ষে ৫-০ গোলে জয়ের ম্যাচে দেখেছিলাম। ’

এদিকে, শনিবার নরওয়ে সফরেও ইসরায়েলকে বিক্ষোভের সম্মুখীন হতে হতে পারে। নরওয়েজিয়ান ফুটবল ফেডারেশন ঘোষণা করেছে যে অসলোতে অনুষ্ঠিতব্য এই ম্যাচের টিকিট বিক্রির মুনাফা তারা গাজায় ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস এর মানবিক কাজে দান করবে।

এর আগে গত অক্টোবরে উদিনেসেই নেশনস লিগের একটি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ইতালি ও ইসরায়েল। সে সময়ও ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ সত্ত্বেও কঠোর পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে ম্যাচটি কোনো অঘটন ছাড়াই শেষ হয়েছিল, যেখানে ইতালি ৪-১ গোলে জয়লাভ করে।

এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।