যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেওয়া আফগান নারী ফুটবলাররা নতুন করে গঠিত আফগান নারী শরণার্থী দলের হয়ে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না। ফিফা আয়োজিত নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
চলতি বছরের মে মাসে ফিফা অনুমোদিত আফগান নারী শরণার্থী দলকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় পাওয়া আফগান খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত এই দল ফিফার আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে।
খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা ও সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার শর্তে ফিফা ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প আয়োজন করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক খেলোয়াড়দের জন্য একই ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রে থাকা অন্তত ২২ জন আফগান ফুটবলারের মধ্যে ১০ জন হিউস্টনে বসবাস করেন। তাদেরই একজন সাবেক অনূর্ধ্ব-১৭ আন্তর্জাতিক ও হিউস্টন শাইন এফসির ফরোয়ার্ড জাহরা সুলতানি বলেন, ‘ফুটবল সবসময় আমার পরিচয়, আমার স্বাধীনতা, আর বিশ্বমঞ্চে আফগান নারীদের প্রতিনিধিত্বের উপায়। ক্যাম্প বাতিল হওয়ার খবর আমার হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। ’
প্রথম আফগান নারী জাতীয় দলের সদস্য সোদাবা খানজানি (২৮) মন্তব্য করেন, ‘এটি অগ্রহণযোগ্য এবং কোনো অর্থ বহন করে না। অস্ট্রেলিয়া বা ইউরোপের খেলোয়াড়দের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের খেলোয়াড়দের কোনো পার্থক্য নেই। আমরা উপেক্ষিত ও অসম্মানিত বোধ করছি। ’
আরেক খেলোয়াড় নিলোফার মুমতাজ (২৪) বলেন, ‘আমরা চার বছর ধরে পরিবার ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে আছি। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডে ক্যাম্প হচ্ছে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে নয়। আমরা কাঁদছি, তবুও হাল ছাড়ব না। ’
ফিফা জানিয়েছে, ‘খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা ও সুস্থতা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আইনি ও লজিস্টিক জটিলতা বিবেচনায় নিয়ে ধাপে ধাপে এই প্রক্রিয়া এগোচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক খেলোয়াড়দেরও ভবিষ্যতে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। ’
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর আফগানিস্তানে নারীদের খেলাধুলা নিষিদ্ধ হয়। ফিফা, ফিফপ্রো ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় শতাধিক নারী খেলোয়াড় ও তাদের পরিবার বিদেশে আশ্রয় পান।
বর্তমানে আফগান নারী জাতীয় দল ফিফার বিশ্ব র্যাংকিংয়ের বাইরে। জাতিসংঘ ইতোমধ্যে তালেবানের নারীবিরোধী নীতিকে ‘লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
এমএইচএম