ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

উদয়দিগন্তে ওই শুভ্র শঙ্খ বাজে...

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৭ ঘণ্টা, মে ৮, ২০২০
উদয়দিগন্তে ওই শুভ্র শঙ্খ বাজে...

ঢাকা: ‘তোমার প্রকাশ হোক কুজ্ঝটিকা করি উদ্ঘাটন/সূর্যের মতন।/রিক্ততার বক্ষ ভেদি আপনারে করো উন্মোচন।/উদয়দিগন্তে ওই শুভ্র শঙ্খ বাজে।/মোর চিত্ত-মাঝে/চির-নূতনেরে দিল ডাক/পঁচিশে বৈশাখ'- নিজের লেখাতেই আপন আবির্ভাবক্ষণকে অনুভব করেছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আমৃত্যু কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে হয়ে উঠেছেন হাজার বছরের পথিকৃৎ বাঙালি।

শুক্রবার (৮ মে) পঁচিশে বৈশাখ। বাঙালির শ্রেষ্ঠতম কবির ১৫৯তম জন্মজয়ন্তী।


 
১৬০ বছর আগের এ দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুরবাড়িতে জন্ম নিয়েছিলেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিন্তু জমিদারির ঐতিহ্য পার করে সৃজনের দীর্ঘ ধারাবাহিকতায় তিনি পত্তন ঘটান নতুন এক বসতি শান্তিনিকেতনের। মা সারদাসুন্দরী দেবী এবং বাবা ব্রাহ্মধর্মগুরু ও জমিদার দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোল আলো করে পৃথিবীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আসেন ১২৬৮ বঙ্গাব্দে। সারা জীবনই  তার কামনা ছিল- ‘যা পেয়েছি প্রথম দিনে, তাই যেন পাই শেষে/দু'হাত দিয়ে বিশ্বরে ছুঁই শিশুর মতো হেসে। ’
 
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে রবীন্দ্রনাথ পৌঁছে দিয়েছেন বিকাশের ঊর্ধ্ব চূড়ায়। ১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ রচনা করে তিনি জয় করেন সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার। যার অর্থে বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের দরিদ্র কৃষকদের ঋণ দিতে প্রতিষ্ঠা করেন কৃষি ব্যাংক, গড়ে তোলেন শান্তিনিকেতন। রাজপথে নেমে আসেন তিনি বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে। পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ত্যাগ করেন ব্রিটিশ সরকারের দেওয়া 'নাইটহুড' উপাধি। এভাবে বারবার সাধারণ মানুষের সঙ্গে একাত্মতার ঘোষণা দিয়েছেন সমাজসচেতন রবীন্দ্রনাথ।
 
তিনি পৃথিবীর একমাত্র গীতিকবি- যার রচিত ভিন্ন দু’টি সঙ্গীত ভিন্ন দু’টি দেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গীত হয়। তার রচিত ‘আমার সোনার বাংলা' বাংলাদেশে, ‘জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে’ ভারতের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত।
 
রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন।
 
বর্তমানে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে জাতীয়ভাবে উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন এবার হচ্ছে না। তবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ বেশ কিছু সংগঠন ভার্চুয়ালি রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপন করবে।
 
রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিটিভিসহ বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচারের জন্য ৫৫ মিনিটের একটি অনুষ্ঠান তৈরি করেছে। যা শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে প্রচারিত হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণী ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের একটি ভিডিওবার্তা থাকছে।
 
রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে ‘ওই মহামানব আসে’ শীর্ষক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ছায়ানট। রবীন্দ্রজয়ন্তীর দিন সকাল সাড়ে ৯টায় ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলে (http://www.bit.ly/chhayanaut) দেখা যাবে অনুষ্ঠানটি। এ আয়োজনের গ্রন্থনা করেছেন ছায়ানট সভাপতি সনজীদা খাতুন।
 
রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার (আইজিসিসি) ‘ট্রিবিউট টু রবীন্দ্রনাথ ট্যাগোর: এ রে অব হোপ থট ট্যাগোরস ফিলোসফি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। যা শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আইজিসিসির ফেসবুক পেজে সম্প্রচার করা হবে।
 
এ আয়োজনে অতিথি হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশ রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, ভারতের শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য  অধ্যাপক ড. বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, লেখক ও অনুবাদক অধ্যাপক ফখরুল আলম এবং ভারতের অনুবাদক ও গবেষক অধ্যাপক রাধা চক্রবর্তী। এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত থাকবেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনসের (আইসিসিআর) সভাপতি ড. বিনয় সহস্রবুদ্ধি। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ।
 
বাংলাদেশ সময়: ০১০৬ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২০
ডিএন/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।