১৬৯০: ইংল্যান্ডে ঘটে যাওয়া গ্লোরিয়াস রেভল্যুশনের (১৬৮৮) পর জেমস দ্বিতীয় (ক্যাথলিক) ক্ষমতা হারিয়ে উইলিয়াম অব অরেঞ্জ (প্রোটেস্ট্যান্ট) রাজা হন। কিন্তু জেমস তার ক্ষমতা ফিরে পেতে চেয়েছিলেন।
১৯২০: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে রাশিয়ান সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ে এবং বলশেভিক বিপ্লবের মাধ্যমে সোভিয়েত রাশিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়। এদিকে ১৯১৮ সালে লিথুয়ানিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করে, কিন্তু জার্মান ও পোলিশ বাহিনী এবং পরে সোভিয়েত রাশিয়ার সাথেও তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে লিথুয়ানিয়া এবং সোভিয়েত রাশিয়া একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে। সোভিয়েত রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে যে লিথুয়ানিয়া একটি স্বাধীন রাষ্ট্র এবং তাদের ওপর কোনো দাবি থাকবে না। এটি ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি যেখানে তারা অন্য রাষ্ট্রকে স্বাধীন হিসেবে স্বীকার করে। যদিও সোভিয়েত রাশিয়া ভিলনিয়াস অঞ্চল লিথুয়ানিয়াকে দেয়, কিন্তু অল্প কিছুদিন পর পোল্যান্ড সেটি দখল করে নেয় (১৯২০ সালের শেষ দিকে) এবং পোলিশ-লিথুয়ানিয়ান যুদ্ধ শুরু হয়। লিথুয়ানিয়া তখন বহু বছর রাজধানী হারিয়ে কাউনাস-কে অস্থায়ী রাজধানী করে।
১৯৪৩: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ট্যাংক যুদ্ধ—প্রোখোরোভকা যুদ্ধ যা সংঘটিত হয়েছিল ১৯৪৩ সালের ১২ জুলাই। জর্জি ঝুকভের নেতৃত্বাধীন ৫ম গার্ডস ট্যাংক আর্মি প্রোখোরোভকা, বেলগোরদ ও ওরেল অঞ্চলের মাঝে, সোভিয়েত ইউনিয়নের কুরস্ক ফ্রন্টে হাইন্ৎস গুডেরিয়ান ও পল হাউসার নাৎসি এসএস প্যানৎজার ডিভিশনের মুখোমুখি হয়। প্রোখোরোভকার যুদ্ধ ছিল বৃহৎত্তর কুরস্ক যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব। সোভিয়েতরা ৮৫০–৮৭০ টি ট্যাংক আর জার্মানরা ২৭০ থেকে ২৯০ টি ট্যাংক নিয়ে যুদ্ধে নামে। বহু জায়গায় ট্যাংক-ট্যাংকের মধ্যে ১০০ মিটারের কম দূরত্বে গুলি বিনিময় হয়। সোভিয়েত বাহিনীর ৩৪০টিরও বেশি ট্যাংক ধ্বংস হয়। জার্মান বাহিনী হারায় ৫০ থেকে ৭০টি ট্যাংক। কিন্তু তাঁদের আক্রমণ ব্যর্থ হয় এবং তারা পিছু হটে। সামরিকভাবে প্রোখোরোভকা হয়তো সোভিয়েতদের বিজয় নয়, কিন্তু জার্মান আক্রমণ ব্যর্থ হয়ে যায় — যা ছিল কুরস্ক যুদ্ধে তাদের শেষ বড়সড় আক্রমণ। এর পর থেকেই সোভিয়েত বাহিনী ধীরে ধীরে পূর্ব ইউরোপ মুক্ত করতে থাকে।
১৯৪৮: ইহুদি বাহিনী ডেভিড বেন-গুরিয়নের অনুমোদনে ১৯৪৮ সালের জুলাই মাসে লুদ ও রামলা শহরের প্রায় ৫০,০০০ থেকে ৭০,০০০ ফিলিস্তিনি নাগরিককে জোরপূর্বক বিতাড়িত করে যা ইতিহাসে “লুদ ও রামল্লাহর উৎখাত” নামে পরিচিত। এটি ছিল ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের (নাকবা) সময়কার একটি অন্যতম নৃশংস এবং বিতর্কিত অধ্যায়। ৯–১৩ জুলাই লুদ ও রামলা দখল করে ইহুদিরা। ১২ জুলাই লুদ শহরে বড় ধরনের গণনির্বাসন শুরু হয়। বহু জায়গায় গণহত্যা ও গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে; বিশেষ করে লুদের দাহমেশ মসজিদে প্রায় ৮০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়।
বিতাড়িতদের অনেককে হাঁটিয়ে রামাল্লা বা পশ্চিম তীরের দিকে পাঠানো হয়, প্রচণ্ড গরমে বহু নারী-শিশু মারা যায়।
২০০৬: ১২ জুলাই ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘর্ষের মাধ্যমে শুরু হয় যুদ্ধ, যা পরবর্তীতে "২০০৬ লেবানন যুদ্ধ" বা "দ্বিতীয় লেবানন যুদ্ধ" নামে পরিচিত। ১২ জুলাই সকালে, হিজবুল্লাহ লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায়। ইসরায়েলি সেনাদের উপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করে, ২ জন ইসরায়েলি সেনা অপহরণ করা হয়। ৩ জন সেনা নিহত হয় এবং অপহৃতদের উদ্ধারে পাঠানো একটি ট্যাংকে আরও ৫ জন সেনা নিহত হয়। এই ঘটনার পর ইসরায়েল তাৎক্ষণিকভাবে লেবাননে ব্যাপক বিমান হামলা ও স্থল অভিযানে নামে, যার জবাবে হিজবুল্লাহ উত্তর ইসরায়েল লক্ষ্য করে হাজার হাজার রকেট ছোড়ে। ইসরায়েলের ব্যাপক বিমান হামলায় লেবাননের অনেক অবকাঠামো ধ্বংস হয়। ১,২০০ মানুষ নিহত হয় যার অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। ১০ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়। সামরিক ও বেসামরিক মিলে ইসরায়েলে নিহত হয় ১৬০ জন। হাইফা ও অন্যান্য শহরে ব্যাপক ক্ষতি হয়। একই বছরের ১৪ আগস্ট জাতিসংঘের শান্তিচুক্তি কার্যকর হওয়ার মাধ্যমে ৩৪ দিনের যুদ্ধ শেষ হয়।
এমএম