ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

ক্যাম্পাসের কুকুর-বিড়ালকে খাবার দিচ্ছেন তারা

মঈন উদ্দিন, রাবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২১
ক্যাম্পাসের কুকুর-বিড়ালকে খাবার দিচ্ছেন তারা

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মেডিক্যাল সেন্টারের সামনে কয়েকজন শিক্ষার্থী কুকুরের জন্য খাবার নিয়ে আসেন। আশেপাশে ৮-১০টি কুকুর ঘোরাঘুরি করছে।

সেখানে খাবার রাখতেই কুকুরগুলো দৌঁড়ে এসে গ্রোগ্রাসে খাওয়া শুরু করে। ভাগ পাওয়ার আশায় ডজনখানেক কাকও জড়ো হয় সেখানে।

রোববার (২৫ এপ্রিল) প্রায় শূন্য ক্যাম্পাসে মানুষ-প্রাণীতে অদ্ভূত এ ভালোবাসার দেখা মেলে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন শুরুর পর ক্যাম্পাস ও আশপাশের হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ হয়ে যায়। শুধু মানুষ নয়, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের প্রভাব পড়েছে পশুপাখির জীবনেও। ফেলে দেওয়া পচা-বাসি খাবারের ওপর প্রাণীগুলো যে খাবারের প্রয়োজন মেটাতো, এখন সেটিও বন্ধ।

ক্যাম্পাসের কয়েকজন শিক্ষার্থী নিজেদের সামান্য হাতখরচ ও শিক্ষকদের সহায়তা মিলিয়ে বোবা প্রাণীগুলোকে পৌঁছে দিচ্ছেন খাবার। তারা ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগের নাম রেখেছেন ‘ক্যাম্পাস পোষাপ্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্প’। বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী প্রসেনজিৎ কুমার, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান মুন্না, দিল আফরোজ দোলা, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল কাদির জিলানী ও ফোকলোর বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী পুনম প্রিয়া এর উদ্যোক্তা। তাদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন বিকেলে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় অভুক্ত কুকুর-বিড়ালগুলোকে খাবার দিচ্ছেন। দুপুরের পর রাকসু ভবনের সামনে শুরু হয় রান্না। প্রতিদিন ৮-৯ কেজি চাল, ডাল ও মুরগির মাংস মিশিয়ে রান্না করা হয় খিচুরি। খাবার প্যাক করা হচ্ছে

উদ্যোক্তাদের একজন প্রসেনজিৎ কুমার বাংলানিউজকে বলেন, পরিবেশের জন্য মানুষের ও পশু-পাখির ভারসাম্য জরুরি। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় পশু-পাখিদের খাদ্যের যোগানও বন্ধ হয়ে গেছে। ওরা তো নিজেরা একা চলতে পারে না। তাই ওদের খাবারের ব্যবস্থা করা দরকার। এ ভাবনা থেকে আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি। মানুষ হিসেবে এটি আমাদের দায়িত্ব। ঈদ পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখব বলে ভাবছি।

আরেক শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান মুন্না বলেন, ক্যাম্পাসে অসংখ্য কুকুর-বিড়াল। লকডাউনে সব বন্ধ থাকায় এদের খাবার জায়গাও নেই। মানুষের হাত পাতবার জায়গা থাকে, সাহায্য পাবার সম্ভাবনা থাকে, কিন্তু এ অসহায় প্রাণীদের সেটুকুও নেই। এ চিন্তা থেকে খাবার দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। বেশ আনন্দ পাচ্ছি এসব নিরীহ প্রাণীদের খাবার দিয়ে। সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত হলো যখন আমার মোটরসাইকেল দেখলেই প্রাণীগুলো দৌঁড়ে কাছে আসে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২০
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।