ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

শিক্ষা

সাম্যের স্মরণে বন্ধুরা

‘জুলাইয়ে আমাদের শক্তি ছিল সাম্য, দুঃসময়ে তার কথা ভাবতাম’

ইউনিভার্সিটি করেস্পন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২:১৯, মে ১৮, ২০২৫
‘জুলাইয়ে আমাদের শক্তি ছিল সাম্য, দুঃসময়ে তার কথা ভাবতাম’ শনিবার রাজু ভাস্কর্যে সাম্যের স্মরণে আয়োজিত মোমবাতি প্রজ্বলন

উচ্চমাধ্যমিকে থাকতেই সাম্যের মা মারা যান। তারপর বন্ধুরাই তার পরিবার হয়ে ওঠে।

ঈদে একেকবার একেক বন্ধুর বাসায় যেত। দুঃসময়ে আমরা যার কথা ভাবতাম, সে ছিল সাম্য।

এভাবেই সাম্যকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছিলেন তার বন্ধু, রাজনৈতিক সহযোদ্ধা, অগ্রজ, অনুজরা।  

শনিবার (১৭ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজু ভাস্কর্যে সাম্যের স্মরণে আয়োজিত মোমবাতি প্রজ্বলন শেষে তারা সাম্যকে নিয়ে নিজেদের স্মৃতি তুলে ধরেন।

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বুধবার দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী এবং স্যার এ এফ রহমান হলের আবাসিক ছাত্র শাহরিয়ার আলম সাম্য।

এ ঘটনার পর থেকেই তার শিক্ষক, বন্ধু এবং রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা বিভিন্ন মহলে সাম্য হত্যার বিচার দাবি জানিয়ে আসছেন।

সাম্যের দীর্ঘদিনের বন্ধু নাফিস আল শায়েখ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮-১৯ সেশনের অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি এবং লিডারশিপ বিভাগে পড়াশোনা করছেন। সাম্যের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, সাম্য তো মৃত্যুকে কয়েকবার কাছ থেকে দেখেছে। সে কখনো ফকির কিংবা বড়লোক; কারও মাঝে ভেদ করত না।

তিনি বলেন, যেকোনো বন্ধুর দুঃসময়ে আমরা যার কথা ভাবতাম, সে ছিল সাম্য। জুলাইয়ে আমাদের শক্তি ছিল সাম্য। ও থাকলে ভাবতাম কেউ আমাদের কিছু করতে পারবে না। ও আমাদের পেছনে ফেলে চলে যাবে না।

সাম্যের আরেক বন্ধু মশিউল আলম শুভ স্মৃতিচারণ করে বলেন, সাম্যের জন্য আজকে অল্প কয়েকজন এখানে এসেছে। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলে যখন পলেস্তারা খসে পড়েছে, তখনও সাম্য এই প্রতিবাদে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, ১৫, ১৬ ও ১৭ জুলাইয়ের কথা মনে পড়ে। সাম্য ভয় পেত না। সবার আগে চলে আসত। সাম্যদের মতো ছেলেদের কারণে আজকে সরকার দেশ চালাচ্ছে। উপাচার্য-প্রক্টর বিশ্ববিদ্যালয় চালাচ্ছে।

তার আরেক বন্ধু সোহেল রানা সাব্বির বলেন, দেশের কোনো প্রান্তে অন্যায় হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাৎক্ষণিক মিছিল হয়। অথচ সাম্য হত্যার পর আমরা একসাথে হতে পারিনি।

তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ছাত্রদলের আবিদ হাসান মিশু স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন কাঁধ মিলিয়ে সংগ্রাম করেছি, আজ সাম্য নেই। অথচ সাম্যের মৃত্যুর অনেকে এটিকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করেছে। তার চরিত্রহননের চেষ্টা করা হয়েছে। সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।

এসময় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক ওয়াসী তামী, সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদি হাসান, বিজয় একাত্তর হলের দপ্তর সম্পাদক সাকিব বিশ্বাস, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের একাংশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোজাম্মেল হক, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আরমানুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  

এফএইচ/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।