ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা

প্লাস্টিক পণ্যের বিক্রি বেশি

তাবারুল হক ও ফররুখ বাবু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৬
প্লাস্টিক পণ্যের বিক্রি বেশি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় অন্যসব স্টলের তুলনায় প্লাস্টিক পণ্যের স্টলগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। বিক্রেতাদের দাবি, এসব স্টলে বেচা-কেনাও বেশি।


 
রোববার (১০ জানুয়ারি) মেলার বেঙ্গল প্লাস্টিক, আরএফল প্লাস্টিক ও এনপলি স্টলগুলোতে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
 
এসব স্টলে প্লাস্টিক পণ্যে বিভিন্ন নামে ‘আকর্ষণীয়’ মূল্যছাড় দিচ্ছে কোম্পানিগুলো। ক্রেতারাও জানিয়েছেন, মেলা ছাড়া অন্য সময়ে এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিক পণ্যের এতো বেশি মূল্য ছাড় পাওয়া যায় না। মেলায় পণ্যের সমাহার বেশি ও মূল্য ছাড়ে পাওয়া যাচ্ছে।
 
বেঙ্গল প্লাস্টিক স্টলে কোম্পানির ডেপুটি ম্যানেজার বকুল পোদ্দার বাংলানিউজকে জানান, তাদের স্টলে কমপক্ষে ৪০০ টাকার পণ্য কিনলে ক্রেতাদের নগদ ৫০ টাকা ক্যাশব্যাক দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ৭০০ টাকার পণ্যে ১০০ টাকা ও এক হাজার টাকার পণ্যে দেড়শ’ টাকা ক্যাশব্যাক।
 
কোনো ক্রেতা একসঙ্গে পাঁচ হাজার টাকার পণ্যে কিনলে ক্রেতাদের সুবিধার্থে ৫ ভাগে ভাগ করে ক্যাশব্যাক দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
 
বকুল আরও জানান, তাদের স্টলে ফেন্সি বাস্কেট (ময়লা কাপড় রাখা), স্টোরেজ কন্টেইনার (পরিষ্কার কাপড় ও শুকনো খাবার রাখা), কিচেন ৠাক, ৠাক এলিগেন্ট (রান্নাঘরের জিনিসপত্র রাখা), মামপট, মাল্টি চেম্বার বক্স (মসলা ও ফ্রিজে খাবার রাখা), পিংপং কন্টেইনারসহ অন্যান্য পণ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে।
 
তাদের এ স্টলে প্রায় সাড়ে চারশ’ ধরনের প্লাস্টিক পণ্যে রয়েছে বলে জানান বকুল পোদ্দার।
 
মেলায় আরএফএলের প্লাস্টিক পণ্যের স্টলে দর্শনার্থীদের বেশি ভিড় দেখা যায়। স্টলের প্রধান সমন্বয়ক মিজানুর রহমান বলেন, তাদের সব পণ্যে ১০ শতাংশ মূল্য ছাড় রয়েছে। সকাল থেকে দুপুর তিনটা পযন্ত হ্যাপি আওয়ারে তিনশ’ টাকার পণ্য কিনলে ক্রেতাদের জন্য মগ, ওয়াটারপটসহ আকর্ষণীয় উপহার রয়েছে। আর ছয়শ’ টাকার পণ্যে কিনলে একটি বাকেট ফ্রি দেওয়া হচ্ছে।
 
তিনি বলেন, আরএফএল প্লাস্টিকের আর্কষণীয় অফার হচ্ছে কোনো ধরনের চার্জ ছাড়া হোম ডেলিভারি দেওয়া হয়।
 
আরএফএল প্লাস্টিক স্টলে ওয়ারড্রপ, স্টোরেজ কন্টেইনার, বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকের বক্স, চেয়ার, ড্রিংকিট ওয়াটার পিউরিফাই, লন্ড্রি বাস্কেট, যাইজার, জগ বেশি বিক্রি হচ্ছে বলেও জানান মিজানুর রহমান।
 
মেলায় প্লাস্টিকের পণ্য কিনে কানিজ সুবর্ণা বাংলানিউজকে বলেন, মেলায় ঘুরতে এসেছিলাম। কিন্তু প্লাস্টিকের কিছু পণ্যে দেখে ভাল লাগলো, বিশেষ কিছু মূল্য ছাড়ও রয়েছে। সেজন্য বেশ কিছু প্লাস্টিকের প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে নিলাম।
 
তার সঙ্গে থাকা লিপি আক্তার বলেন, প্লাস্টিকের ছোট পণ্য কম দাম হওয়ায় কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়া কেনা যায়। ঘরের প্রয়োজনীয় এসব পণ্য দেখতেও সুন্দর।
 
অন্যদিকে, মেলায় এনপলি প্লাস্টিকের স্টলেও মানুষের ভিড় রয়েছে চোখে পড়ার মতো। এ স্টলে তিনশ’ ধরনের হাউস প্রোডাক্টস রয়েছে বলে জানান স্টলের ইনচার্জ নিয়াজ হোসেন অপু।
 
তিনি বলেন, প্লাস্টিকের হাউস প্রোডাক্টসসহ ডোর, পিভিসি ও জুতা রয়েছে। তবে এসব জুতা বাজারে আসছে বলে তিনি জানান।
 
এনপলিতে প্লাস্টিকের ডোরে ১০ শতাংশ মূল্য ছাড় রয়েছে জানিয়ে নিয়াজ বলেন, সব প্লাস্টিকের পণ্যেই ডিসকাউন্ট দিয়ে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তাদের প্লাস্টিকের বিভিন্ন পণ্য অন্যান্য কোম্পানির তুলনায় দামে কম বলেও দাবি করেন তিনি।
 
গত ১ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে মাসব্যাপী ২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরু হয়েছে। ওই দিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেলার উদ্বোধন করেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো এ মেলার আয়োজন করেছে।
 
আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে।
 
গতবারের মতো এবারও মেলায় প্রবেশ মূল্য প্রাপ্তবয়ষ্কদের জন্য ৩০ টাকা ও অপ্রাপ্তবয়ষ্কদের জন্য ২০ টাকা নির্ধারিত করা হয়েছে।
 
১৩ লাখ ৭৩ হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে মেলার মাঠে বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল ও প্যাভিলিয়ন বসানো হয়েছে।
 
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, ছোট বড় মিলে এবারের মেলায় ১৬৮টি প্যাভিলিয়ন ও বিভিন্ন সাইজের ৩৮৭টি স্টল রয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি ফুড স্টল ও ৫টি বড় সাইজের রেস্টুরেন্ট।
 
এসবের মধ্যে ৬০টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ১০টি জেনারেল প্যাভিলিয়ন, ৩টি রিজার্ভ প্যাভিলিয়ন, ৩৮টি ফরেন প্যাভিলিয়ন, ৩৬টি প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন, ১৩টি জেনারেল মিনি প্যাভিলিয়ন ও ৬টি রিজার্ভ মিনি প্যাভিলিয়ন, ২টি ফরেন মিনি প্যাভিলিয়ন, ৬৪টি প্রিমিয়ার স্টল, ১৬টি ফরেন প্রিমিয়ার স্টল, ২৭৫টি জেনারেল স্টল, ২৫টি ফুড স্টল ও ৫টি রেস্টুরেন্ট রয়েছে।

এছাড়া মেলায় একটি ই-শপ, একটি শিশুপার্ক, সুন্দরবনের আদলে একটি ইকো পার্ক, একটি ই-পার্ক, দু’টি রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্র,  দু’টি মা ও শিশুকেন্দ্র, একটি প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র, ১৪টি স্পটে গার্ডেন, ১৩টি স্পটে ৫২টি টয়লেট, ৩টি স্পটে ৭৭০টি গাড়ি রাখার জন্য পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
 
অন্যদিকে মুসল্লিদের মেলায় নামাজ পড়ার জন্য একটি মসজিদ ও আনসার এবং বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যদের জন্য দু’টি ডরমিটরি স্থাপন করা হয়েছে।
 
মেলার নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি, র্যাব, আনসার ও বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্স নিয়োজিত রয়েছে। আগত দর্শনার্থীদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ এলে সে বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সার্বক্ষণিক মেলা প্রাঙ্গনে ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োজিত আছেন।
 
এছাড়া মেলা প্রাঙ্গণের গুরুত্বপূর্ণ স্থান, গেট, পার্কিং এরিয়া ও চারপাশে ১০০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এসব ক্যামেরা মনিটরিং করছে।
 
এবার ৫টি মহাদেশ থেকে বাংলাদেশসহ ২২টি দেশ মেলায় অংশ নিচ্ছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৫
টিএইচ/এফবি/এএসআর

** দর্শনার্থীদের আগমন বেড়েছে
** বাণিজ্য মেলায় দর্শনার্থী কম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।