ঢাকা, রবিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২, ২৯ জুন ২০২৫, ০৩ মহররম ১৪৪৭

অর্থনীতি-ব্যবসা

মিথ্যা মামলায় হয়রানি: এনবিআরের ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৪৬, জুন ২৯, ২০২৫
মিথ্যা মামলায় হয়রানি: এনবিআরের ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান

ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিককে হয়রানি করার অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্যসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এদের মধ্যে কয়েকজন এনবিআরে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত।

রোববার (২৯ জুন) দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে, তারা হলেন এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, কর অঞ্চল-৮-এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, বিসিএস কর একাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, কর অঞ্চল-১৬-এর উপ-কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান তারেক রিকাবদার এবং ঢাকা (দক্ষিণ) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু।

দুদক বলছে, এনবিআরের কতিপয় অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তারা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে তাদের করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। এতে প্রতি বছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মালিককে হয়রানি করেন বলে জানা যায়।

কমিশন সূত্র বলছে, অনেক করদাতা আগাম কর দেন। আবার কেউ কেউ বেশি কর দেন। নিয়ম হচ্ছে এই কর হিসাব-নিকাশ করার পর বেশি দেওয়া হলে তা ওই করদাতাকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, করের বাড়তি টাকা ফেরত পেতে আরও অন্তত অর্ধেক টাকা ঘুষ বা উপহার বাবদ খরচ করতে হয়। অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তারা করের টাকা ফেরত দিতে নিজেরাও কামিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা।

দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে আরও জানা যায়, বিগত ২০-২৫ বছর ধরে বিভিন্ন স্টেশনে চাকরিকালীন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক, ভ্যাট ও কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে ও নিজে লাভবান হয়ে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে দুর্নীত, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এমন অভিযোগে উল্লিখিত ছয়জনের বিরুদ্ধে দুদকের তথ্যানুসন্ধান কার্যক্রম চলমান।

জানা গেছে, যারা তদন্তের মুখে পড়েছেন, এদের মধ্যে হাছান তারেক রিকাবদার এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি। এনবিআরে প্রায় দুমাস ধরে চলমান আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে এই পরিষদ। এছাড়া মির্জা আশিক রানা ও শাহরীন সুস্মিতাও এই সংগঠনের সহসভাপতি।

এসএমএকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।