ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রথযাত্রায় লাখো ভক্তের অংশগ্রহণ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০১৯
রথযাত্রায় লাখো ভক্তের অংশগ্রহণ রথযাত্রায় লাখো ভক্তের অংশগ্রহণ। ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা লাখো ভক্তের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকেল ৩টায় নগরের নন্দনকানন রথের পুকুর পাড় এলাকায় কেন্দ্রীয় রথযাত্রা উদযাপন কমিটির আয়োজনে রথপরিক্রমার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে এ উৎসব শুরু হয়।

এরপর ইসকন, নন্দনকানন কর্তৃক আয়োজিত শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কেন্দ্রীয় রথযাত্রার ২২তম মহোৎসব নগরের ডিসি হিলে উদ্বোধন করা হয়। ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের উদ্যোগেও পৃথক রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বেলুন উড়িয়ে প্রবর্তকে রথযাত্রা উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কাউকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বক্তব্য দেওয়া মেনে নেবে না।

জনগণ যার যার ধর্ম পালন করবে। কেউ যদি তার ধর্ম পালন করতে না চায় সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অধিকার তার নেই। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। প্রত্যেকেরই নিজ নিজ ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। নিজ ধর্মের পাশাপাশি অন্যের ধর্মের প্রতিও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে এটাই বাস্তবতা।

রথযাত্রায় লাখো ভক্তের অংশগ্রহণ।  ছবি: উজ্জ্বল ধর

নওফেল বলেন, জাতির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সব সম্প্রদায়ের অসামান্য অবদান রয়েছে। বর্তমান সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। সব ধর্মের মানুষ সমান ধর্মীয় অধিকার নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সকল ধর্মের মানুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করে দেশ স্বাধীন করেছে।  

বক্তব্য দেন শ্রীমৎ ভক্তি আশ্রয় বৈষ্ণব স্বামী মহারাজ ও শ্রীপাদ তারক কৃষ্ণ নাম দাস ব্রহ্মচারী, অধ্যক্ষ শ্রীপাদ লীলারাজ গৌরদাস ব্রহ্মচারী। সভাপতিত্ব করেন তিনকড়ি চক্রবর্তী।

ডিসি হিলে প্রধান অতিথি ছিলেন ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী। অনুষ্ঠানের সূচনা করেন শ্রীমৎ অমিয় বিলাস স্বামী মহারাজ ও শ্রীমৎ ভক্তি নিত্যানন্দ স্বামী মহারাজ। বক্তব্য দেন শ্রীমৎ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। অতিথি ছিলেন প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, হাসিনা মহিউদ্দিন সহ জন্মাষ্টমী ও পূজা পরিষদের নেতারা।

রথযাত্রায় ভক্তের অংশগ্রহণ।  ছবি: উজ্জ্বল ধর

রথের পুকুর পাড়ে কেন্দ্রীয় রথযাত্রার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান। তুলসীধামের মোহন্ত শ্রীমৎ দেবদীপ পুরী মহারাজের পৌরহিত্যে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রথযাত্রা উদযাপন কমিটির সভাপতি হরিশংকর ধর। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক বটন কান্তি দে। সুজন কান্তি দে’র সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সীতাকুণ্ড স্রাইন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন দাশ, কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী ও শৈবাল দাশ সুমন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সিএমপির উপ-কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) হারুনুর রশিদ হাযারী, উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এমএম মেহেদী হাসান ও কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহসীন।

ঢোলক বাদ্য, মঙ্গল শঙ্খ ও উলুধ্বনি দিয়ে জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলভদ্রকে রথারোহণ করানো হয়। মহাশোভাযাত্রা সহকারে শ্রী কৃষ্ণায়ন, মনোহরখালী, টেকপাড়া, সদরঘাট মাইজপাড়া, শাহাজীপাড়া, পার্বতী ফকির পাড়া, কেদারনাথ তেওয়ারী কলোনি, টাইগারপাস জগন্নাথ সংঘ, সুপ্রভাত বয়েজ ক্লাব, গঙ্গাবাড়ী, পাথরঘাটা গিরিধারী মন্দির ও ইপিজেড শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের রথসহপ্রায় সব মঠ-মন্দিরের রথসমূহ পরিক্রমায় অংশ নেয়। শোভাযাত্রায় অদ্বৈত-অচ্যুত মিশনের ভক্ত এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।

শুক্রবার ৫ জুলাই থেকে ৭ দিনব্যাপী জেএম সেন হলে ভাগবত সপ্তাহ অনুষ্ঠিত হবে। ১২ জুলাই উল্টো রথযাত্রা নন্দনকানন গৌর নিতাই আশ্রম থেকে শুরু করে উল্টো পথে নন্দনকানন শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দিরে এসে শেষ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৯
এআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।