চট্টগ্রাম: জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য মুহাম্মদ জাফর সাদেক বলেন, জামায়াতে ইসলামী দেশের জনগণের প্রকৃত অধিকার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। আমরা জনগণের পক্ষ থেকে ৫ দফা যৌক্তিক দাবি পেশ করছি, যাতে দেশে একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ ও কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
রোববার (১২ অক্টোবর) সকালে পরিষদ প্রাঙ্গণে চট্টগ্রাম জেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। পরে জামায়াত নেতারা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সমাবেশে তিনি আরও বলেন, এ স্মারকলিপিতে দেশে রাজনৈতিক সংহতি ও স্থিতিশীলতার জন্য ৫ দফা গণদাবি উপস্থাপন করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে ‘জুলাই সনদ’এর ভিত্তিতে রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিতকরণ ও পিআর (প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি বাস্তবায়নের দাবি।
জাফর সাদেক বলেন, বাংলাদেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ বর্তমানে বহুলাংশে সংকটাপন্ন। মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য সুষ্ঠু রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। ‘জুলাই সনদ’ পদ্ধতির মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীসহ সব রাজনৈতিক দল যাতে অবাধে নিজেদের মত প্রকাশ করতে পারে এবং ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্ব পায়, সেই সুযোগ দিতে হবে। পিআর পদ্ধতি চালু হলে সব দল, বিশেষ করে সংখ্যালঘু ও নতুন দলগুলোর জন্য নির্বাচন সুষ্ঠু ও ন্যায়সঙ্গত হবে। আমাদের এই ৫ দফা গণদাবি বাস্তবায়িত হলে দেশের গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অনেকগুণ বৃদ্ধি পাবে।
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মার্কেট প্রাঙ্গণে সমাবেশে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হক ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সেক্রেটারি আব্দুল জাব্বারের যৌথ সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমির আলাউদ্দিন শিকদার, বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, নগর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস প্রমুখ।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমির আলাউদ্দিন শিকদার বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে জনগণের দাবি আদায়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। জামায়াতের এই ৫ দফা দাবি দেশের গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ নুরুল আমিন বলেন, বর্তমান সময়ে মানুষের মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও ভোটাধিকার সংক্রান্ত সংশয় দেখা দিয়েছে। পিআর পদ্ধতি চালু হলে ভোটাররা তাদের প্রতিনিধিদের সঠিকভাবে বেছে নিতে পারবেন। আমরা জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, জামায়াতে ইসলামী সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাবে।
সভাপতির বক্তব্যে আনোয়ারুল আলম চৌধুরী বলেন, জুলাই সনদ অনুযায়ী রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানোর সুযোগ না থাকলে কোনো দলই জনগণের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছাতে পারবে না। আমাদের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে এবং স্থানীয় পর্যায়ে দাবিগুলো পূরণে সবরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি, স্মারকলিপিতে উল্লিখিত বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সরকারের পক্ষ থেকে একটি ইতিবাচক সাড়া দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিবেশ উন্নত হবে এবং নতুন প্রজন্মের প্রতি রাজনৈতিক বিশ্বাস বাড়বে।
এতে বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ জাকারিয়া, অ্যাডভোকেট নাছের, উত্তর জেলা সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও সীতাকুণ্ড আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আনোয়ার ছিদ্দিক চৌধুরী, মাওলানা নুরুল হোসাইন, কোতোয়ালী থানা আমীর আমির হোছাইন, ডবলমুরিং থানা আমির ফারুকে আজম এবং সাতকানিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইব্রাহিম চৌধুরীসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা।
পরে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মার্কেট থেকে মিছিলটি লালদিঘী-কোতোয়ালী মোড় হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জামায়ত নেতারা স্মারক লিপি প্রদান করেন।
জেলা প্রশাসকের পক্ষে থেকে স্মারকলিপি গ্রহণ করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফ উদ্দিন।
এতে জামায়াতের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য মুহাম্মদ জাফর সাদেক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আমির আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, উত্তর জেলা আমির আলাউদ্দিন সিকদার, চট্টগ্রাম নগর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, দক্ষিণ জেলা সেক্রেটারি মাওলানা বদরুল হক, উত্তর জেলা সেক্রেটারি আব্দুল জব্বার প্রমুখ।
বিই/পিডি/টিসি