ঢাকা, শুক্রবার, ১ কার্তিক ১৪৩২, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ রবিউস সানি ১৪৪৭

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদকের মামলায় ফেরারি যুগ্ম সম্পাদক!

মিনহাজুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৩০, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩
বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদকের মামলায় ফেরারি যুগ্ম সম্পাদক!

চট্টগ্রাম: বিএনপির এক সহ দপ্তর সম্পাদকের দায়ের করা মামলায় আসামি হয়ে ফেরারি হয়েছেন একই কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

 

ঘটনা ফেনীতে হলেও খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক ইশতেয়াক আহম্মেদ নিপু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রামগড় উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া ফরহাদের বিরুদ্ধে। এ মামলায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া ফরহাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করেন।

এই গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে এখন পলাতক রয়েছেন ফরহাদ।

চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৬ মে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক ইশতেয়াক আহম্মেদ নিপুর বাদী হয়ে শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া ফরহাদ ও  মো. আরিফের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন। একইদিন ট্রাইব্যুনাল মামলা গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দেন পিবিআই ফেনী জেলাকে। মামলার তদন্ত শেষে ফেনী জেলার পিবিআইয়ের পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ফৌজুল আজিজ গত ৪ সেপ্টেম্বর আদালতে রিপোর্ট জমা দেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর তদন্ত রিপোর্ট গ্রহণ করে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।  

চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ইশতেয়াক আহম্মেদ নিপুর নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা মামলায় শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া ফরহাদ নামে এক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়েছে। মামলাটি আগামী ২ নভেম্বর চার্জ গঠনের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।  

মামলার বাদী খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক ইশতেয়াক আহম্মেদ নিপুর বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনাল শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া ফরহাদ ও আরিফের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়েছে। তিনি আগে কমিটিতে ছিলেন। বর্তমানে জেলা কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।  

খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া ফরহাদ বাংলানিউজকে বলেন, আমার কমিটির সহ দপ্তর সম্পাদক আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথা নিয়ে ফেরারির মতো ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে। আন্দোলন সংগ্রাম থেকে দূরে রাখার জন্যে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মামলা করা হয়েছে।  

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি জেলা কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আছি। আমাকে জেলা কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করেছে। কিন্তু সেটা কেন্দ্র থেকে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি।  

খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সহ সভাপতি আবু ইউসুফ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, জেলা বিএনপির কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া ফরহাদ। জেলা কমিটি ফরহাদকে অব্যাহতি দিয়েছিল, পরে কি হয়েছে আমার জানা নেই।  

কেন্দ্রীয় বিএনপির নাম অনিচ্ছুক এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, জেলা বিএনপির কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া ফরহাদকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছিল। সেটার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।  

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, জেলা কমিটির সদস্যদের বিষয়ে জেলা কমিটি অব্যহতি সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। অব্যাহতির সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের কাছে জমা দিতে হবে। যদি সেটা কেন্দ্র অনুমোদন দিয়ে থাকে, তাহলে কার্যকর হবে। আবার অনেক সময় যদি কেন্দ্রীয় কমিটি সুপারিশ করে, তাহলে অব্যাহতি কার্যকর হয়ে যাবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩
এমআই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।