জহিন ফেরদৌস জামি। প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলছেন, খেলেছেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলে।
জামির বিশ্বাস ক্রীড়াঙ্গন যেমন নিরপেক্ষ তেমনি রাজনীতিও হওয়া উচিত পক্ষপাতহীন। দুর্নীতি আর সংকীর্ণতার শেকল ভেঙে নতুন প্রজন্মের নতুন আহ্বান দরকার। সেই আহ্বানের কণ্ঠস্বর হতে চান তিনি।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডাকসু নির্বাচন কেন করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে জামি বলেন, ‘প্রথমত আমি একজন প্রফেশনাল ক্রিকেটার, প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলছি। আমার মনে হয় কালেক্টিভ একটা ভয়েসের প্রয়োজন। আমি মনে করি এই পদে এমন একজন দরকার যার রাজনৈতিক কোনো পক্ষপাতিত্ব থাকবে না। এই দিকটা ভেবেই ডাকসুতে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া। আমরা জানি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকিছুই পলিটিক্যাল। এ জায়গা থেকেই একটা দায়বদ্ধতা। ’
পরিবার-বন্ধুদের সমর্থন তাকে দিয়েছে সাহস। জামি বলেন, ‘মাঠে যেমন সমর্থকদের ভালোবাসা জিততে লড়েছি, এবার সেই ভালোবাসাই আমাকে নতুন লড়াইয়ে নামিয়েছে। আমার পরিবার অনেক সাপোর্টিভ। তারা সবাই আমাকে ভীষণ সাপোর্ট করছে। তাদের সবারই বিশ্বাস আছে আমার ওপর। ইনশাআল্লাহ, পারব। যদিও বাসা থেকে প্রথম দিকে একটু বাঁধা ছিল। তবে পরবর্তীতে তারা আমাকে সমর্থন করেছে। বর্তমানে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা বাসা থেকেই পাচ্ছি। ’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আধুনিক ক্রীড়া সুবিধা গড়ে তোলার স্বপ্নও দেখেন তিনি। তার ভাষায়, খেলাধুলা তাকে শিখিয়েছে শৃঙ্খলা, পরিশ্রম আর নেতৃত্ব—সেই শিক্ষাই কাজে লাগাবেন ছাত্রসমাজের জন্য।
তিনি আরও বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের জন্য আমার অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। এই দরজা, ওই দরজা ঘুরতে হচ্ছে। আমার রেগুলার কারিকুলাম এগুলার কিছুই হচ্ছে না। যদি আমি মাঠের শৃঙ্খলাটা এই জায়গায় নিয়ে আসি, সেক্ষেত্রে এই জায়গাটা আমাকে অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করছে। ’
জামি জানিয়েছেন, ডাকসু নির্বাচনের ব্যস্ততার কারণে নিয়মিত অনুশীলন না করলেও ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি ডাকসুর জন্য ট্রেনিং গ্রাউন্ডেই যেতে পারছি না। কিন্তু তারপরও আমি যতটুকু সময় পাচ্ছি, আমি আমার ফিটনেসটা ধরে রাখার চেষ্টা করছি। ’
বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়েও কথা বলেন জামি। ক্রিকেটের বর্তমান প্রতিযোগিতা তিনি ইতিবাচকভাবেই দেখেন। ক্রিকেটার বলেন, ‘এই যে কম্পিটিশনটা ক্রিকেটারদের মাঝে, এটা আরও যত গ্রো করবে, তত বাংলাদেশ ক্রিকেটে উন্নতি হবে। এখন হয়তো আমাদের জাতীয় দলের জন্য দুইজন ওপেনার আছে। কিন্তু যখন দশজন ওপেনার থাকবে, তখন সবার মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং রানের ক্ষুধা দুইটাই বৃদ্ধি পাবে। এটা বাড়লে দেশের ক্রিকেটের জন্যই ভালো। ’
টাইগার পেসার তানজিম সাকিব তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। তার পরিশ্রম অনুপ্রাণিত করে তাকে। জামি বলেন, ‘তানজিম সাকিব আর আমি বেশ ভালো বন্ধু। আমরা একসাথেই ছোট থেকে বড় হয়েছি। ক্লাস এইট থেকে ন্যাশনাল টিমে আসার আগ পর্যন্ত ওর জার্নিটা খুব কাছ থেকে দেখেছি। ওর পরিশ্রম আর ডেডিকেশন আমাকে অনেক মুগ্ধ করে। ’
জামি স্বপ্ন দেখেন জাতীয় দলে খেলার। সেই আশা বুনেই হাঁটছেন ক্রিকেটের রাজকীয় কিন্তু বন্ধুর পথে। জামির চোখে ডাকসুও নতুন ইনিংসের মঞ্চ। যে ইনিংসে রান না তুলে আউট হলেও তার আক্ষেপ নেই। কারণ এই মঞ্চে যারা আসবে, সবাই ই তার কাছের ভাই বা বন্ধু। জামির ভাষায়, ‘আমরা আমরাই তো। সুস্থ প্রতিযোগিতা হচ্ছে। হারলেও আফসোস নেই। কারণ আমার কথা বলার জন্য আমার ভাই, বন্ধুই তো আছে। ’
আরইউ