ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে ‘ডিজিটাল’ বর্ষবরণের পরিকল্পনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২০
প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে ‘ডিজিটাল’ বর্ষবরণের পরিকল্পনা

ঢাকা: ঘোষণাটি আগেই এসেছিল। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় এবারের পহেলা বৈশাখের আয়োজনে জনসমাগম করা যাবে না। এই ঘোষণা অনুযায়ী, ইতোমধ্যেই বর্ষবরণের সবচেয়ে প্রাচীন আয়োজন রমনা বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতী আয়োজন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা হচ্ছে না। তবে ‘ডিজিটাল’ বর্ষবরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আহ্বানে সাড়া দিচ্ছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। জনসমাগম না ঘটিয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বর্ষবরণের পরিকল্পনা করছেন তারা।

রোববার (৫ এপ্রিল) ‘ডিজিটাল’ বর্ষবরণের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন ছায়ানটের সহ-সভাপতি শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন।
 
১৯৬৭ সালে রমনা বটমূলে প্রথমবারের মতো ছায়ানটের বর্ষবরণের প্রভাতী আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।

পাকিস্তানি জান্তা সরকার, স্বৈরাচারী শাসনামল, এমনকি বোমা হামলার পরও বন্ধ হয়নি বাঙালির বর্ষবরণের সবচেয়ে বড়-বৈচিত্র্যময় আয়োজনটি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর এবারই প্রথম ছায়ানটের প্রভাতী এ আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হবে না। তবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংক্ষিপ্ত আকারে বর্ষবরণের আয়োজন করা হবে বলে জানা যায়।
 
ছায়ানটের সহ-সভাপতি খায়রুল আনাম শাকিল বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে প্রভাতী আয়োজনটি ধারণ করে পহেলা বৈশাখের দিন প্রচার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটি আমরা করবো না। কারণ, পহেলা বৈশাখের আয়োজনটি আনন্দের, উৎসবের। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে করোনা পরিস্থিতির কারণে উৎসব করার চেয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোটা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য আমরা সে পরিকল্পনাটি বাদ দিয়েছ।
 
তিনি বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংক্ষিপ্ত আকারে একটি আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাতে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখবেন ছায়ানট সভাপতি সন্‌জীদা খাতুন। একই সঙ্গে দু’টি গানও থাকবে। তবে বক্তব্য ও গান কীভাবে ধারণ করা হবে সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
 
জনসমাগম না করে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আপনা-মাঝে শক্তি ধরো, নিজেরে করো জয়’ প্রতিপাদ্য করে এবারে বর্ষবরণের আয়োজন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। প্রতিবারই মূল প্রতিপাদ্যের উপর একটি পোস্টার বের করা হয় অনুষদ থেকে। এবার সেই পোস্টারটি ভার্চুয়ালি প্রকাশ করা হবে। যাতে মূল প্রতিপাদ্যের পাশাপাশি এর ব্যাখ্যাও থাকবে।
 
এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছরই আমরা পোস্টার করি। এবারও করবো। তবে সেটা প্রতিপাদ্যের ব্যাখ্যাসহ। প্রতিবার প্রতিপাদ্যটি আমরা নানা মোটিভের মাধ্যমে তুলে ধরি। এবার সেটি হবে না বলে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
 
তিনি বলেন, আর্নেস্ট হেমিংওয়ের ‘দি ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্যা সি’ থেকে ‘মানুষকে ধ্বংস করা যায় কিন্তু পরাজিত করা যায় না’- এ লাইন নেওয়া হচ্ছে। যা দিয়ে প্রতিপাদ্যের ব্যাখা শুরু করা হবে। এভাবেই আমরা যা এতদিন মোটিভের মাধ্যমে বলে এসেছি, সেটা পোস্টারের মাধ্যমে তুলে ধরবো।
 
এদিকে, প্রতীকীভাবে পহেলা বৈশাখ পালনের পরিকল্পনা করছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটও। তবে সেটি কীভাবে হবে এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
 
এ বিষয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রতীকীভাবে পহেলা বৈশাখ পালনের পরিকল্পনা করছি। কিন্তু সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এই মুহূর্তে জোট সমাজের কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজটি করছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২০
ডিএন/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।