ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

প্রকাশ্যে নোবেলজয়ী কবি এলিয়টের হাজারও গোপন প্রেমপত্র!

শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২০
প্রকাশ্যে নোবেলজয়ী কবি এলিয়টের হাজারও গোপন প্রেমপত্র!

বিংশ শতাব্দীতে বিশ্বকবিতার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া কেবলমাত্র একজন কবির নাম নিতে বলা হলে যিনি সামনে চলে আসেন তিনি আর কেউ নন, নোবেলজয়ী টি এস এলিয়ট। ‘দ্য ওয়েস্ট ল্যান্ড’ কাব্যগ্রন্থের মধ্য দিয়ে তিনিই বিশ্বকবিতায় আধুনিক যুগের সূচনা করেন। ফলে এ কবির লেখা ও জীবনযাপন নিয়ে বিপুল আগ্রহ সারা দুনিয়ায়। এবারে এলিয়টে আগ্রহীদের জন্য এসেছে দারুণ রোমাঞ্চকর এক সংবাদ। আর তা হলো, এই প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আসছে এ কবির গোপন ১ হাজার ১৩১টি চিঠি। এগুলো তিনি লিখেছিলেন, একান্ত বান্ধবী এমিলি হেলকে।  

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।  

খবরে বলা হয়, ১৯৩০ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে এমিলিকে এসব চিঠি লেখেন টি এস এলিয়ট।

কিন্তু, এতোদিন এগুলো গোপন রাখা হয়। প্রায় ৬০ বছর আগে আমেরিকার প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের হাতে এসব চিঠি তুলে দেন এমিলি। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়কে একটিই শর্ত দেন এমিলি, আর তা হলো- এলিয়ট ও তার মধ্যে সর্বশেষ যে মারা যাবে তার মৃত্যুর পঞ্চাশ বছর পরই কেবলমাত্র প্রকাশ্যে আনা এগুলো।  

এলিয়টের মৃত্যু হয় ১৯৬৪ সালে। এর পাঁচ বছর পর ১৯৬৯ সালে মারা যান এমিলি। শর্তমাফিক সম্প্রতি চিঠি গোপন রাখার ৫০ বছর পূর্ণ হয়। ফলে ৩ জানুয়ারি (শুক্রবার) শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য অপ্রকাশিত ওই চিঠির ভাণ্ডার খুলে দিতে চলেছে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।  

বয়সী এলিয়ট ও এমিলি (বায়ে), এমিলিকে লেখা কবির চিঠি (ডানে)।  ছবি- সংগৃহীত

এসব চিঠি এলিয়টের সৃষ্টিসম্ভার, জীবনযাপন, দৃষ্টিভঙ্গী ও তার সঙ্গে এমিলির একান্ত সম্পর্কের ওপর নতুন করে আলো ফেলবে। এলিয়ট ও তার সাহিত্য বুঝতে যোগ করবে নতুন এক মাত্রা। এ নিয়ে রীতিমতো রোমাঞ্চিত শিল্প-সাহিত্য দুনিয়া।  

চিঠিগুলো প্রকাশ্যে আসার ব্যাপারে উচ্ছ্বসিত এলিয়ট বিশেষজ্ঞ ও টিএস এলিয়ট ইন্টারন্যাশনাল সামার স্কুলের পরিচালক অ্যান্থনি কুডা জানান, এর চেয়ে বেশি প্রতীক্ষিত আর কিছু হতে পারে না। দশকের পর দশক এগুলোর অপেক্ষা ছিল।  

এমিলি-এলিয়টের সম্পর্কের ব্যাপারে জানতে চাইলে এ বিশেষজ্ঞ বলেন, নিঃসন্দেহে খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর একান্ত সম্পর্ক ছিল তাদের মধ্যে। তা না হলে চিঠিগুলো প্রকাশ্যে আনার ব্যাপারে এতো গোপনীয়তা কেন! 

ঐতিহাসিক এসব চিঠি প্রকাশের ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক জোশুয়া কোটিন বলেন, ক্যাম্পাস উত্তেজিত। যারা এলিয়টের ‘দ্য লাভ সং অব জে আলফ্রেড প্রুফ্রক’ ও ‘দ্য ওয়েস্ট ল্যান্ড’ নিয়ে বিভোর ছিল, এবারে তারা সেগুলোর রচয়িতাকে নিয়ে নতুন করে আগ্রহী হচ্ছে। শুধু এলিয়টের প্রেমজীবন নয়, তার ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি, নারী বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গী, ব্রিটিশ সংস্কৃতিতে তার প্রভাব- সবকিছু নিয়েই নতুন করে কৌতূহলী হয়ে উঠেছে সবাই।

এলিয়টের চিঠি।  ছবি- সংগৃহীত

আমেরিকার বস্টনের বাসিন্দা এমিলি ছিলেন নাটকের শিক্ষিকা। ১৯১২ সালে ম্যাসাচুসেটসের কেমব্রিজে এলিয়টের সঙ্গে তাঁ প্রথম দেখা হয়। এলিয়ট তখন ছিলেন হার্ভার্ডে। পরবর্তী সময়ে ১৯২৭ সালে তাদের বন্ধুত্ব আরও ঘনিষ্ঠ হয়। এলিয়ট ততোদিনে ইংল্যান্ডে চলে গেছেন। সেখান থেকেই এমিলিকে এসব চিঠি চালাচালি করেন তিনি।  

অবশ্য প্রকাশ্যে আসতে চলা এসব চিঠির মধ্যে এমিলির পক্ষ থেকে এলিয়টকে লেখা কোনো চিঠি নেই। এলিয়টের নির্দেশেই সেগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয় বলে এলিয়ট বিশেষজ্ঞ ও জীবনীকাররা জানান।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২০  
এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।