ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

বইমেলায় সেমিনার

‘রবীন্দ্রনাথ আমাদের চেতনা ও সংস্কৃতির উৎস’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০১১

ঢাকা: বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে রবীন্দ্রনাথের সুদৃঢ় অবস্থানের কারণে পাকিস্তানিদের শোষণনীতি অনেকটাই ব্যাহত হয়েছিল। আর তাই ১৯৫১ সালে ‘মাহে নও’ পত্রিকায় রবীন্দ্রসাহিত্য বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

কিন্তু ইতিহাসের সড়ক কেউ রোধ করতে পারে না। ১৯৬৯ সালে শেখ মুজিবের ‘আমি রবীন্দ্রনাথ পড়িব’ ঘোষণাটি বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের প্রেরণা হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

বুধবার বিকেলে বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে অমর একুশে বইমেলার মূল মঞ্চে আয়োজিত এক সেমিনারে সভাপতির বক্তৃতায় অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম এ কথা বলেন। সেমিনারে বিষয় ছিল ‘মুক্তিসংগ্রাম, সংস্কৃতি ও রবীন্দ্রনাথ’।

তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ আমাদের চেতনা ও সংস্কৃতির উৎস। ’

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম তার আলোচনায় বলেন, ‘আমাদের সাংস্কৃতিক আন্দোলন একটি চলমান প্রক্রিয়া। তার সাহিত্য, নাটক, নৃত্যনাট্য আমাদের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথকে আমরা যথার্থ ব্যবহার করতে পারিনি। তার ধর্মনিরপেতা ও সাম্যবাদ নীতি অনুসরণ করতে পারলে বাংলা ভাষা-সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গন আরও সমৃদ্ধ হবে। ’

সাংবাদিক, গবেষক ও লেখক আবুল মোমেন বলেন, ‘স্বাধীনতা লাভের অনেকটা সময় পার হলেও সমাজে শিক্ষা, চিন্তা-চেতনার বৈষম্যগুলো আমরা দূর করতে পারিনি। ’

তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সংস্কৃতির মাধ্যমে লালন করতে পারলেই আমরা সমৃদ্ধ হবো, মানবিক হতে পারব। ’

নাট্যব্যক্তিত্ব খায়রুল আলম সবুজ বলেন, ‘১৯৬১ সালে পূর্ব পাকিস্তানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের আয়োজন করা হলেও আইয়ুব সরকারের স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের কারণে তা যথাযথ পালন সম্ভব ছিল না। কিন্তু বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সুদৃঢ় চেতনার ফলে বিভিন্ন গণআন্দোলন পেরিয়ে আমরা ’৭১-এ রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা পেয়েছি। সেসব আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ ও তার সাহিত্যকর্ম আমাদের প্রেরণা যুগিয়েছে। ’

প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্র-গবেষক ড. সন্জীদা খাতুন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পরে সংস্কৃতিশিক্ষা আর অনুষ্ঠান পরিবেশনার ভেতর দিয়ে গঠনমূলক কাজ চললেও কিছু ফাঁক বা সাধনার ঘাটতি থেকে গিয়েছিল। আর তা হলো- দেশবাসীকে শিতি ও সচেতন করে তোলার চেষ্টার অভাব। হাতে পাওয়া স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ন রাখার ক্ষেত্রেও আমরা সচেতন হইনি। ’

উল্লেখ্য, এ বছর রবীন্দ্রনাথের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উপলে বাংলা একাডেমী মেলার সেমিনারে রবীন্দ্র-কেন্দ্রিক আলোচনার বিষয় নির্ধারণ করেছে।

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী অজিত রায়। লায়লা হাসানের নির্দেশনায় নৃত্যনাট্য পরিবেশন করে ‘নটরাজ’।

বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।