ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ছে

মাজেদুল নয়ন; স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১১
নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ছে

ঢাকা: ঋতু পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন হাসপাতালে নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, যার মধ্যে বেশীরভাগই শিশু। গত কয়েক বছরের তুলনায় হাসপাতালগুলোতে নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেশী বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞরা।



বাংলাদেশ পিডিয়েট্রিক অ্যাসোসিয়েশন এবং চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত সপ্তাহে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৫০ জন রোগীর মধ্যে ৮০ থেকে ১০০ জনই ভর্তি হয়েছে নিউমোনিয়া অথবা ব্রঙ্কাইটিস আক্রান্ত হয়ে। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫০ জন রোগীর মধ্যে ৫০ জনই নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কাইটিস আক্রান্ত।

এছাড়াও দিনাজপুর, রাজশাহী এবং নীলফামারিতেও নিউমোনিয়ার অবস্থা ঝুকিপূর্ণ। প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব অঞ্চলে গড়ে প্রায় শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগ রোগী শ্বাসনালী জনিত রোগে আক্রান্ত।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পিডিয়াট্রিক হাসপাতাল, চারদিন আগে মিরপুর শিশু হাসপাতালে ৬ মাসের শিশু তালহাকে ভর্তি করানো হয়। তালহার মা শাহনাজ জানান, অক্টোবর মাসেই তালহা দু’বার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। একই হাসপাতালে গত সপ্তাহে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ১০ মাসের শিশু আস্থা।

হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আ ফ ম সেলিম জানান, গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এ হাসপাতালে ডায়রিয়া এবং নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেশী থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শীত আসার আগেই এবার নিউমোনিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে।

ডা. সেলিম জানান, প্রতি দিন ৭ থেকে ১০টি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে। গত বছর নভেম্বর থেকে এর প্রাদুর্ভাব শুরু হলেও এবার আগে থেকেই শুরু হয়েছে।

বর্তমানে নিউমোনিয়ার পরিস্থিতি সর্ম্পকে বাংলাদেশ শিশু চিকিৎসক সমিতির (বিপিএ) সাধারন সম্পাদক শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মেসবাহউদ্দিন মঙ্গলবার বাংলানিউজকে বলেন, ‘শীতকালে নিউমোনিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশী দেখা যায়। বেশ কিছু হাসপাতাল জানিয়েছে গত কয়েক বছরের তুলনায় নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেশী। ’

ঢাকা শিশু হাসপাতালের পিডিয়েট্রিক রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, শীতকালে প্রয়োজনীয় উষ্ণতায় শিশুকে রাখলে এ রোগ থেকে অনেকটা রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও বিশুদ্ধ পানির ওপর জোর দেন তিনি।

ডা. রুহুল আমিন বলেন, যদি শিশুকে ৬ মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র বুকের দুধ পান করানো হয় এবং ৭ থেকে ২৪ মাস পর্যন্ত বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার খেতে দেওয়া হয়, তাহলেই শিশুর এ রোগ প্রতিরোধ অনেকটাই সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

সেভ দি চিলড্রেনের এক প্রতিবেদনে নিউমোনিয়াকে নিরব ঘাতক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কারণ, বাংলাদেশে যে কোন রোগের তুলনায় এ রোগে বেশী শিশু মারা যায়। কিন্তু অনেকে জানতেই পারেন না।

বাংলাদেশ সময় ১৮০৬ঘণ্টা; ১ নভেম্বর ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।