ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

বাংলা একাডেমির অমর একুশে বক্তৃতা অনুষ্ঠিত

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১
বাংলা একাডেমির অমর একুশে বক্তৃতা অনুষ্ঠিত

ঢাকা: শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে অমর একুশে বক্তৃতা এবং কবি জসীমউদ্‌দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০২১ দেওয়া হয়েছে। এ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক, ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক।

রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাংলা একাডেমি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য-স্মারক তালিকায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ: একটি সামাজিক ও যোগাযোগতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ শীর্ষক একুশে বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

একুশে বক্তা অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, একাত্তরের ৭ মার্চে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তট-অতিক্রমী ভাষণ তেজস্বী বক্তৃতার এক শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। একটি ভাষণ একটি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে কী দারুণভাবে উৎসাহিত করেছিল, তা পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধের দিকনির্দেশনা ও স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদানে বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ কণ্ঠস্বর সংবলিত এ ভাষণের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও সময়োপযোগিতা বিশ্লেষণ গবেষকদের জন্য এক স্বর্ণখনি।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, একুশের অঙ্গীকারে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ ও জাতি গঠনে বর্তমান সরকার কার্যকর ভূমিকা পালন করে চলেছে। বঙ্গবন্ধুসহ ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদেরা যে ভাষাভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন, আজ আমরা সে পথে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি।

হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বাংলা একাডমি ঐতিহাসিক বর্ধমান হাউসে ভাষা শহীদদের স্মরণে ভাষা-আন্দোলন জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেছে। আমরা এই জাদুঘরকে আরও সমৃদ্ধ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ভাষা আন্দোলন বিষয়ক গবেষণা, এর ইতিহাস ও তাৎপর্যকে ভিত্তি করে গত পঁয়ষট্টি বছরে বাংলা একাডেমি প্রকাশ করেছে স্মরণীয় সব বই ও সংকলন। প্রায় চার দশক ধরে মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদ স্মরণে বাংলা একাডেমি আয়োজন করে চলেছে গোটা বিশ্বের দীর্ঘকালব্যাপ্ত বই উৎসব ‘অমর একুশে বইমেলা’।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, ভাষা আন্দোলনের শহীদদের দেখানো পথে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়েছে। এই পথে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা অসামান্য। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায়, ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্বের পূর্বেই ১৯৪৭ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত ইত্তেহাদ পত্রিকায় মতামত লিখে বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষার পক্ষে তার লড়াই শুরু করেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির সহপরিচালক সায়েরা হাবীব। আয়োজনের শেষ অংশে দেওয়া হয় কবি জসীমউদ্‌দীন সাহিত্য পুরস্কার-২০২১। এ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক, ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক।

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের যে কোনো শাখায় সার্বিক অবদানের জন্য একজন খ্যাতিমান সাহিত্যিককে এ দ্বি-বার্ষিক পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কারের অর্থমূল্য দুই লাখ টাকা।

শারীরিক অসুস্থতার কারণে আহমদ রফিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারায় তার পক্ষে বাংলা একাডেমির সচিব এ. এইচ. এম. লোকমান ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) নূরুন্নাহার খানমের হাতে পুরস্কারের অর্থমূল্য দুই লাখ টাকার চেক, সম্মাননা-স্মারক ও সম্মাননাপত্র তুলে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।