ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ফিচার

সঙ্গীত-নৃত্য-আবৃত্তিতে ‘ষড়ঋতুর পদাবলি’

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৮
সঙ্গীত-নৃত্য-আবৃত্তিতে ‘ষড়ঋতুর পদাবলি’ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ‘ষড়ঋতুর পদাবলি’ অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করছেন শিল্পীরা

ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। ভিন্ন ভিন্ন রূপ-রস-গন্ধ নিয়ে প্রতিটি ঋতুই তার স্বতন্ত্র সৌন্দর্যে অপরূপ। ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে এ দেশের প্রকৃতিতে চলে সাজ বদল। এই সাজ বদলের পালায় বাংলাদেশের প্রকৃতি চিরসজীব, চির বৈচিত্র্যময়। আমাদের শিল্প-সংস্কৃতি ও সাহিত্য চর্চায় ঋতু বৈচিত্র্যের এই পালাবদলের প্রভাব বিদ্যমান।

যন্ত্রসভ্যতার বিকাশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে শহুরে জীবনে হারিয়ে গেছে ষড়ঋতুর বৈশিষ্ট্য। তবে গ্রামে এখনও রয়েছে ঋতুর বৈচিত্র্যময়তা।

গেলো দুই দশক ধরে শহুরে জীবনে গ্রামীণ আবহকে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন ঋতু উৎসবের আয়োজন করছে সাংস্কৃতি সংগঠনগুলো। তাতে স্ব স্ব ঋতুর বন্দনা এ দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে যেন আরো বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ।

বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) তেমনি এক আয়োজনে উদযাপন করা হলো আবহমান বাংলার ছয় ঋতুকে। ‘ষড়ঋতুর পদাবলি’ শিরোনামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।

সন্ধ্যায়  শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, সচিব মো. বদরুল আনম ভূঁইয়া এবং প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক ড. কাজী আসাদুজ্জামান।  এরপর পালাবদলের ধারাবাহিকতায় সঙ্গীত, আবৃত্তি আর নৃত্যের ছন্দে শিল্পীরা শৈল্পিকভাবে উপস্থাপন করেন প্রতিটি ঋতুর বৈচিত্র্য।
শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ‘ষড়ঋতুর পদাবলি’ অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করছেন শিল্পীরাছয় ঋতু নিয়ে এ আয়োজনের শুরুতেই বন্দনা করা হয় গ্রীষ্মের। একাডেমির শিল্পীদের সম্মেলক কণ্ঠে শোনা যায় ‘আজি নূতন রতনে ভূষণে যতনে’ গানটি। এরপর ‘দোলে নাগর দোলা দোলে ঘুরে ঘুরে’ গানের সঙ্গে ছিলো সম্মেলক নৃত্য। আবিদা রহমান সেতু গেয়ে শোনান ‘এক বৈশাখে দেখা হলো দুজনার’ ও মোনালীন আজাদের কণ্ঠে শোনা যায় ‘প্রখর দারুণ অতি দীর্ঘ দগ্ধ দিন’।

গ্রীষ্মের বন্দনা শেষে বর্ষা পর্বে শারমিন আক্তার গেয়ে শোনান ‘অম্বরে মেঘ মৃদঙ্গ বাজে’ ও রাফি তালুকদার পরিবেশন করেন ‘মাছের গান’। ‘শাওন গগনে ঘোর ঘনঘটা’ গানের সঙ্গে সম্মেলক নৃত্য এবং সম্মেলক কণ্ঠে গীত হয় ‘মেঘের ডমরু ঘন বাজে’। সুচিত্রা রানী সূত্রধরের কণ্ঠে ‘চঞ্চলা হাওয়ারে’ গানটি শেষ হতেই দ্বৈত কণ্ঠে রোকসানা আক্তার রূপসা ও রাফি তালকুদার গেয়ে শোনান ‘দাওয়ায় করছে মেঘ’।

শিল্পী মোহনা দাসের কণ্ঠে ‘আমার রাত পোহালো’ গানটি বয়ে আনে শরৎ ঋতুর শুভ্রতা। এরপর ‘শিউলি তলায় ভোর বেলায়’ গানের সঙ্গে ছিলো নৃত্য। আর শরৎ বন্দনার ইতি ঘটে সম্মেলক কণ্ঠে ‘এসো শারদ প্রাতের পথিক’ গানটির মধ্য দিয়ে।
শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ‘ষড়ঋতুর পদাবলি’ অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করছেন শিল্পীরাঋতুচক্রের হিসেব মোতাবেক এবার হেমন্তের পালা। শুরুতেই ড. কাজী আসাদুজ্জামান একক কণ্ঠে আবৃত্তি করেন জীবনানন্দ দাসের ‘আবার আসিবো ফিরে’ কবিতাটি। এরপর ‘আয়রে ও আয়রে’ গানের সঙ্গে সম্মেলক নৃত্য এবং সম্মেলক কণ্ঠে ‘আমার মাইঝা ভাই সাইঝা ভাই’ গান। হীরক রাজার কণ্ঠে ‘কার্তিক অগ্রহায়ন মাসে কোকিল ডাকে গাছে গাছে’ গীত হওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় নবান্নের আয়োজন।

শীত বন্দনা পর্বের শুরুতে সম্মেলক কণ্ঠে গান ‘পৌষ এলো গো, পৌষ এলো গো’। ‘এ কি মায়া লুটাও কায়া জীর্ণ শীতের মাঝে’ গানের সঙ্গে ছিলো নৃত্য। হিমাদ্রী রায় গেয়ে শোনালেন ‘পৌষের কাছাকাছি রোদ মাখা সেই দিন’ গানটি।

সবশেষে ঋতুরাজ বসন্তের আয়োজন। এ পর্বের শুরুতেই সোহানুর রহমান গেয়ে শোনালেন ‘যেখানে সীমান্ত তোমার সেখানে বসন্ত আমার’। সুচিত্রা রানী সূত্রধর ও মোহনা দাস দ্বৈত কণ্ঠে গেয়ে শোনান ‘ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান’। এর পর রোকসানা আক্তার রূপসা গেয়ে শোনান ‘তোমরা কুঞ্জ সাজাও গো’। সম্মেলক কণ্ঠে শাহ্ আবদুল করিমের ‘বসন্ত বাতাসে সই গো’ গানের সঙ্গে সম্মেলক নৃত্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় ঋতু বন্দনার মনোমুগ্ধকর এ আয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৮
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।