ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

কেমন ছিল গাদ্দাফির লিবিয়া

নাঈম হামিদ, পাঠক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১১
কেমন ছিল গাদ্দাফির লিবিয়া

পশ্চিমা মিডিয়া যেভাবে গাদ্দাফিকে উপস্থাপন করছে, তাতে মনে হয় গাদ্দাফি ছিলেন ভয়ংকর নিষ্ঠুর এক স্বৈরশাসক। তিনি দেশটিকে একেবারে লুটেপুটে খেয়ে ছাড়খার করেছেন।

কিন্তু আসলেই কি তাই? 

মাত্র ২৭ বছর বয়সে মুয়াম্মার গাদ্দাফি যখন লিবিয়ার শাসনক্ষমতা দখল করেন, তখন লিবীয়রা ছিল পুরোদস্তুর যাযাবর জাতি, তাদের আধুনিক রাষ্ট্র সম্পর্কে তেমন ধারণাই ছিল না। দেশের সম্পদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য নানাভাবে ছিল পশ্চিমাদের দখলে। বিপুল সম্পদ থাকা সত্ত্বেও জনগণ ছিল দরিদ্র।

কিন্তু স্বৈরশাসক হওয়া সত্ত্বেও এবং ব্যক্তিগত ও পারিবারিকভাবে সম্পদের পাহাড় গড়লেও গত চার দশকের বেশি শাসনামলে গাদ্দাফি তার দেশকে একটি আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। দেশের মানুষের জন্য এনেছেন বিপুল সুযোগ-সুবিধা ও উন্নয়ন। আসুন দেখে নিই গাদ্দাফির নেতৃত্বে লিবীয়দের অর্জন :


● আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক বা অন্য কারো কাছে লিবিয়ার এক পয়সাও দেনা নেই।
● উত্তর আফ্রিকার সবচেয়ে স্বাক্ষর দেশ লিবিয়া।
● লিবিয়ায় শিক্ষিত জনসংখ্যার ৮০% লোক পাশ্চাত্যের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত।
● একটি আধা কেজি রুটির দাম লিবিয়ায় পনেরো ইউএস সেন্ট (আমাদের দেশে ৪৫০ গ্রাম ওরিয়েন্ট পাউরুটির দাম পয়তাল্লিশ সেন্ট আর আমাদের মাথাপিছু আয় লিবীয়দের আয়ের ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ!)।
● লিবীয়দের জন্য ঋণের সুদের হার শূন্য শতাংশ অর্থাৎ কোনো সুদ নেই।
● লিবিয়া একটি ভিক্ষুকহীন দেশ।
● দেশটিতে ১০০% বেকারের বেকারভাতা নিশ্চিত।
● বিয়ের পর নবদম্পতির জন্য বিনামূল্যে ফ্ল্যাট বা বাড়ি।
● পৃথিবীর যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ। সেজন্য মাসে ২,৫০০ ইউএস ডলার বৃত্তির সাথে গাড়ি ও আবাসনভাতা।
● ন্যাটোর বোমাবর্ষণের আগে পর্যন্ত শূন্য (০) শতাংশ গৃহহীন নাগরিক।
● উৎপাদন মূল্যে (Ex factory price) গাড়ি।
● ছাত্ররা যে বিষয়ে পড়াশোনা করে সে বিষয়ে পড়াশোনা করে চাকরিরতরা গড়ে যে বেতন পেত সে পরিমাণ টাকা তাদের দেওয়া।

● প্রতিটি লিবীয়র জন্যে বিনামূল্যে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা।

যারা ‘স্বৈরশাসক’ আখ্যা দিয়ে গাদ্দাফিকে নিজের দেশের মাটিতে হত্যা করেছে ‌আর যাদের উদ্দেশ্য দেশের বিপুল তেলসম্পদ আর বাজার দখল করা, সেই পশ্চিমাশক্তি এবং তাদের অনুগত শাসকরা কি পারবে নাগরিকদের সেই সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রাখতে?

এই উত্তরটি জানার জন্য আমাদের হয়তো খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।