যেন মানুষ নয়, ব্যাটারিচালিত দুটো রঙিন পুতুল। তাই গ্রামের সবাই দু বোনের বাড়িকে পুতুলবাড়ি বলেই চেনে।
চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার আঠারখাদা গ্রামের কৃষক আবদুর রশীদের ১ ছেলে ২ মেয়ে। একমাত্র ছেলে স্বাভাবিক গঠনের হলেও দু মেয়েই আকৃতিতে খুব ছোট। বড় মেয়ে রূপার বয়স ২২ বছর এবং ছোট মেয়ে মীমের বয়স ১১ বছর হলেও উচ্চতায় তারা এক্কবারে ছোট পুতুলের মতো। একমাত্র ছেলে জিকুর বয়স ১৮। সে এবার এসএসসি পাস করেছে। সে স্বাভাবিক উচ্চতার মানুষ। কিন্তু রূপার উচ্চতা ৩৪ ইঞ্চি। মীমের উচ্চতা মাত্র ৩২ ইঞ্চি। পৃথিবীতে এত ছোট উচ্চতার আপন দু বোন সম্ভবত এই প্রথম-- এমন দাবি অনেকে করলেও এর আসলে কোনো প্রমাণ নেই। কিন্তু এটি সত্যিও হতে পারে এমনটি মনে করছেন কেউ কেউ।
এই দু বোন দেখতে যেমন পুতুলের মতো, তেমনি কথাও বলে তোতাপাখির মতো শব্দ করে। দূর থেকে শোনা যায় না। খাওয়া-দাওয়া করে খুব সামান্য পরিমাণে। ওজনের দিক দিয়েও খুব হালকা। রূপা ও মীমের মা ফাতেমা খাতুন বলেন, ওরা যখন জন্মেছিল তখন এতই ছোট ছিল যে হাতের তালুতে শুইয়ে রাখা যেত।
রূপা ও মীম খুব গান শুনতে ভালোবাসে। গান শোনে আর দুলে দুলে নাচে। টিভিতে সিনেমা হলে খাওয়া-দাওয়ার নাম থাকে না। ওদের রাগ, লজ্জা বা অভিমান অন্যান্য পরিপূর্ণ মানুষের মতোই। তবে আচরণ ও স্বভাবে শিশুদের মতো। এখনো দুজন মার গলা জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকে। গালে তুলে খাইয়ে দিতে হয়।
রূপা ও মীমের আক্ষেপ, ওরা স্কুলে যেতে পারে না। স্কুলে গেলে কাসের সব ছেলেমেয়ে ওদের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকে। ফলে স্কুলের শিক্ষকরা ওদের স্কুলে ভর্তি নিতে চান না।
চুয়াডাঙ্গার রূপা ও মীম নিজেদের পৃথিবীর সবচে ছোট মানুষ হিসেবে দাবি করেছেন। তবে তারা সবচে ছোট না হলেও আপন দু বোন হিসেব পৃথিবীর সবচে ছোট মানুষ বলে মনে করেন।
মজার ব্যাপার হলো, বাংলাদেশের এক প্রান্ত-গ্রামে বাস করলেও গিনেস রেকর্ডের কথা তারা জানেন। তবে জানেন না কীভাবে গিনেস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। তারা মনে করেন, এককভাবে সবচে ছোট না হলেও আপন দু বোন হিসেবে পৃথিবীর সবচে ছোট নারীর দাবিটি তারা করতেই পারেন।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৩৫৫, আগস্ট ২০, ২০১০