ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

সাফল্যের সুখস্মৃতি  

পড়া ঠিক রেখে সবই চালিয়ে যাওয়া যায়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৬ ঘণ্টা, মে ৪, ২০১৭
পড়া ঠিক রেখে সবই চালিয়ে যাওয়া যায় সুনন্দিতা বিশ্বাস

আমার শিক্ষা জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাঙ্গণ বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এ শিক্ষাঙ্গন আমার জীবনের ভিত্তি গড়ে দিয়েছে। একটি ভীতু বাচ্চাকে সমাজে চলার উপযোগী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে। শিক্ষা, জ্ঞান ও অনুভূতির জগতকে দিয়েছে পূর্ণতা ও অবলম্বন। 

আজ আমাদের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। নিজের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।

আমি জিপিএ-৫ পেয়েছি। আমাদের জন্য যে শিক্ষকেরা দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের পাশাপাশি বাবা-মা ও শুভাকাঙ্ক্ষিদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আমি আজ সত্যিই গর্বিত। এই অনুভূতি অতুলনীয়।  

লেখাপড়ায় আমার আগ্রহ মোটামুটি পর্যায়ের। ছাত্রী হিসেবেও আমি এতোটা ভালো ছিলাম না। বই পড়ার প্রতি আমার আগ্রহ অনেক। কিন্তু অবশ্যই ক্লাসের বই না। আমি এমনিতেই একটু দুরন্ত প্রকৃতির। ‘পড়াশুনায় ফাঁকি দেয়ার ১০১ উপায়’ শিরোনামে বই লিখতে পারতাম ছয় মাস আগেও। কিন্তু বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছিমা আক্তারের অনুপ্রেরণায় একটি ক্লাসে তার কথাগুলো আমাকে একদম যেনো নাড়িয়ে দিলো।  

আমার পড়াশুনার অভিভাবক মিতা বসাক আমাকে দিলো অনেক অনুপ্রেরণা। আমি বুঝতে পারলাম আমার জীবনের লক্ষ্য কী? আর সেই লক্ষ্যকে মুঠোয় আনতে হলে যা করতে হবে তাও আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেলো। তা হলো, ভালোভাবে পড়াশোনা। খুব মন দিয়ে পড়াশুনা শুরু করলাম। আমার বাবা-মায়ের অভিযোগ, আমি পড়াশোনায় মনোযোগী না। তার পেছনে আমার ভাইয়ের প্রধান যুক্তি, আমার সহ-পাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমে অধিক ঝোঁক। আমি গার্লস গাইডের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলাম। লেখাপড়ায় ভালো ফলাফল না হওয়ায় আমার নাম কাটাতে হয়েছিল এ সংগঠন থেকে। কিন্তু পড়াশুনায় মনোযোগী হওয়ার পরও নিজের লক্ষ্যে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হওয়ার পর বুঝতে পারলাম যে, নিজের লেখাপড়া ঠিক রেখে চেষ্টা করলে সবকিছুই চালিয়ে যাওয়া যায়।  

কাজেই একসাথে চলতে থাকলো আমার গার্লস গাইডিং, গিটার আর লক্ষ্যের সাধনা। খুব ভালো প্রস্তুতি ও আত্মপ্রত্যয় নিয়ে পরীক্ষাও দিলাম। কিন্তু আমার মনোবল নাড়িয়ে দিলো ‘প্রশ্নফাঁস। ’ তখন আমার শিক্ষক, অভিভাবক, বন্ধু-সবাই আমার কাঁধে হাত রাখলো। নিজেকে বুঝালাম, আমি পারবো। তার ফল হলো আমার জিপিএ-৫। আমি সত্যিই আনন্দিত। কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই সেই সব মানুষকে যারা আমার এ প্রচেষ্টায় আমার সঙ্গে ছিলো প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে। ধন্যবাদ জানাই মহান সৃষ্টিকর্তাকে। যিনি আমার মনোবল ধরে রাখতে সাহায্য করেছেন।  

আমার ভবিষ্যত লক্ষ্য জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করা এবং আমাদের দেশের মানুষের জন্য ভালো কিছু করা। সবার কাছ থেকে আশীর্বাদ প্রার্থনা করি। সবাই যেনো এভাবেই আমাকে প্রেরণা যুগিয়ে যায় চিরকাল।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৭

** একজন আদর্শ মানুষ হতে চাই​
** মা শুধু বলতেন ‘পড়তে বসো’
** ছোটবেলা থেকেই আমি ডাক্তার হতে চাই
** এ সফলতা আমার চেয়ে অনেক বেশি মায়ের
** পরিকল্পনা পূরণের জন্য মনোবলই প্রধান

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।