ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

বিনোদন

বীরাঙ্গনা আর সমাজ বাস্তবতার সিনেমা ‘মায়া-দ্য লস্ট মাদার’

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯
বীরাঙ্গনা আর সমাজ বাস্তবতার সিনেমা ‘মায়া-দ্য লস্ট মাদার’

ঢাকা: চলতি বছরের শেষ সিনেমা ‘মায়া- দ্য লস্ট মাদার’। মাসুদ পথিক পরিচালিত সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর)। প্রথমধাপে সিনেমাটি দেশব্যাপী আটটি প্রেক্ষাগৃহে দেখা যাচ্ছে।

প্রেক্ষাগৃহগুলো হচ্ছে- ঢাকার বলাকা, শ্যামলী সিনেমা, যমুনা ব্লকবাস্টার, নারায়ণগঞ্জের সিনেস্কোপ, সিলেটের বিজিপি সিনেমা হল, খুলনার লিবার্টি, বগুড়ার সোনিয়া ও চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিন।

শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের চিত্রকর্ম ‘ওমেন’এবং কবি কামাল চৌধুরীর ‘যুদ্ধশিশু’ কবিতা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ‘মায়া- দ্য লস্ট মাদার’।

এর গল্পে দেখা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনারা এদেশের নারীদের ওপর যে পাশবিক-অমানুষিক নির্যাতন করেছেন, তা একটি বীরাঙ্গনা চরিত্রে মধ্য দিয়ে নির্মাতা তুলে ধরেছেন এই সিনেমায়। একজন বীরাঙ্গনার জীবন, সংসার  এবং তার অতীতের বিভিন্ন দিক ‘মায়া’তে উঠে এসেছে।  বীরাঙ্গনার বড় সন্তান একজন যুদ্ধশিশু, যে নিঁখোজ- মায়ের খোঁজে আছে সে। তার ছোট মেয়ে মায়া।  মা বীরাঙ্গনা হওয়ায় সংসার ভেঙ্গে যায় মায়ার। মায়ের সংসারই মায়া ও তার দুই সন্তানের সংসার।  বাড়িতে আশ্রিত আছে আরেক যুদ্ধশিশু, যার সঙ্গে মায়ার প্রেম।  

এদিকে গ্রামের চেয়ারম্যান, ইমাম সকলের নজর মায়ার শরীরে। এসবের মধ্যেই চলতে থাকে মায়ার জীবন সংগ্রাম। কৃষিকাজ করে সংসার চালায় মায়া। হালচাষ, পশুপালন থেকে শুরু করে ঘরের কাজ সবই সামলায় মায়া।  সমাজের কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় না দিয়ে একঘরে হয়ে আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচে আর নিজের যুদ্ধ চালিয়ে যায় মায়া। তবুও একদিন সমাজের অন্যায়-নিপীড়নের শিকার হয়ে প্রাণ হারায় সন্তানসম্ভবা মায়া। এককথায়, একজন বীরাঙ্গনার জীবনের করুণ গল্পের মধ্য দিয়ে বাংলার রূপবৈচিত্র্য, প্রেম ও সমাজ বাস্তবতার চালচিত্র তুলে ধরা হয়েছে ‘মায়া’তে।
‌‘মায়া- দ্য লস্ট মাদার’ ছবির একটি দৃশ্যে প্রাণ রায় ও জ্যোতিকা জ্যোতিসরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন, মুমতাজ সরকার (ভারত), প্রাণ রায়, জ্যোতিকা জ্যোতি, দেবাশিষ কায়সার, সৈয়দ হাসান ইমাম, ঝুনা চৌধুরী, নারগিস আক্তার, লীনা ফেরদৌসী, ড. শাহাদাত হোসেন নিপু, আসলাম সানী ও মজিদ প্রমুখ।

ব্রাত্য ক্রিয়েশন প্রযোজিত এই সিনেমাটিতে গান করেছেন- ইমন চৌধুরী, বেলাল খান, কোনাল, ঐশী, পুজা ও মমতাজ।
২০১৬ সালে ‘মায়া- দ্য লস্ট মাদার’ নির্মাণের জন্য সরকারি অনুদান পায়। সে বছরই সিনেমাটির কাজ শুরু হয়। এর কাজ সম্পন্ন করতে সময় লেগেছে তিন বছর। অবশেষে ৩ ডিসেম্বর ২ ঘণ্টা ৩ মিনিট ৭ সেকেন্ডের সিনেমাটি সেন্সর বোর্ডের সনদ পায়।

‘নেকাব্বরের মহাপ্রায়াণ’ খ্যাত নির্মাতা মাসুদ পথিকের এটি দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা। বীরাঙ্গনা ও যুদ্ধশিশুদের সত্য গল্প নিয়ে এই প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা নির্মিত হলো বাংলাদেশে। সিনেমাটিতে নতুন বাংলা, বাংলা মাকে পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা মাসুদ পথিক।

বাংলাদেশ সময়: ০৪০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯
ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।