ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

একজন হুমায়ূন সাধু

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৯
একজন হুমায়ূন সাধু হুমায়ূন সাধু। ছবি: রাজীন চৌধুরী

হুমায়ূন কবীর সাধু, যিনি হুমায়ূন সাধু নামেই পরিচিত। একজন বাংলাদেশি চলচ্চিত্র অভিনেতা, নাট্য পরিচালক ও লেখক।

সাধুর জন্ম বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলায়। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রামেই।

৯ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সপ্তম। মা মরিয়ম বেগম ছিলেন তার জীবনের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।
 
প্রকৃতির খেয়ালে সাধুর শারীরক গঠন স্বাভাবিক ছিল না। তিনি অন্যদের চেয়ে কিছুটা খর্বাকৃতির ছিলেন। এজন্য তার বাবা স্কুলে পাঠাতে আগ্রহী ছিলেন না। বড় বোনের কাছেই প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন সাধু। পরে বড় বোন তাকে রঙ্গিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠান। কিন্তু বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাকে নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন।

সাধুর বড় ভাই সাইফুল কবীর তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তিনি আবার হুমায়ূনকে সেই স্কুলে নিয়ে যান এবং প্রথম সাময়িক পরীক্ষা পর্যন্ত তাকে সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেন। সাধু দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১৩০ জন ছেলে-মেয়েকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অধিকার করে উত্তীর্ণ হন। সহপাঠীরা তখন সাধুকে কাঁধে নিয়ে উল্লাস করে। তার পরিবারও মিষ্টি কিনে খাইয়েছিল পাড়ার লোকদের।

এসএসসি পাসের পর স্থানীয় একটি কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন সাধু। এরপর প্রচুর পরিমাণ চলচ্চিত্র দেখার নেশায় এইচএসসির রেজাল্ট তেমন ভালো হয়নি। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে ভর্তি হন। ঢাকার বিভিন্ন রেলস্টেশনে, বাসস্টেশনে ঠিকানাহীনভাবে কিছুকাল কাটে তার।  

এরপর চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সঙ্গে পরিচয় এবং পরবর্তীতে তার সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন, যাত্রা করেন অভিনয়শিল্পী হিসেবেও।  

হুমায়ূন সাধু অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- মেড ইন বাংলাদেশ, বিউটি সার্কাস, সাত ভাই চম্পা, চোরাবালি। এছাড়া ‘ঊন মানুষ’ নামে একটি টেলিফিল্মে অভিনয় করেন তিনি। তার পরিচালিত নাটক হলো- চিকন পিনের চার্জার ও দরশন।  

এছাড়াও রয়েছে তার নাটক সিরিজ- বেঁচে থাকার জন্য আমি, পাখি পাকা পেপে খায়। তার টেলিফিল্ম- সিজোফ্রেনিয়া ও অ-মানুষিক। শর্টফিল্ম- গড ভার্সেস গড ও গুঞ্জন। প্রথম চলচ্চিত্র হোমো-সেপিয়েন্স (অসমাপ্ত)।  

হুমায়ূন সাধুর প্রযোজনায় ‘আমার ঘরে বিরাজ করে লালনগীতি’ নামে একটি সংগীত অ্যালবাম অ্যামাজন থেকে বের হয়। লেখক হিসেবে প্রকাশ পায় তার গল্পের বই ‘ননাই’।  

২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর হুমায়ূন সাধু মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে ঘরে ফেরেন তিনি। পরবর্তীতে ২০ অক্টোবর রাতে আবারও তিনি একই সমস্যা নিয়ে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়।

ব্রেইন স্ট্রোকের কারণে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হুমায়ূন সাধু বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৯ 
জেআইএম/এমকেআর/ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।