ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

ঢাকায় বসলো দুই বাংলার তারকামেলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৯
ঢাকায় বসলো দুই বাংলার তারকামেলা

প্রতীক্ষিত ‘ভারত বাংলাদেশ ফিল্মস অ্যাওয়ার্ড’ (বিবিএফএ) অনুষ্ঠানের জমকালো আয়োজনে ঢাকায় বসেছে দুই বাংলার তারকাদের মিলনমেলা। 

সোমবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে আয়োজিত জাঁকালো এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, দেশের বৃহৎতম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক ও নিউজ টোয়েন্টিফোরের সিইও নঈম নিজাম, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, গান বাংলা টেলিভিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও টিএম ফিল্মসের চেয়ারম্যান ফারজানা মুন্নি, এটিএন বাংলা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান, চিত্রনায়ক আলমগীর, চিত্রনায়িকা সারাহ বেগম কবরী প্রমুখ।

বিবিএফএ’তে উপস্থিত সম্মানিত অতিথিরা

বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত দিয়ে ‘ভারত বাংলাদেশ ফিল্মস অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠান শুরু।

এরপর ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার (এফএফআই) তত্ত্বাবধানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এরপর এফএফআই’র সভাপতি ফেরদৌসুল হাসান উদ্বোধনী ভাষণ দেন।

দুই বাংলার চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাঁকজমকপূর্ণ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান বিবিএফএ। বাংলার চলচ্চিত্রজগতকে অনন্য প্রেরণায় উৎসাহিত করা এবং বিশ্বদরবারে একে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এ আয়োজনের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশের বসুন্ধরা গ্রুপ ও ভারতের ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া।  

>>>জনপ্রিয় নায়ক শাকিব-জিৎ, নায়িকা ঋতুপর্ণা-জয়া

অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিবিএফএ’র আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সীমারেখা দুই বাংলার অভিন্ন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বিভাজন করতে পারে না। আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি এক। কিন্তু আমাদের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের একটু অভাব ছিল। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতি চর্চা উৎসাহিত হবে। চলচ্চিত্র মানুষের মননের বিকাশ করে। যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন, তাদেরও প্রেরণা দিতে পারে চলচ্চিত্র। আমি এই আয়োজনের সাফল্য কামনা করছি।  

সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করছেন দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন

এ অ্যাওয়ার্ডে বাংলাদেশ ও ভারতের পক্ষ থেকে জুরি কমিটিতে ছিলেন পাঁচজন করে মোট দশজন বিশেষজ্ঞ। বাংলাদেশ থেকে জুরি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন- আলমগীর, সারাহ বেগম কবরী, ইমদাদুল হক মিলন, খোরশেদ আলম খসরু ও হাসিবুর রেজা কল্লোল। আর ভারত থেকে-গৌতম ঘোষ, ব্রাত্য বসু, গৌতম ভট্টাচার্য, অঞ্জন বোস ও তনুশ্রী চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে তাদের সবাইকে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান উত্তরীয় পরিয়ে ও ক্রেস্ট দিয়ে সম্মানিত করেন।

পুরস্কারের এই আসরে চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখায় বাংলাদেশের কিংবদন্তি অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগম ও ভারতের কিংবদন্তি অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।

আজীবন সম্মাননা হাতে নেওয়ার পর আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘এ ধরণের একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপসহ সকল আয়োজকদের ধন্যবাদ। দুই বাংলা মিলিয়ে এতো এতো তারকা থাকতে আমাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হবে এটা আমি কখনো ভাবিনি। সৃষ্টিকর্তার কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা। ’

শক্তিমান অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক বলেন, ‘বাইশ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন। তাদেরই এ আয়োজন প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ আয়োজন যেন ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারে। যৌথভাবে সিনেমা নির্মাণের যে প্রয়াস চলছে, তা যেন আরও বেগবান হয়। আরেকটা কথা না বললেই নয়, আমি পৃথিবীর বহু দেশে ঘুরেছি, কিন্তু বাংলাদেশে আসলে যে আতিথেয়তা পাই তা পৃথিবীর আর কোথাও পাই না। ’

প্রথম বিবিএফএ আয়োজনে বাংলাদেশি তারকাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা ওমর সানী, সিয়াম আহমেদ, নিরব হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মামনুন ইমন, অভিনেত্রী মৌসুমী, জয়া আহসান, বিদ্যা সিনহা মিম, নুসরাত ফারিয়া, পরীমনি ও পূজা চেরিসহ অনেকে।

ভারতের বাংলা সিনেমার তারকাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, জিৎ, আবির চ্যাটার্জি, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা ঘোষ, তনুশ্রী, পাওলি দাম, নির্মাতা গৌতম ঘোষ, সৃজিত মুখার্জি প্রমুখ।

উপস্থাপনায় ছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় সঞ্চালক শাহরিয়ার নাজিম জয়, শান্তা জাহান এবং ওপার বাংলার জনপ্রিয় উপস্থাপক মীর আফসার আলী ও গার্গি রায় চৌধুরী। ২৪টি বিভাগে শিল্পী-কুশলীদেরও পুরস্কৃত করা হয়। এ ক্ষেত্রে বিচার্য ২০১৮ সালের জুন থেকে চলতি বছরের (২০১৯) জুন পর্যন্ত ভারত ও বাংলাদেশে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো।

এতোদিন হলিউড, বলিউড ও দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমায় এমন আড়ম্বরপূর্ণ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান দেখা গেলেও বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এতো বড় আয়োজন এই প্রথম।  

বাংলাদেশ সময়: ২২৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৯
জেআইএম/এমকেআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।