ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বিনোদন

হংকং বিক্ষোভ: চীনের পক্ষে অবস্থান নিলেন জ্যাকি চ্যান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৯
হংকং বিক্ষোভ: চীনের পক্ষে অবস্থান নিলেন জ্যাকি চ্যান

ঢাকা: নিজের মাতৃভূমি হংকংয়ে চলমান বিক্ষোভ নিয়ে এবারে মুখ খুলেছেন বিশ্বনন্দিত বলিউড অভিনেতা ও কুংফু মাস্টার জ্যাকি চ্যান। এ বিক্ষোভকে ‘মর্মঘাতী’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।

চলতি মাসের প্রথম দিকে একদল বিক্ষোভকারী হংকংয়ের ভিক্টোরিয়া হার্বার এলাকায় চীনা পতাকা নামিয়ে সমুদ্রে ছুড়ে ফেলে এবং একই জায়গায় ‘হংকংয়ের স্বাধীনতা’ লেখা একটি পতাকা ওড়ায়।

ওই ঘটনায় চীনজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

এর পরপরই ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনসংযোগ শুরু করে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভি। সে সময় জ্যাকি চ্যান ওই ক্যাম্পেইনে শামিল হন।

‘পাঁচ তারা লাল পতাকার ১৪০ কোটি পাহারাদার’ নামে ক্যাম্পেইনটি শুরু করে সিসিটিভি। ১৪০ কোটি পাহারাদার বলতে চীনের মোট জনসংখ্যাকে বোঝানো হয়। তখন জ্যাকি চ্যানও নিজেকে ওই পাহারাদারদের একজন বলে দাবি করেন।

সিসিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই ঘটনাকে জাতীয় পতাকার ‘অমর্যাদা’ হিসেবে উল্লেখ করেন জ্যাকি চ্যান।

এ সুপারস্টার বলেন, একদিকে, আমাকে হংকং ও চীন উভয়ের জন্যই দেশপ্রেম প্রকাশ করতে হবে। আমি জাতীয় পতাকার একজন পাহারাদার। অন্যদিকে, এ ক্যাম্পেইনে আমার শামিল হওয়া আমাদের সম্মিলিত কণ্ঠস্বরকে প্রকাশ করে বলেও আমি মনে করি।

‘হংকং আমার জন্মভূমি। চীন আমার দেশ। আমি আমার দেশকে ভালোবাসি, আমার জন্মভূমিকেও ভালোবাসি। আমি বিশ্বাস করি খুব শিগগির হংকংয়ে শান্তি ফিরে আসবে। ’

এদিকে, ওই পতাকা ‘অমর্যাদার’ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতারের ব্যাপারে তথ্য দিলে এক লাখ ২৭ হাজার মার্কিন ডলার (প্রায় এক কোটি ছয় লাখ টাকা) পুরস্কার দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন হংকংয়ের সাবেক প্রধান নির্বাহী।

হংকং চীনের আধা-স্বায়ত্তশাসিত একটি ভূ-খণ্ড। গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে কেন্দ্রের কাছে (চীন) অপরাধী প্রত্যর্পণ বিষয়ক একটি বিতর্কিত আইন নিয়ে এখানে বিক্ষোভ চলছে। এর মাঝে ওই আইন স্থগিত করা হলেও আন্দোলন থামেনি। বরং দিনে দিন এটি বিভিন্ন মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ছে।

এরই জেরে গত কয়েক দিন ধরে হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থান নিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের সঙ্গে এ নিয়ে তাদের দফায় দফায় সহিংসতারও সৃষ্টি হয়।

বেইজিং এ বিক্ষোভকারীদের মোট জনগোষ্ঠীর খুবই সামান্য একটি অংশ বলে উল্লেখ করেছে। এসব বিক্ষোভকারীকে শাস্তি দেওয়া হবে বলেও সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়।

এরই মাঝে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। অন্যদিকে, চীন নিজেদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে অন্য কাউকে ‘নাক না গলানোর’ আহ্বান জানিয়ে আসছে।

অপরাধী প্রত্যর্পণ আইন অনুযায়ী চীন যদি চায় সন্দেহভাজন অপরাধীদের নিজ ভূখণ্ডে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে পারবে। আইনে বলা হয়েছে, বেইজিং, ম্যাকাও ও তাইওয়ান থেকে পালিয়ে আসা কোনো অপরাধীকে ফেরত চাইলে তাকে ফেরত দিতে হবে।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে হংকংয়ের এক তরুণ তাইওয়ানে এক নারীকে হত্যা করে হংকংয়ে চলে আসেন পালিয়ে। তখন তরুণকে বিচারের মুখোমুখি করতে তাইওয়ান ফেরত চাইলে হংকং আইনি জটিলতার কথা বলে। এ প্রেক্ষাপটে প্রত্যর্পণ আইনটি হংকংয়ের নিজস্ব আইনে প্রণীত করার প্রস্তাব আসে।

সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত হংকং ১৯৭৭ সালে চীনের অধীনে ফেরার পর থেকে ‘এক রাষ্ট্র দুই নীতি’র অধীনে পরিচালিত। যদিও গত দুই দশক ধরে অপরাধী প্রত্যর্পণ বিষয় নিয়ে চীনা সরকারের সঙ্গে কড়াকড়ি চলছে অঞ্চলটির।

আরও পড়ুন>> বিক্ষোভের মুখে হংকং বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট বাতিল

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৯
এইচজে/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।