ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন

নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, ইসি ছিল কঠোর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫
নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, ইসি ছিল কঠোর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ

ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছেন, কিছু কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া পৌরসভার নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কঠোর নজরদারি ও সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করায় তেমনকোনো অঘটন ঘটেনি।



বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
 
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, কমিশন প্রথম থেকেই সচেতন ছিলো, যেন কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়। কিন্তু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। অনিয়মের কারণে ৫০টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ ও নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমরা অনিয়মের কারণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। শেষ রাত নাগাদ সব ফলাফল পেয়ে যাবো।
 
তিনি বলেন, ইসি সার্বক্ষণিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে। গণমাধ্যমও ব্যাপক সহায়তা করেছে। খবর আমলে নিয়ে ইসি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে। এরপর রাজনৈতিক দলগুলো কিছু অভিযোগ করেছে। সেগুলো আমলে নিয়ে বেশ কিছু ভেরিফাই করে ব্যবস্থা নিয়েছি।

নির্বাচন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ন্ত্রণে ছিলো কি-না- এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, এটা প্রথম থেকেই বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, আমরা অসহায়। এখানে অসহায়ত্বের কিছু নেই। একটা নির্বাচন সবার সহযোগিতা নিয়েই সম্পন্ন করতে হয়।
 
‘কিন্তু আপনি হারলে আপিল করতে পারেন। ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করা যাবে। সেখানে হারলে এরপরও আপিল করা যাবে। এরপরও ন্যায়বিচার না পেলে হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এরপরও মারামারি হয়। আশা করি, ভবিষতে সুষ্ঠু ট্র্যাডিশন গড়ে উঠবে। তখন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়াই সুষ্ঠু নির্বাচনে সক্ষম হবো’।
 
সিইসি বলেন, নিজের অবস্থান প্রথম থেকেই বলে এসছি। আমরা নিজেদের যোগ্য কর্মকর্তা নিয়োগ দেইনি এ কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের যোগ্য সকলকেই নিয়োগ করেছি। এরপরও অনিয়মের অভিযোগে রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মতর্তাকে সরিয়ে দিয়েছি। আমরা পিছপা’ হইনি, হবোও না।
 
নির্বাচন নিয়ে কতোটুকু সন্তুষ্ট সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কাজ আমরা করছি। ইটস মাই জব, উই আর ডুইয়িং। আমাদের জব আমরা করছি। এর মূল্যায়ন আপনারা করবেন।
 
আগের তুলনায় পৌরসভা নির্বাচনে সহিংসতা কমে এসেছে-যোগ করেন সিইসি।

৫০ কেন্দ্র স্থগিত
সিইসি বলেন, নির্বাচনে ১৯টি পৌরসভার মোট ৫০টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে পরবর্তীতে ভোটগ্রহণের সময় নির্ধারণ করা হবে।
 
স্থগিত কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে বড়ুরা পৌরসভার শিরমুড়ী উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্র, চন্দনাইশ পৌরসভার গাছবাড়িয়া এনজে উচ্চ বিদ্যালয়, আলফাতুন চৌধুরী ফোরকানিয়া মাদ্রাসা ও উত্তর গাছবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, কালকিনি পৌরসভার কাষ্টঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ জনারদ্বন্দ্বি সরকারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভালুকার দক্ষিণ ভালুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চৌহমুহনী পৌরসভার উত্তর নাজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর নাজিরপুর নুরানি মাদ্রাসা, দক্ষিণ নাজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য করিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য করিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (পূর্ব পাশের ভবন), গণিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (পুরনো ভবন), চৌমুহনী সরকারি এসএ কলেজ (নতুন ভবন), উত্তর হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, জামালপুর সদর পৌরসভার বানিয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয়, ছনকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছনকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বগাবাইদ আজাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, কালিয়া পৌরসভার পূর্ব কালিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুয়াকাটা পৌরসভার পানজুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরিষাবাড়ী পৌরসভার বাঙালিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নগরকান্দা পৌরসভার নগরকান্দা মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা (ইসলামিয়া মাদ্রাসা), উলিপুর পৌরসভার নারিকেলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (উত্তর ভবন) ও উলিপুর মদিনাতুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা, মতলব পৌলসভার মুন্সিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়, শরিয়তপুর পৌরসভার দক্ষিণ আটং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বরগুনা পৌরসভার গগন মেমোরিয়াল হাইস্কুল, বেতাগী পৌরসভার পূর্ব বেতাগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সৈয়দপুর পৌরসভার গোলাহাট রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়, ফ্রি-আমিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নয়াটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ঠাকুরগাঁও সরকারি মহিলা কলেজ, গোবিন্দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কেন্দ্র ও যশোর পৌরসভায় এমএম কলেজ কলাভবন কেন্দ্র স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া মাধবদী পৌরসভার ১২টির সব কটির ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছে ইসি।
 
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ, মো. শাহ নেওয়াজ, ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান, যুগ্ম সচিব জেসমিন টুলী ও জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫
ইইউডি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।