ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

তামাকপণ্যে খুচরামূল্যের ভিত্তিতে কর বাড়ানোর প্রস্তাব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১২ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৯
তামাকপণ্যে খুচরামূল্যের ভিত্তিতে কর বাড়ানোর প্রস্তাব ‘কেমন তামাক কর চাই’ শীর্ষক প্রাক বাজেট সংবাদ সম্মেলন/ ছবি- শাকিল

ঢাকা: দেশে তিন কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। যেখানে ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২ কোটি ২০ লাখ। আবার পুরুষের তুলনায় নারীদের মধ্যে তামাক পণ্যের ব্যবহার দিনদিন বেড়েই চলেছে। অনুপাত হারে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমলেও সংখ্যার ভিত্তিতে বাড়ছে ব্যবহারকারীর সংখ্যা।

এ অবস্থার উত্তরণে সব ধরনের তামাকপণ্যে খুচরামূল্যের ভিত্তিতে কর হার বাড়ানো গেলে তামাক পণ্যের ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমানো সম্ভব বলে মত দিয়েছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা।  

শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) প্রজ্ঞা ও অ্যান্টি তামাক মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা) আয়োজিত ‘কেমন তামাক কর চাই’ শীর্ষক প্রাক বাজেট সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তারা।

প্রাক বাজেট সংবাদ সম্মেলনে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, আমাদের আয়ের তুলনায় সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধি না হওয়ায় পকেটে চাপ পড়ছে না। এর ফলে কমানো যাচ্ছে না ধূমপায়ীর সংখ্যা। অনুপাত হারে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমলেও সংখ্যা কম না। আমাদের এখন তামাকের বিরুদ্ধে জোর প্রচারণার পাশাপাশি দরকার তামাকের বিকল্প চাষ। যার মাধ্যমে কৃষক আরও লাভবান হতে পারেন। এজন্য কৃষকদের আরও সচেতন করতে হবে এবং তামাকের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরতে হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, তামাকের প্রভাবে সরকারের স্বাস্থ্যখাতে যে খরচ হয় সেটাও দেখতে হবে। সমৃদ্ধ জাতি গঠনে আমাদের এখন জনস্বাস্থ্যের দিকেই বেশি নজর দিতে হবে। পাশাপাশি সব তামাক পণ্যে ২৫ শতাংশ ভ্যাট রাখতে হবে। একইসঙ্গে করপোরেট কর হার কমানো যাবে না।

বিআইডিএসর পরিচালক ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, যেকেউ জেনে-শুনে বিষপান করবে, আর আমরা তাকে তা হতে দিতে পারি না। যারা ধূমপায়ী তারা হয়তো সহজে ছাড়তে পারবে না, কিন্তু যারা এখনও ধূমপান করেন না, তাদেরতো এর হাত থেকে বাঁচাতে পারি। এজন্য সিগারেটে উচ্চ কর হার রাখতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশে অতি উচ্চবৃত্তের (২৪ শতাংশ) তুলনায় নিম্নবৃত্তের (৪৮ শতাংশ) মানুষের মধ্যে তামাকপণ্য ব্যবহারের উচ্চ প্রবণতা রয়েছে। একই সঙ্গে পুরুষের (১৬ শতাংশ) তুলনায় এখন ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার নারীদের (২৪ দশমিক ৮ শতাংশ) মধ্যে বেড়েছে। আবার ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের মধ্যে তামাকের ব্যবহার আগের তুলনায় ৯ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে।

এসময় বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশের মধ্যে ছিলো- তামাকপণ্য এবং ব্র্যান্ডের মধ্যে সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য ব্যবধান কমানো, করারোপ সহজ করতে তামাকপণ্যের মধ্যে বিদ্যমান বিভাজন (ফিল্টার/নন ফিল্টার সিগারেট/গুল/জর্দা ইত্যাদি) তুলে দিতে হবে। কর ফাঁকির শাস্তিমূলক জরিমানা, কঠোর লাইসেন্সসহ স্বাস্থ্য উন্নয়নে সারচার্জ দুই শতাংশ বৃদ্ধি করা ইত্যাদি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আয়োজিত প্রাক বাজেট সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মাহফুজ কবির। এসময় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৯
ইএআর/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।