ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

চলতি বছরে মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৩ মেট্রিক টন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০১৯
চলতি বছরে মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৩ মেট্রিক টন সরিষা ক্ষেতের পাশে রাখা মৌমাছির বাক্স। ছবি: সুজন খণ্দকার

মানিকগঞ্জ: চলতি মৌসুমে মানিকগঞ্জে ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে সরিষার। আবাদকৃত এসব সরিষার ফুল থেকে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত এখন মৌমাছি খামারিরা। অল্প সময়ে অধিক মুনাফা হওয়ায় প্রতিবছরই সংখ্যা বাড়ছে মৌমাছি খামারিদের। 

জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলাতেই রয়েছে মৌমাছি খামারিরা। তবে দৌলতপুর, শিবালয়, ঘিওর এবং মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় মৌমাছি খামারির সংখ্যা বেশি।

ছোট বড় মিলে মানিকগঞ্জে এবার ৪০ জন খামারি রয়েছে। এসব খামারিদের কাছ থেকে এবার মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৩ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক বাজারদর প্রায় আড়াই কোটি টাকা।  

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নওখণ্ডা এলাকার খামারি মামুন হোসেন জানান, প্রায় এক যুগ ধরে মানিকগঞ্জের ওই এলাকা থেকে মধু সংগ্রহ করেন তিনি। চলতি মৌসুমে নওখণ্ডা এলাকায় ২০০টি মধু সংগ্রহের বাক্স রয়েছে তার। সপ্তাহে একবার ওই বাক্সগুলোর প্রতিটি থেকে গড়ে প্রায় ৪ কেজি করে মধু সংগ্রহ করেন তিনি।  

মধু সংগ্রহ করে বাক্সের ভেতরে যাচ্ছে মৌমাছিরা।  ছবি: খণ্দকার সুজনবছরের প্রায় ছয় মাস মধু সংগ্রহে ব্যস্ত থাকেন তিনি। মানিকগঞ্জের সরিষা মৌসুম ছাড়াও ফরিদপুরে কালোজিরা এবং নাটোর ও দিনাজপুরে লিচু মৌসুমে মধু সংগ্রহ করেন তিনি। এতে করে অন্যান্য পেশার মতো বেশ ভাল রয়েছেন বলে জানান মৌমাছি খামারি মামুন হোসেন।  

ঘিওর এলাকার খামারি আফতাব হোসেন জানান, আবহাওয়া ভাল মানে রোদ বেশি থাকলে মধু সংগ্রহ হয় বেশি। আর আবহাওয়া কুয়াশাচ্ছন্ন থাকলে মধু সংগ্রহ কম হয়। এবার আবহাওয়া বেশ ভাল। কুয়াশাও কম। যে কারণে মধু উৎপাদন অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার বেশি হবে বলে জানান তিনি।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকার মৌমাছি খামারিদের সঙ্গে আলাপ হলে বাংলানিউজকে তারা জানান, মধু সংগ্রহের জন্য সরিষা ক্ষেতের আশপাশের নিরাপদ জায়গায় বাক্সগুলো বিছিয়ে রাখা হয়। প্রতিটি বাক্সেই একটি করে রাণী মৌমাছি রয়েছে। প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার ডিম দেয় ওই রানী মৌমাছি। ১৩ দিন পর ওই ডিম থেকে মৌমাছির বাচ্চা বের হয়। এরপর মোট ২৬ দিন তারা সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে বাক্সে সঞ্চয় করে। সেখান থেকেই সপ্তাহে একবার করে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছি খামারিরা। ৩৯ দিন বয়স হলে মারা যায় মধু সংগ্রহকারী এসব সাধারণ মৌমাছি।

সরিষা ক্ষেতের পাশে রাখা মৌমাছির বাক্স।  ছবি: সুজন খণ্দকারসরিষার ফুল থেকে সংগ্রহকৃত এসব মধুর চাহিদাও বেশ। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকায় বিক্রি হলেও খুচরা গ্রাহকদের প্রতি কেজির জন্য গুণতে হচ্ছে ৪০০ টাকা করে। খুচরা বিক্রির অবশিষ্ট অংশ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত পাইকার-ক্রেতারা খামারিদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে যান বলেও জানান খামারিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাবিবুর রহমান চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে ৪০ জন খামারি সরিষার জমি থেকে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন। গত বছর মানিকগঞ্জে ৪৫.২ মেট্রিক টন মধু উৎপাদন হলেও এবার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৩ মেট্রিক টন। প্রতি কেজি মধু গড়ে ৩০০ টাকা করে বিক্রি হলেও প্রায় আড়াই কোটি টাকার মধু এবার মানিকগঞ্জে উৎপাদন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৯
কেএসএইচ/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।