ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

হলফনামায় উল্লেখিত সম্পদ খতিয়ে দেখতে হবে: মোস্তাফিজুর রহমান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩
হলফনামায় উল্লেখিত সম্পদ খতিয়ে দেখতে হবে: মোস্তাফিজুর রহমান

ঢাকা: রাজনীতিবিদদের ওপর মানুষের বিশ্বাস ফেরাতে হলফনামায় উল্লেখিত সম্পদ খতিয়ে দেখার তাগিদ দিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, সরকার দলীয় এমপি যাদের সম্পদ বেড়েছে, সরকার ও দলের উদ্যোগে এগুলো বিশ্লেষণ করা দরকার।

কীভাবে সম্পদ বৃদ্ধি হলো তাদের কাছে জানতে চাওয়া দরকার। মানুষ যাতে বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার হয়।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) কনভার্সেশন উইথ প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এক কোটি টাকার জমির দাম দেখানো হয়েছে এক লাখ। এটা দেখে আমরা আশ্চর্য হয়েছি। দেশে দুর্নীতি দমন কমিশন আছে, আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা আছে—এটা নিয়ে তাদের কাজ করা দরকার। দেখতে হবে এই সম্পদ বৃদ্ধি যৌক্তিকভাবে হয়েছে নাকি অযৌক্তিকভাবে হয়েছে। এটার সমাধান করতে হবে। রাজনীতিকদের ওপর যদি দেশের মানুষের সন্দেহ থাকে, যদি অবিশ্বাস থাকে তাহলে নির্বাচিত হওয়ার পর তারা মানুষকে কীভাবে পরিচালিত করবে, এমন একটি বিশ্বাস থেকে যাবে।

২০২৪ সালে দেশে দুর্ভিক্ষ হতে পারে—প্রধানমন্ত্রীর এমন আশঙ্কা সম্পর্কে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওনার কাছে তথ্য থাকতে পারে। কিন্তু আমরা যেটা দেখি, আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, দেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। আমাদের যে ফসল ফলেছে, যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য মজুদ আছে, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে খাদ্য আমদানি করা যাচ্ছে। সেদিক থেকে দুর্ভিক্ষ হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

খাদ্যের অভাবে দুর্ভিক্ষ হয় না, দুর্ভিক্ষ হয় বণ্টন সমস্যার কারণে—নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. অমর্ত সেনকে উদ্ধৃত করে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের বড় একটি অংশের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। উৎপাদন যদি ভালো থাকে, ক্রয়ক্ষমতা যদি সমস্যা হয় তাহলে খাদ্যাভাব দেখা দিতে পারে। খাদ্যাভাব দূর করার জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি আছে। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে কমে যাওয়া ক্রয়ক্ষমতাকে সামাল দিতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির স্থায়িত্বের পাশাপাশি এর পরিধি বৃদ্ধি করতে হবে।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অর্জন করা একটি দেশের ভাগ্য বিদেশিরা নির্ধারণ করবে, এটা কারোই কাম্য নয়। অন্য একটি দেশ আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে এটা কারোই কাম্য হতে পারে না। আমাদের সমস্যা আমাদেরই সমাধান করতে হবে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক যে চিত্র, আমাদের কাছে বিভিন্ন দেশের স্বার্থ থাকতে পারে। আমরা সেটা ততটুকু গুরুত্ব দেব যতটুকু আমাদের প্রয়োজন।

আমরা তো ভারসাম্য রেখে চলেছি। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বড় বিনিয়োগকারী, বাংলাদেশে চীন বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে; ভারত আমাদের ঐতিহাসিক বন্ধু দেশ; রাশিয়া বাংলাদেশে পারমাণবিক স্টেশন করছে। আমরা তো ভারসাম্যের মধ্যে আছি। আগমীতেও আমাদের নিজেদের কথা চিন্তা করে চলতে হবে। বিভিন্ন চাপ থাকবে, জনগণকে সাথে নিয়ে সরকার সামনের দিকে এগিয়ে যাবে, বলেন এই অর্থনীতিবিদ।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ইআরএফের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

বাংলাদেশ সময় ১৬৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩
জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।