ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

৩১৮ বছরের গাছটিতে ফল ধরেছে!

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৪ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২২
৩১৮ বছরের গাছটিতে ফল ধরেছে! রাঙামাটির ৩১৮ বছরের চাপালিশ গাছ। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: গাছটির বয়স ২০২০ সালে ছিল ৩১৬ বছর। সেই হিসাবে এখন গাছটির বয়স ৩১৮ বছর।

১০৩ ফুট দীর্ঘ, ২৫ ফুট পরিধির বিশাল আকারের গাছটিতে ফল ধরেছে। ছোট্ট কাঁঠালের মতো দেখতে সেই ফল।
যা খেতে আসছে নানা প্রজাতির পাখি। পাখির কিচিরমিচির শব্দ পর্যটকদের মন ভালো করে দিচ্ছে।  
 
বলছিলাম রাঙামাটির ডিসি পার্কের (বাংলো) শতবর্ষী চাপালিশ গাছটির কথা। দূরদূরান্ত থেকে পর্যটক ও বৃক্ষপ্রেমীরা গাছটি দেখতে প্রতিদিনই আসেন। বিশেষ করে পলওয়েল পার্ক, লাভ পয়েন্ট দেখতে আসা অনেক পর্যটক ক্ষণিকের জন্য হলেও ছবি তুলতে আসেন এ গাছটির সঙ্গে। বিস্মিত চোখে তারা দেখতে থাকেন গাছটি। যে গাছ দেখেছে কর্ণফুলী নদী থেকে কাপ্তাই হ্রদের সৃষ্টির রহস্য। দেখেছে হ্রদ পাহাড়ের অপরূপ রাঙামাটি কালের বিবর্তনে আধুনিক রাঙামাটি হওয়ার ।  

সরেজমিন দেখা গেছে, গাছটিতে এখনো ঝুলছে ‘বার্থ সার্টিফিকেট’ খ্যাত ২০২০ সালে লাগানো ফেস্টুনটি। বাংলা ও ইংরেজিতে তিনটি তথ্য দেওয়া আছে- বয়স, দৈর্ঘ্য আর পরিধি। গাছটির ইতিহাস, বয়স গণনার উদ্যোগকাল জানার মতো কোনো পরিচিতি ফলক এখনো নেই। কারা এটি সংরক্ষণে মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন তাদের সম্পর্কেও কিছু জানা গেল না। গাছটির বড় বড় ডালে গজিয়েছে পরগাছা, অর্কিড। একটি বড় ডাল ছুঁই ছুঁই করছে হ্রদের পানি।  

স্থানীয় লোকজন শুধু জানেন, গাছটি দাদার দাদার আমলের। কয়েক বছর পর পর ফল ধরে। মানুষও টক মিষ্টি এ ফলটি খেয়ে থাকে। তবে গাছ উঁচু হওয়ায় সেই সুযোগ কম। মূলত পশুপাখিই চাপালিশ ফল খায়। কালের সাক্ষী হয়ে টিকে থাকা চাপালিশ গাছটির কিছু শেকড় বেরিয়ে গেছে। মাটি ক্ষয় হওয়ায় এ অবস্থা। গাছের গোড়ার কাছেই ছোট্ট সেমিপাকা দোকান, পাশে পাকা স্থাপনা। অনেকটা ঝুঁকিতে আছে গাছটি, শঙ্কা আছে হ্রদে হেলে পড়ারও।

রাঙামাটি উত্তর বন বিভাগের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, একসময় পার্বত্য জেলাগুলোতে প্রচুর চাপালিশ গাছ ছিল। এখনো টিকে আছে বেশ কিছু। রাঙামাটির ডিসির বাংলো এলাকার শতবর্ষী চাপালিশ গাছটি পর্যটকরা দেখতে আসেন। বন বিভাগের উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে চাপালিশ গাছের চারা রোপণ করা হচ্ছে।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শতবর্ষী গাছটি সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বেষ্টনী তৈরিসহ উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে। প্রাচীন এ গাছটি নিরাপদে রাখতে সচেষ্ট রয়েছি আমরা। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়, বজ্রপাতসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গাছটির যেন ক্ষতি না হয় সেটিই আমাদের প্রার্থনা।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৭ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২২
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।