ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নগরে অবাধে চলছে লক্কর-ঝক্কর গাড়ি 

সৈয়দ বাইজিদ ইমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২২
নগরে অবাধে চলছে লক্কর-ঝক্কর গাড়ি  ...

চট্টগ্রাম: শনিবার রাত সাড়ে নয়টা। নগরের আগ্রাবাদ বিদ্যুৎ অফিসের সামনে হঠাৎ থেমে গেল গাড়ি।

চলছে যাত্রী আর হেলপারের মধ্যে কথা-কাটাকাটি। যাত্রীরা হেলপারকে মারধর করতে উদ্ধত হয়েছেন।
কারণ লক্কর-ঝক্কর গাড়ির যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে গেছে।  

একইদিন বিকেলে নগরের লালখান বাজার এলাকায় আহনাফি পরিবহন নামের ১০ নম্বর রুটের গাড়িটি বিকল হয়ে যায়। গাড়ি থেকে যাত্রী ও হেলপার নেমে গাড়ি ধাক্কা দিতে দেখা গেছে। গাড়িটি প্রধান সড়ক থেকে নিয়ে যাওয়া হয় এক পাশে।

নগরে প্রায় প্রতিদিনের চিত্র এমনই। লক্কর-ঝক্কর গাড়ি নিয়ে বের হয়ে মাঝপথে থেমে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে গাড়ির যন্ত্রাংশ। ঘটছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। অনেক সময় যাত্রীদের হেঁটে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা।

বিআরটিএ’র ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযান সত্ত্বেও নগরের বিভিন্ন রাস্তায় অবাধে চলছে ফিটনেসবিহীন ও লাইন্সেসবিহীন এসব গাড়ি। রাস্তায় বের হলেই চোখে পড়ে এ ধরনের যানবাহন। অভিযানে এসব গাড়ি চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকলেও আবারও রং লাগিয়ে সড়কে নামানো হচ্ছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়কে চলাচল করলে আটক ও জরিমানাও করছে পুলিশ। এরপরও থামছে না তাদের দৌরাত্ম্য। ফলে যাত্রীরা নিরুপায় হয়ে ঝুঁকি নিয়ে এসব গাড়িতে চড়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।  

নগরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, আগ্রাবাদ, বহদ্দারহাট, কোতোয়ালী, ষোলশহর ২ নম্বর গেইট থেকে চকবাজার, কোতোয়ালী থেকে নতুন ব্রিজ, দেওয়ানহাট থেকে অলংকার এবং নয়া বাজার বিশ্বরোডে চলছে লক্কর-ঝক্কর গাড়ি। যেগুলোর কোন ফিটনেস নেই, নেই কোন লাইসেন্সও। গাড়ির পেছনের নাম্বার প্লেটও নেই।  

যাত্রীরা বলছেন, ভুয়া লাইসেন্সধারী চালকরা অবাধে গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামছে। চলছে উল্টোপথেও। রুটপারমিট ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির কারণে নিত্য ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। চালকের লাইসেন্স আছে কি নেই তা যাচাই করার জন্য পুলিশ আর ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে। ড্রাইভারদের যদি লাইসেন্স না থাকে তাহলে আমরা থাকি বিপদে। ড্রাইভাররা টাকা দিয়ে লাইসেন্স কিনে নেয়।  

সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু বাংলানিউজকে বলেন, একদিকে প্রশাসনের যেমন তদারকি রয়েছে অন্যদিকে আবার সুযোগও রয়েছে। তাই এসব গাড়ি চলাচল বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।  

বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার মোক্তার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি। রুট পারমিট, লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন, হেলমেট, যানবাহন বীমা, গাড়িতে অনুমোদিত সিট সংখ্যার চেয়ে অতিরিক্ত সিট এবং হাইড্রোলিক হর্নের জন্য জরিমানা প্রদান করছি। সেইসাথে চালকদের সচেতন করে দিই, যাতে পরবর্তীতে তারা সতর্ক হয়। যেসব গাড়ি জরাজীর্ণ সেসব গাড়ি জব্দ করে ডাম্পিং এ পাঠিয়ে দিচ্ছি।  

বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ বলছে, লাইসেন্স নিয়ে বর্তমানে কোনও ভোগান্তি পেতে হয় না। অনলাইন বা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে সহজেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে পরীক্ষার্থীরা। তার কিছুদিনের মধ্যেই পেয়ে যাচ্ছে লাইসেন্স। লক্কর-ঝক্কর গাড়িগুলোর বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে।  

ম্যাজিস্ট্রেট একিমিত্র চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। এরপরেও লক্কর-ঝক্কর গাড়ি শহরের বিভিন্ন স্থানে চলাচল করার খবর আমাদের কাছে রয়েছে। আমি শিগগিরই সেসব স্থানে অভিযান পরিচালনা করবো৷ গাড়ির মালিকদেরও এসব গাড়িগুলোর বিষয়ে সতর্ক হতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, ৬ মার্চ, ২০২২
বিই/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।