ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কোটি টাকায় প্রস্তুত হাসপাতাল চার মাসেই বন্ধ

মিনার মিজান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০
কোটি টাকায় প্রস্তুত হাসপাতাল চার মাসেই বন্ধ হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল

চট্টগ্রাম: করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য নতুন উদ্যমে হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল চালুর চার মাসের মাথায় এলো বন্ধের ঘোষণা। প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা নগরের জাকির হোসেন সড়কের হালি ক্রিসেন্ট হাসপাতালটি যাচাই বাছাই শেষে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বন্ধ করার কথা রয়েছে।

হাসপাতালটি চালুর শুরু থেকে ব্যবস্থাপনা নিয়ে চোখে পড়েছে সমন্বয়হীনতা।  

গত জুনে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ইউনিট-২ হিসেবে চালু করা হয় হাসপাতালটি।

চার মাস হলেও মোট কত জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন হাসপাতালটিতে এর কোনো সঠিক তথ্য নেই কর্তৃপক্ষের কাছে।  

এই নিয়ে হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালের দায়িত্বরত সহকারী পরিচালক ডা. মনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কাছে কোনো তথ্য সংরক্ষিত নেই। আমরা প্রতিদিনের তথ্য জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছে দিই। সেখানেই হলি ক্রিসেন্ট সম্পর্কিত সব তথ্য পাওয়া যাবে।  

জেনারেল হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এ হাসপাতাল জেনারেল হাসপাতালের ইউনিট-২ হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছে। বেশ কিছু দিন ধরে তেমন কোনো রোগী নেই হাসপাতালটিতে। তাই কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেওয়ার কথা চিন্তা করছে। তা ছাড়া এই হাসপাতালের আলাদা কোনো ফান্ড নেই। জেনারেল হাসপাতালের বাজেট থেকে হলি ক্রিসেন্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। গত চার মাসে এই হাসপাতালের পেছনে আনুমানিক ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।  

এখন পর্যন্ত কতজন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন জানতে চাইলে এ ব্যপারে সঠিক তথ্য নেই জানিয়ে তিনি হাসপাতালের দায়িত্বরত পরিসংখ্যানবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান।  

জেনারেল হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত তথ্য রয়েছে বলে জানান। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে হাসপাতালটিতে মাত্র ১ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। ৬ আগস্ট পর্যন্ত এ হাসপাতালে রোগী ভর্তি ছিল ৯২ জন। এদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়েছেন ৫৯ জন, অন্য হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়েছে ১০ জন, মারা গেছেন ১০ জন এবং পলাতক রোগী সংখ্যা ১৩ জন।  

পরবর্তী এক মাসের তথ্য হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালে পাওয়া যাবে বলে জানান এ পরিসংখ্যানবিদ। হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালে পুনরায় যোগাযোগ করলে সেখানেও এর সঠিক তথ্য মেলেনি।  

হাসপাতাল বন্ধের বিষয়ে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শারিয়ার কবীর বাংলানিউজকে বলেন, রোগীর সংখ্যা কম তাই আমরা হাসপাতালটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এর আগে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করা হবে। কারণ রোগী না থাকলে প্রতিমাসে সরকার কেন হাসপাতলের পেছনে ব্যয় করবে। তা ছাড়া সরকারি যেসব হাসপাতাল রয়েছে সব চালু রয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে কতজন রোগী আছে, এখন পর্যন্ত কতজন চিকিৎসা নিয়েছে এসব তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।    

এর আগে পরিত্যক্ত হাসপাতালটি সংস্কার শুরুর পর থেকে বিভিন্ন কারণে আলোচনায় ছিল। করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলো চিকিৎসা না দিয়ে ক্লিনিকটি ৩ কোটি টাকায় সংস্কার করে বেসরকারি হাসপাতাল মালিক সমিতি। সংস্কারের পর জনবল সংকটে এ হাসপাতাল চালু নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। পরে চালু করা হলে রোগীদের খাবারের ব্যবস্থা না থাকায় একাধিকবার খবরের শিরোনাম হয়েছে হাসপাতালটি। এ ছাড়া হাসপাতালের ১০টি আইসিইউ শয্যা থাকলেও ইসিজি মেশিন না থাকায় আইসিইউ সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪  ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০
এমএম/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।