ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ত্রাণ উপহার নিয়ে যারা হাত বাড়িয়েছেন তারা মহৎ: নাছির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০২ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২০
ত্রাণ উপহার নিয়ে যারা হাত বাড়িয়েছেন তারা মহৎ: নাছির ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা অনেকেই কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন উল্লেখ করে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, সেখানকার অবস্থা আমাদের চেয়েও খারাপ। সে অবস্থায়ও দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসার টানে যারা ত্রাণ উপহার দেওয়ার জন্য হাত বাড়িয়েছেন সত্যিকার অর্থে তারা অনেক মহৎ।

দুর্যোগ মহামারীতে যারা মানবিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসেন তারাই শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে বিবেচিত হন।

তিনি বলেন, প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি।

তাদের পরিশ্রমের টাকায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রবাসীরাই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রক্ত সঞ্চালন করে যাচ্ছেন।
দেশের উন্নয়নে তাদের অবদান অপরিসীম। এই দুর্যোগকালীন সময়ে জুন মাসে রেমিটেন্স আদায়ের হার ছিল সর্বোচ্চ। প্রবাসী বাংলাদেশিরা সারাবিশ্বে মেধা ও মানবিকতার স্বাক্ষর রাখছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এক কোটিরও বেশি প্রবাসী রয়েছেন, তারা তাদের শ্রম আর মেধার স্বাক্ষর রাখতে পারছেন বলেই সেখানে তারা সাফল্যের সঙ্গে থাকতে পারছে।

শনিবার (১১ জুলাই) নগরের চান্দগাঁও খাজা রোডের নাসির মোহাম্মদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে চট্টগ্রাম সমিতি উত্তর আমেরিকার উদ্যোগে গৃহহীন হতদরিদ্র ও এতিমদের খাদ্য সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ‘সামাজিক দূরত্ব’ নিশ্চিতকল্পে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে করোনা মোকাবেলায় আমরা সবাই একযোগে কাজ করছি। বিভিন্ন নিয়মনীতি অনুসরণ ও ছুটি থাকার দরুন অনেক দরিদ্র লোকের পক্ষে খাবার জোগাড় করা কষ্টসাধ্য হচ্ছে।   সরকার তাদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণসহ যথাসম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করছে। পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনায় ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দুস্থদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণে আমেরিকা-চট্টগ্রাম সমিতি এগিয়ে আসায় আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।

খাদ্যসামগ্রী বিতরণকালে নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, চট্টগ্রাম সমিতি উত্তর আমেরিকার উপদেষ্টা কমরুদ্দিন আহমদ, মুজিবুদ্দৌলা চৌধুরী, গোলাম রব্বানী, সভাপতি আবদুল হাই, সহ সভাপতি খোকন কে চৌধুরী, মোহাম্মদ আলী, এনাম চৌধুরী, সামসুল আলম চৌধুরী, মাসুদ হোসেন সিরাজী, মতিউর রহমান, আশরাফ আলী খান লিটন, মহিউদ্দিন লাবু, জাফর শফি, শফিউল আজম সিকদার, পরিমল কান্তি চৌধুরী, সাহাব উদ্দিন চৌধুরী লিটন,  তারেক ইকবাল চৌধুরী, ফয়সাল বাপ্পী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শহীদ করোনা যোদ্ধাদের দোয়া মাহফিল

মেয়র বলেছেন, যারা মরণঘাতী করোনাকালে প্রতিরোধ যুদ্ধে হারিয়ে গেছেন তারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তবে এই দুর্যোগের মধ্যেও সমাজ ও সভ্যতাবিরোধী নষ্ট মানুষের কালো কারবার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে একটি জনযুদ্ধ শুরু হওয়া সময়ের দাবি। কারণ এরা সমাজ-সভ্যতার অশুভবোধের বিপরীত কলঙ্কের চিহ্ন। এ চিহ্নকে নির্মূল করতেই হবে। যারা ভয়কে জয় করে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের প্রতি জাতির সহস্র সালাম।

ছবি: বাংলানিউজবিকেলে দারুল ফজল মার্কেটের চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ড কার্যালয়ে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কামান্ডের উদ্যোগে করোনায় (কোভিড- ১৯) আক্রান্ত এ সময়ের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য ও প্রসাশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্মরণে আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও স্মরণসভায় মেয়র এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-দল-মত নির্বিশেষে করোনা যুদ্ধে আমরা অভিন্ন যৌথ বাহিনী। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুধু দখলদারিত্বের জন্য হলেও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলো মানব, প্রাণী-প্রকৃতি, জগৎ রক্ষায়। সম্মিলিত সহযোগে এই যুদ্ধে সব প্রাণী-প্রকৃতি একাকার। এই যুদ্ধ ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির জন্য নয়, প্রাণী-প্রকৃতির জগতে সাম্য প্রতিষ্ঠার। তাই আমরা কেউ-ই নিরাপদ নয় জেনে শুধু প্রাণ রক্ষার জন্য নয়, বিশ্ব সামাজিক সাম্য-নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লড়াইয়ের যোদ্ধা।

তিনি করোনার আগ্রাসনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের রুহের শান্তি কামনা করে বলেন, আল্লাহ’র রহমত আছে বলেই যতক্ষণ প্রাণশক্তি আছে জীবন বাঁচিয়ে জীবিকার জন্য লড়াই করবো। ভিক্ষা ও ত্রাণ কখনো জীবনের জন্য অপরিহার্য ও দীর্ঘস্থায়ী নয় এবং তা সাময়িক। এই বোধ আমাদের ভেঙে না পড়ার উজ্জীবন শক্তি। যারা জীবন বিলিয়ে করোনাকাল মোকাবেলা করেছেন তারা জাতীয় বীর এবং তাদের পথ অনুসরণ করি আমরা।

মহানগর মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান, ডেপুটি কমান্ডার শহিদুল হক চৌধুরী সৈয়দ, সহকারী কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, কোতোয়ালী থানা কমান্ডার  বীরমুক্তিযোদ্ধা সৌরেন্দ্রনাথ সেন, চান্দগাঁও থানা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, পাঁচলাইশ থানা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আহমদ মিয়া, বন্দর থানা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা কামরুল আলম, আকবরশাহ থানা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ নুর উদ্দিন, ডেপুটি কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সেলিম উল্লাহ, হালিশহর থানা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল হোসেন, পাহাড়তলী থানা কমান্ডার  মুক্তিযোদ্ধা হাজি জাফর আহমদ, খুলশী থানা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউসুফ, বাকলিয়া থানা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউসুফ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাক্ষী কাজী নুরুল আবছার, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের পক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক ও শাহেদ মুরাদ সাকু প্রমুখ।

কমান্ডার মোজাফফর আহমদ করোনাকালে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন  সাহসের সঙ্গে যে ভূমিকা পালন করেছেন এজন্য অভিনন্দন জানান।

এ ছাড়া ইতোমধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি নির্মাণ করে তাদের স্থায়ী বাসস্থানের যে ব্যবস্থা করেছেন তার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান।    
                                   
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২০
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।