ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

একাত্তরে চট্টগ্রামজুড়ে গণহত্যা

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯
একাত্তরে চট্টগ্রামজুড়ে গণহত্যা পাহাড়তলী বধ্যভূমি।

চট্টগ্রাম: পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার আনসারীর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ চট্টগ্রামে গণহত্যা শুরু হয়। দক্ষিণ পতেঙ্গা, হালিশহর গোডাউন, পাহাড়তলী, শেরশাহ্ হাউজিং, মেডিক্যাল কলেজ, দক্ষিণ কাট্টলী নাথপাড়া, চট্টগ্রাম বন্দর এলাকাসহ প্রায় ১১৫টি স্থানে প্রায় ৩ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়।

একাত্তরের বর্বরতার প্রথম সাক্ষী চট্টগ্রাম সেনানিবাস। এখানে প্রায় ২৫০০ নিরস্ত্র বাঙালি সৈনিককে হত্যা করা হয় একাত্তরের প্রথম প্রহরে।

আশপাশের এলাকা থেকে লোকজনকে এখানে এনে হত্যা করা হয়।

চট্টগ্রাম বন্দরের ১৭ নম্বর জেটিতে ২৭ মার্চ প্রায় ১১২ জন নিরস্ত্র বাঙালি সৈনিককে সোয়াত জাহাজে নিয়ে এসে পাক বাহিনী হত্যা করে।

৩১ মার্চ হালিশহরের নাথপাড়ায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী স্থানীয় অবাঙালিদের সহায়তায় ৩৯ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। হত্যা করা হয় নাথপাড়ায় আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৪০ জন ইপিআর সদস্যকে।

চট্টগ্রাম কমার্স কলেজের বিকম শ্রেণির ছাত্র দুলাল ও তার সহোদর চট্টগ্রাম কলেজের অনার্সের ছাত্র বাদলকে হত্যা করা হয়েছে কুপিয়ে। ছেলের রক্ত দিয়ে স্নান করানো হয় মা নিরুবালা দেবীকে। হত্যা করা হয় দুলাল ও বাদলের বাবা হরিপদ নাথ ও ঠাকুরদা ক্ষিরোদ বাঁশি নাথকে। হালিশহর সিভিল সাপ্লাই গোডাউনের অভ্যন্তরে পাক বাহিনী চালু করেছিল নির্যাতন কেন্দ্র। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এখানে সাতজন তরুণীসহ ৩৮টি মরদেহ পাওয়া যায়।

হালিশহরের নাথপাড়া বধ্যভূমি। প্রবর্তক সংঘের পাহাড়ে বীরেন্দ্রলাল চৌধুরীসহ বিপুলসংখ্যক হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকজন ও সাধারণ মানুষকে এনে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়। চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনে প্রতিদিন রাতে বিভিন্ন জায়গা থেকে ৫-৬টি ট্রাক এসে ফেলে যেত মরদেহ। সেখানে প্রায় ৮ হাজার নাম না জানা শহীদের মরদেহ পাওয়া যায়।

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে উচ্চপদস্থ পাক সেনা কর্মকর্তারা বানিয়েছিল নারী নির্যাতন কেন্দ্র। এছাড়া হাজারো নিরপরাধ মানুষকে এখানে হত্যা করা হয়। ইলেকট্রিক চেয়ারে নির্যাতনের পর চট্টগ্রাম কলেজের দর্শন বিভাগের শিক্ষক অবনী মোহন দত্তকেও এখানে হত্যা করা হয়। হত্যার পর মরদেহ নিয়ে ফেলা হতো পাহাড়তলী ও গরিবউল্লাহ শাহ্ মাজার বধ্যভূমিতে। কর্ণফুলীর মোহনায় পড়েছিল শত শত মানুষের পচা দেহ।

পাহাড়তলী বধ্যভূমিতে ১৯৭১ সালের ১০ নভেম্বর প্রায় ৪০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। দোহাজারী ট্রেনের যাত্রীসহ ১০ হাজারেরও অধিক বাঙালিকে হত্যা করে এ বধ্যভূমিতে মরদেহ ফেলা হয়। এখানে স্থানীয় মাস্টার লেইন, পাঞ্জাবি লেইন (বর্তমানে শহীদ লেইন), গোয়ানিজ কোয়ার্টার, ঝাউতলা, সরাইপাড়া এলাকার লোকজনও শহীদ হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।