ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চেয়েছি বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আবার যুদ্ধ হোক: মিনার মনসুর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১৯
চেয়েছি বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আবার যুদ্ধ হোক: মিনার মনসুর ‘আমার আজব ঘোড়া’ বইয়ের পাঠ ও মোড়ক উন্মোচন করেন কবি স্বপন দত্ত। ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: আমরা চেয়েছিলাম বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আরেকটা যুদ্ধ হোক, যাতে অামি অংশ নেব। ছোট থাকায় একাত্তরের যুদ্ধে যেতে পারিনি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রথম বই বের করি আমরা। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলি। কলমকে যুদ্ধের হাতিয়ার বানাই। ১৯৮৩ সালে আমার বই বাজেয়াপ্ত হয়।

রোববার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যায় নগরের মেহেদিবাগের 'বিস্তার: আর্ট কমপ্লেক্স চট্টগ্রাম'র পরম্পরা মিলনায়তনে 'আমার আজব ঘোড়া' বইয়ের পাঠ উন্মোচন ও প্রকাশনা অনুষ্ঠানে কবি মিনার মনসুর এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কবি-সাংবাদিক স্বপন দত্ত।

তিনি বইটির পাঠ ও মোড়ক উন্মোচন করেন।

আলোচকের বক্তব্যে কবি খালেদ হামিদী বলেন, কবি মিনার মনসুরের 'আমার আজব ঘোড়া' বই কাব্যেত্তীর্ণ হয়েছে।

আমি মুগ্ধ হয়েছি পাতায়, পাতায়। দেশের পত্রপত্রিকায় ২৫-৩০ বছরের কবিতায় মিনার মনসুরের কবিতার মতো আমি ইতিহাসের পরিভ্রমণ পাইনি। আমি বিস্মিতভাবে লক্ষ্য করেছি, কবিতায় কবির জীবন অভিজ্ঞতা।

স্বাগত বক্তব্য দেন বিস্তার ট্রাস্টের সম্পাদক কবি ও অনুবাদক আলম খোরশেদ।

‘আমার আজব ঘোড়া’ বইয়ের পাঠ ও মোড়ক উন্মোচন করেন কবি স্বপন দত্ত।  ছবি: উজ্জ্বল ধর

তিনি বলেন, কবি মিনার মনসুর এ জনপদের ভূমিপুত্র। অভিমানি। ফিনিক্স পাখির মতো ডানা মেলেছেন তিনি। কবিতায় অনেক দিন ধরে লেগে আছেন। ১৬ বছর বয়স থেকে গদ্য কবিতা লিখছেন। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে তার ১৮ বছরে লেখা কবিতা শুনে আমি বিস্মিত হয়েছি। তার বইটি বাঁক বদলের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

উপস্থিত ছিলেন ইতিহাসের খসড়া সম্পাদক মুহাম্মদ শামসুল হক, কবি ড. আবদুল ওয়াজেদ, আরণ্যক টিটো প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে 'ওহে সুন্দর মরি মরি' রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী মাহিয়া আবরার।

শৈশবের স্মৃতিচারণ করে মিনার মনসুর বলেন, ১৯৭০ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে। তখন আমার বন্ধু মাইনুল খালি গলায় রবীন্দ্রসংগীত গাইছিল যা আমাকে সংক্রমিত করেছিল। সেই থেকে রবীন্দ্রসংগীত আমার প্রিয়। 'তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে' গানের রচয়িতা আবদুল্লাহ আল মামুন আমার সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময়কার একটি কবিতা ছেপেছিল। ১৯৭৩ সালে আমার প্রথম কবিতা লিখি। তবে আমার কবিজীবন ১৯৭৫ সালের পর থেকে। আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সময় আসি মহসিন কলেজে পড়ছিলাম। এ ঘটনা আমাকে প্রচণ্ড বিক্ষুব্ধ করে। একটি গ্রুপ প্রতিবাদের চেষ্টা করছিল। লিফলেট বিলি করছিলাম রমজানে তারাবির নামাজের সময়। আমরা 'এফিটাপ' নামে একটি পত্রিকা বের করি।

তিনি বলেন, এক পরীক্ষায় শিক্ষককে দেখলাম এক প্রভাবশালী পরিবারের ছাত্রকে উত্তর বলে দিচ্ছেন। তখন রেগে গিয়ে পরীক্ষার খাতায় 'হায়রে দুর্ভাগ্যের দেশ' কবিতাটি লিখেছিলাম। এটি আমার প্রথম অপ্রকাশিত কবিতা।

আমি লিফলেট রচয়িতা ছিলাম। প্রার্থীদের প্রচারপত্র লিখেছি। বর্তমান মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের কলেজ ইলেকশনের প্রচারপত্র লিখেছি। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলাম। রাজনীতিতে অনেক সময় দিয়েছি। কিন্তু আমি একা হয়ে যাই। শুধু খাওয়ার জন্য নানা রকম কাজ করতে হয়েছে। ষাট ছুঁই ছুঁই বয়স আমার। শৃঙ্খল ছিঁড়ে স্বাধীন হতে চাই, স্বাধীন মানুষ হিসেবে মরতে চাই। যোগ করেন কবি মিনার মনসুর।

কথাপ্রকাশ থেকে গত ফেব্রুয়ারিতে ৪৬টি কবিতা নিয়ে প্রকাশিত বইটি উৎসর্গ করেছেন 'কবিতামগ্ন চিত্রকর' ভারতের আরম্ভ পত্রিকার সম্পাদক বাহারউদ্দিনকে। শিল্পী সুনীল দাসের চিত্রকর্ম অবলম্বনে বইটির প্রচ্ছদ করেছেন সোহেল আশরাফ। ৫৬ পৃষ্ঠার বইটির দাম ১০০ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৮
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।