ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে জনবল সংকট, ১২২৫ পদই খালি

জমির উদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে জনবল সংকট, ১২২৫ পদই খালি সিআরবি রেলওয়ে কার্যালয়

চট্টগ্রাম: এক লাইন থেকে আরেক লাইনে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করে দেওয়া রেলের পয়েন্টম্যানের কাজ। ট্র্যাক (রেললাইন) পরিবর্তন করতে হলে তারাই সেটা করে দেন। তারা ক্লিয়ারেন্স দিলেই চালক ট্রেন চালাতে পারেন।

মাঠ পর্যায়ে যারা ট্রেন পরিচালনা করেন, তাদের অর্ধেক পদই খালি রয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল এর পরিবহন বিভাগে। ফলে স্বাভাবিক ট্রেন পরিচালনা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এতে কমে যাচ্ছে রেলের আয়। ঠিক সময়ে স্টেশনে ট্রেন না পৌঁছানোয় যাত্রীরাও পড়ছেন চরম ভোগান্তিতে।

স্টেশন মাস্টার (এসএম), সহকারী স্টেশন মাস্টার (এএসএম), পয়েন্টম্যান, গেটম্যান ও সান্টিংম্যানের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোই বেশি খালি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে জনবল নিয়োগ না হওয়ায় খেসারত দিতে হচ্ছে রেলওয়েকে।

২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বশেষ তথ্যমতে, দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত মোট জনবল থাকার কথা ২ হাজার ৫৩৭ জন। এরমধ্যে কর্মরত আছেন এক হাজার ৩১২জন। বাকি এক হাজার ২২৫ জনের পদই খালি রয়েছে।

দ্বিতীয় শ্রেণির সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা (এএও), রেলওয়ের প্রধান ট্রেন নিয়ন্ত্রক (সিটিএনএল), সুপারিনটেনডেন্ট(এসএস) ও রেলওয়ে ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) পদে মোট জনবলের সংখ্যা ১৭। এরমধ্যে এসএস পদে একজন ও টিআই পদে চারজনসহ মোট পাঁচজনের পদ খালি রয়েছে।

তৃতীয় শ্রেণির এসএম, এএসএম’র মতো গুরুত্বপূর্ণ পদসহ মোট পদের সংখ্যা ৩০ (গ্রেডসহ)। এসব পদে জনবল থাকার কথা এক হাজার ২৯৫ জন। কিন্তু এরমধ্যে কর্মরত আছেন ৭৩৯ জন। বাকি ৫৫৬টি পদ খালি রয়েছে।

স্টেশন মাস্টারের (গ্রেড-২, ৩ ও ৪) ৪২৮টি পদের বিপরীতে খালি আছে ২১৫টি। সহকারী স্টেশন মাস্টার (এএসএম) পদে ২২০ জনের বিপরীতে খালি আছে ৯২টি।

চতুর্থ শ্রেণির পয়েন্টম্যান, গেটম্যান ও সান্টিংম্যানসহ ৯টি পদে জনবল থাকার কথা এক হাজার ২২৫ জন। কিন্তু আছে ৫৬১ জন। বাকি ৬৬৪টি পদই খালি রয়েছে।

এরমধ্যে পয়েন্টম্যান পদে ৭৫০ জনের বিপরীতে খালি আছে ২৯৩, গেটম্যান পদে ২৪২ জনের বিপরীতে খালি আছে ২১৫ ও সান্টিংম্যান পদে ১১৬ জনের বিপরীতে খালি আছে ৯৯টি পদ।

একটি স্টেশনের সার্বিক দায়িত্ব স্টেশন মাস্টারের (এসএম)। স্টেশনের অন্য কর্মচারীরা তার অধীনে কাজ করেন। সান্টিংম্যানের কাজ, একটি বগির (কোচ) সঙ্গে আরেকটি বগি সংযুক্ত করা এবং কোনো বগির ত্রুটি থাকলে তা অন্য লাইনে সরিয়ে নিয়ে নতুন বগি সংযুক্ত করা। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে লেভেল ক্রসিংগুলো নিয়ন্ত্রণ করা গেটম্যানের কাজ। এসব লোকবল ছাড়া ট্রেন পরিচালনা করা যায় না।

জনবলের অভাবে ট্র্রেন পরিচালনায় নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শুধু স্টেশন মাস্টারের অভাবে রেলের পূর্বাঞ্চলে ১০৭টি স্টেশনের মধ্যে বন্ধ স্টেশনের সংখ্যা স্থায়ী ও অস্থায়ীসহ ৩৩টি। এরমধ্যে ঢাকার ১৯টি স্থায়ী ও একটি অস্থায়ী এবং চট্টগ্রামের ১২টি স্থায়ী ও একটি অস্থায়ী।

বিষয়টি স্বীকার করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা রশিদা সুলতানা গণি বাংলানিউজকে বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনের তুলনায় কর্মী অনেক কম। ফলে ট্রেন পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে। জনবল সংকটের কারণে ট্রেন যেখানে ৫ ঘণ্টায় পৌঁছার কথা সেখানে দেরিতে পৌঁছছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯
জেইউ/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।