ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

৪ দিনে ২৩৯২ আবেদন চট্টগ্রামের বিআরটিএতে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০১৮
৪ দিনে ২৩৯২ আবেদন চট্টগ্রামের বিআরটিএতে বিআরটিএর ফিটনেস সনদ নিতে আনা গাড়ি। ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও ট্রাফিক সপ্তাহের কারণে যানবাহনের কাগজপত্র নিতে ভিড় বেড়েছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিএরটিএ) চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে। ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফিটনেস সার্টিফিকেটসহ কাগজপত্র নিতে বিআরটিএ অফিসে ভিড় করছেন যানবাহনের চালক-মালিকরা।

বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, রোববার (০৫ আগস্ট) থেকে বুধবার (০৮ আগস্ট) পর্যন্ত চার দিনেই বিআরটিএ অফিসে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ১২৩২টি এবং ফিটনেস সার্টিফিকেটের জন্য ১১৬০টিসহ ২৩৯২টি আবেদন জমা পড়েছে।

এর মধ্যে রোববার (০৫ আগস্ট) গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেটের জন্য ৯১টি ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের (শিক্ষানবিশ) জন্য ১১৫টি আবেদন জমা পড়ে।

সোমবার (০৬ আগস্ট) গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেটের জন্য ৩২৬টি ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের (শিক্ষানবিশ) জন্য ৩০২টি আবেদন জমা পড়ে।

মঙ্গলবার (০৭ আগস্ট) গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেটের জন্য ৩৮৩টি ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের (শিক্ষানবিশ) জন্য ৩৮৫টি আবেদন জমা পড়ে।

সর্বশেষ বুধবার (০৮ আগস্ট) গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেটের জন্য ৩৬০টি এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সের (শিক্ষানবিশ) জন্য ৪৩০টি আবেদন জমা পড়েছে।

বিআরটিএ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগে যেখানে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য দৈনিক ৮০-১০০টি ও ফিটনেস সার্টিফিকেটের জন্য ২০০-২৫০টি আবেদন জমা পড়তো সেখানে এখন ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য দৈনিক ৩০০-৪৫০টি ও ফিটনেস সার্টিফিকেটের জন্য ৩৫০-৪০০টি আবেদন জমা পড়ছে।

বুধবার (০৮ আগস্ট) দুপুরে বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে দেখা গেছে, ফিটনেস ও লাইসেন্স শাখায় যানবাহন চালক ও মালিকের উপচে পড়া ভিড়। ফিটনেস পরীক্ষার জন্য আনা বাস, ট্রাক, লরি, হাইস, প্রাইভেট কার, সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন বিআরটিএ মাঠ পেরিয়ে চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়কের দুপাশে অবস্থান নেয়।

বিআরটিএর মাঠ পেরিয়ে সড়কের দুই পাশে রাখা হয়েছে ফিটনেস সনদ নিতে আনা গাড়ি।  ছবি: উজ্জ্বল ধরদীর্ঘ লাইন ছিল বিআরটিএ কার্যালয়ের ব্র্যাক ব্যাংকের শাখায়ও। ৫টি বুথে বিআরটিএর বিভিন্ন ফি এ শাখায় জমা নেওয়া হলেও সেখানে একেকজনকে টাকা জমা দিতে ২-৩ ঘণ্টার বেশি অপেক্ষা করতে হয়েছে। তীব্র গরম উপেক্ষা করে লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা জমা দেন যানবাহন চালক ও মালিকরা।

তাদেরই একজন মাঈনুল ইসলাম শিমুল। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে এসেছি। সকাল ৯টায় এসেছি। বেলা ১টা পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ করতে পারিনি।

আবেদন ও টাকা জমা নেওয়ার বুথ বাড়াতে বিআরটিএকে তাগিদ দেন তিনি।

বাসচালক হাশমত আলী বাংলানিউজকে বলেন, কাগজপত্র ঠিক থাকলেই কিংবা গাড়ি ভালোভাবে চালালেই দুর্ঘটনা কমে আসবে না। এ জন্য পথচারীদেরও সচেতন হতে হবে। সড়ক পারাপারের নিয়ম মানতে হবে।

তিনি বলেন, ভিড় বেশি হওয়ায় কাগজপত্র নিতে একটু কষ্ট হচ্ছে। দালাল টাইপের একজন এসেছিলেন, ১ হাজার টাকা বাড়তি দিয়ে কাজ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে। তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি। কষ্ট হলেও নিজের কাজ নিজেই করেছি।

বিআরটিএ চট্টগ্রাম মেট্রা-০২ এর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি) ওসমান সরোয়ার আলম বাংলানিউজকে বলেন, ক’দিন ধরেই বিআরটিএ অফিসে কাজের চাপ বেড়েছে। বাড়তি চাপ সামলাতে আমাদের যা জনবল আছে তা দিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাড়তি ভিড় থাকায় গ্রাহকের কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কিছু দালাল ভিড়ের সুযোগ নিতে চেষ্টা করে। তারা আমাদের অফিসের কেউ নন। তাদের বিষয়ে পুলিশকে বলা আছে। পুলিশ অ্যাকশন নেবে। আমাদের মধ্যে কেউ যদি তাদের প্রশ্রয় দেয় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক (ইঞ্জি) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ভিড় সামলাতে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী অফিস সময় বাড়িয়ে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাজ করছি আমরা। চেষ্টা করছি সবাইকে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া সেবা দিতে।

তিনি বলেন, ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার বুথ আপাতত বাড়ানো না গেলেও সময় বাড়িয়েছি আমরা। আগে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টাকা জমা নেওয়া হলেও এখন বিকেল ৫টা পর্যন্ত টাকা জমা নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০১৮
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।