সরকার চাইলে এখানে আইটি বেইজড ইপিজেড গড়ে তুলতে পারে। এতে বিশ্বের নামকরা আইটি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রধান কার্যালয় সরিয়ে আনতে আগ্রহী হবে।
কথাগুলো বলছিলেন সোসাইটি অফ চিটাগাং আইটি প্রফেশনালস’র সভাপতি মো.আবদুল্লাহ ফরিদ।
দেশের ১১০টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় চার শতাধিক আইটি প্রফেশনালকে নিয়ে যাত্রা শুরু করা সংগঠনটির বয়স খুব বেশি না হলেও এ খাতে চাকরির বাজার সৃষ্টি, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সচেতনতা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে তারা। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম চেম্বারের সঙ্গে যৌথ আয়োজনে তিন দিনের আইটি মেলার আয়োজন করেছে। শনিবার (১১ নভেম্বর) সকালে এ মেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো.আবদুল মান্নান।
সোসাইটি অফ চিটাগাং আইটি প্রফেশনালস গঠন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকায় আইটি বিষয়ে সেমিনার-প্রশিক্ষণ হয়। আমরা যারা চট্টগ্রামে কাজ করি তারা আমন্ত্রণ পাই। কিন্তু সময় এবং সুযোগের অভাবে যাওয়া হয় না। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া ব্যয়বহুল এবং কষ্টসাধ্য। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই আমরা পিছিয়ে থাকি।
এ ধরনের পরিস্থিতিতে ‘চিটাগাং-দ্যা নেক্সট টেকহাব’ স্লোগান নিয়ে আমরা সোসাইটি অফ আইটি প্রফেশনালস গঠন করি। গঠনের পর আইটি প্রফেশনালদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি। আইটি বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।
একজন আইটি প্রফেশনালসের ঢাকায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে কমপক্ষে ৪৮ হাজার টাকা খরচ হয় জানিয়ে তিনি বলেন, একই প্রশিক্ষণ চট্টগ্রামে এখন ১৮ হাজার টাকায় করতে পারছে।
তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি প্রতিষ্ঠানকে কিভাবে দ্রুত এগিয়ে নেওয়া যায় সেটা এখনো অনেকে জানে না। অনেকে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারকে অতিরিক্ত খরচ মনে করেন। কিন্তু আসলে এটি ইনভেস্টমেন্ট। কারণ আইটি ব্যবহার করেই কম খরচে, কম সময়ে লাভজনক ব্যবসা করা সম্ভব।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কেবল আইসিটিকে কাজে লাগিয়ে পুরো বিশ্বে সবচেয়ে বড় পরিবহন সংস্থায় পরিণত হয়েছে উবার। অথচ তাদের কোন গাড়ির কারখানা নেই, অফিস নেই। একইভাবে দৃশ্যমান কোন দোকান না থেকেও বিশ্বে বড় সুপার মার্কেট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এমাজন। দোকান সাজিয়ে ব্যবসা করার দিন শেষ হচ্ছে।
অভাববোধ চিহ্নিত করে টেকনোলজির মাধ্যমে কিভাবে সমাধান করা যায় সেটি ভাবতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইটি এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। খাবারের প্রয়োজন হলেই এখন বাজার করে রান্না করার প্রয়োজন নেই। খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আছে। তারাই আপনাকে দিয়ে যাবে।
টেকনোলজির নিত্যনতুন ব্যবহার ও আইডিয়া সম্পর্কে জানার তাগিদ দিয়ে এই আইটি বিশেষজ্ঞ বলেন, এখন গ্রিন টেকনোলজির দিকে যাচ্ছে বিশ্ব। কারণ পণ্য উৎপাদনে পানি, বায়ু ও মাটি দূষণ হয়। কিন্তু আইটি দিয়ে করলে অফিসে কেবল এসি লাগবে। এতে কেবল বায়ু দূষণ হয়।
প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কোন ধরনের জনবল ছাড়াই অফিস পরিচালনা সম্ভব বলে মনে করেন আবদুল্লাহ ফরিদ। তিনি বলেন, আইটি শেয়ার ওয়ার্ক প্লেসে কেবল ডেসক, চেয়ার আর ইন্টারনেট সংযোগ দিলেই তিন শিফটে কাজ করা সম্ভব।
দক্ষ জনবল তৈরি করতে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যুগোপযোগী শিক্ষা কারিক্যুলাম প্রণয়ন করতে হবে। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী জনশক্তি যোগান দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৭
এমইউ/আইএসএ/টিসি