ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

৬১ বছর আগের দিনগুলোতে ফিরলেন ড. ইউনূস

সুবল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৬
৬১ বছর আগের দিনগুলোতে ফিরলেন ড. ইউনূস কলেজিয়েট স্কুলের ১৮০ বছরপূর্তি উৎসবে ড. ইউনূস। ছবি: উজ্জ্বল ধর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

তিনি এখন জগদ্বিখ্যাত। এক নামেই পুরো পৃথিবী চেনে তাকে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী কীর্তিমান। অন্য সবার মতো তারও আছে শৈশবে স্কুলবেলার স্মৃতি। ১৯৫৫ সালে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকেই মেট্রিকুলেশন পাস করেছিলেন দেশের এই কৃতি সন্তান।

চট্টগ্রাম: তিনি এখন জগদ্বিখ্যাত। এক নামেই পুরো পৃথিবী চেনে তাকে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী কীর্তিমান।
অন্য সবার মতো তারও আছে শৈশবে স্কুলবেলার স্মৃতি। ১৯৫৫ সালে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকেই মেট্রিকুলেশন পাস করেছিলেন দেশের এই কৃতি সন্তান।

শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে ঐতিহ্যবাহী কলেজিয়েট স্কুলের গৌরবময় ১৮০ বছরপূর্তি উৎসব ও পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এসে ড. ইউনূস যেন ফিরে গেলেন ৬১ বছর আগের সেই দিনগুলোতে।

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি বকশিরহাটের ছেলে। কাজেই বকশিরহাট থেকেই রোজ আমাকে কলেজিয়েট স্কুলে আসতে হতো। বকশিরহাট থেকে হেঁটে আন্দরকিল্লায় আসতাম। ওইখানে তখন একটি পুলিশ বিট ছিল। তাকে বকশিরহাট পুলিশ বিট বলা হতো। ওখান থেকেই বাসে চড়ে কালীবাড়ি এলাকায় নামতাম। সেখান থেকে হেঁটে স্কুলে আসতাম। খুব বেশি সময় লাগতো না। তখন বাসভাড়া ছিল ২ আনা। ’কলেজিয়েট স্কুলের ১৮০ বছরপূর্তি উৎসবে ড. ইউনূস

‘স্কুলে আসার সময় খুব মজা হতো। বাবা বাস ভাড়া হিসেবে দুই আনা করে চার আনা আর টিফিন খরচের জন্য চার আনা দিতেন। চার আনা দিয়ে স্কুলের কাছে রুটি, মাখন আর চা খেতাম। অথবা বেশি আনন্দ লাগলে উজালা সিনেমার পাশে ভাসমিয়া রেস্টুরেন্টে একটি সিঙ্গারা, একটি চা খেতাম। ’

তিনি বলেন, পুনর্মিলনী অকৃত্রিম সংস্করণ। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এলে এজন্য আনন্দ লাগে। এখানে স্কুলের নানান স্মৃতিকথা মনে পড়ে। স্কুলে বন্ধুদের একেকজনকে একেক নামে ডাকতাম। সুমইননা, কুদ্দুছইচ্ছা, ইউনূসইয়া। নাম বিকৃত করতে স্যারেরাও বাদ থাকতো না। আজ অবধি আমরা ওই নামে বন্ধুদের চিনি। ভাল নামে অনেকে অনেকজনকে চিনে না।

আমার গৃহশিক্ষকের এক বন্ধু কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। ওনার মাধ্যমে আমি কলেজিয়েটে ভর্তি হতে পেরেছি। নইলে হয়তো মুসলিম হাই স্কুলে পড়তাম। ১২ বছরে বয়সে নিজেই কলেজিয়েট স্কুলে ৭ম শ্রেণিতে ভর্তি হই। এখানে বয়েজ স্কাউট করতাম। এ বয়েজ স্কাউটের মাধ্যমে আমি অনেক কিছু শিখেছি এবং জেনেছি। তৎকালীন কলেজিয়েট স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও বয়েজ স্কাউট মাস্টার কাজী সিরাজুল ইসলাম স্যার আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছেন। তিনি সব কাজে আমাদের উৎসাহ দিতেন এবং কাজের দায়িত্ব বণ্টন করে দিতেন। সাবেক শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দিচ্ছেন ড. ইউনূস, আজাদী সম্পাদক এম এ মালেকেসহ অতিথিরা

এ বয়েজ স্কাউটের মাধ্যমে দায়িত্ব দেওয়া, ভরসা করা এবং কিভাবে সংগঠন চালাতে হয় তা শিখেছি। ১৯৫৫ সালে কলেজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাস করেছি। এ স্কুল আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। ১৯৫৫ সালে পরীক্ষার দেওয়ার পরপরই বিশ্ব জাম্বুরী অনুষ্ঠানে কানাডা যাই। সেখানে বিশ্বজোড়া মানুষের সাথে সুসম্পর্ক হয়েছে।

চট্টগ্রাম কলেজিয়েটস এর সভাপতি ও আজাদী সম্পাদক এম এ মালেকের সভাপতিত্বে পুনর্মিলনী সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন উদযাপন কমিটির আহবায়ক আমির হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ১৮০ বছরপূর্তি উৎসব উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ মোস্তাক হোসাইন। সভায় চার সাবেক শিক্ষার্থীকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

সন্ধ্যায় মনমাতানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন অনিরুদ্ধ সেনগুপ্ত, দিনাত জাহান মুন্নী এবং ব্যান্ডদল মাইলস ও অর্থহীন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৬

এসবি/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।